আজকে সন্ধ্যায় আমার চেম্বারে একজন বাংগালী রোগিণী এসেছিলেন তার স্বামীর সাথে। তার মূল সমস্যা হচ্ছে শীতকাতরতা; মানে ঠান্ডা সহ্য করতে পারে না। ওমানে প্রচন্ড গরমে যখন এসি ছাড়া ঘরে থাকাই যায় না তখন উনি ফ্যানের বাতাসেও ঠান্ডায় নাকি কাঁপতে থাকেন। যাই হোক কথাবার্তার পর তাকে কিছু পরীক্ষা করতে দিলাম। ১ ঘন্টা পর পরীক্ষার রিপোর্ট নিয়ে পূনরায় আমার চেম্বারে আসলেন, আমি যে বিষয় গুলো চিন্তা করে তাকে পরীক্ষা দিয়েছিলাম তার সবই নরমাল আসলো; মানে সচারচর যেসব কারণে তার এই সমস্যা হতে পারে তার কোনটাই পেলাম না। আবার ইতিহাস ঘাটা শুরু করলাম। তাতে যা পেলাম তার সারমর্ম হল তিনি একজন উচ্চ মাত্রার শুচিবায়ু রুগী, ইংলিশে যাকে বলে obsessive compulsive disorder ( OCD)
তার স্বামী বেশ কয়েকটা ঘটনা শোনালো------
আজ পরীক্ষার জন্য রক্ত দেবার পর বাইরে গাড়িতে গিয়ে হাতে থাকা কাঁচের চুড়িগুলো ভেঙে ডাস্টবিনে ফেলে দিয়েছেন। কেন? কারণ রক্ত টানার সময় নার্স তার হাত ধরেছিল এবং চুড়িতে ছুঁয়া লেগেছিল!! ( আল্লাহর অশেষ দয়া যে আজ সোনার চুড়ি পরে আসেনি )
প্রতিদিন তার ৮-১০ বছর বয়স্ক ছেলে স্কুল থেকে ফিরলে তাকে ড্রইং রুমেই সমস্ত কাপড় চোপড় খোলায় এবং ন্যাংটা করে বাথরুমে ঢোকায়, স্কুলের পোশাক এবং ব্যাগ ড্রইং রুমেই থাকে। গোছল করার পর শোবার রুমে অন্য পোশাক পরে থাকে, স্কুল থেকে এসেই শোবার রুমে ঢোকার কোন অনুমতি নেই।
আগে ( ছোট বেলায়) অনেক হিন্দু বান্ধবি থাকলেও এখন আর কোন হিন্দুর ধারে কাছেও যান না। অপবিত্র / নোংরা হয়ে যাবেন তাই। এজন্যই উপদেশ দেবার পরও আজ এই সন্ধ্যা বেলায় উনি গাইনী ডাক্তারের কাছে যাননি। কারণ (১) উনি হিন্দু ডাক্তার তাই এখান থেকে যেয়ে গোসল করাই লাগবে (২) ঠান্ডার জন্য রাতে কোন ভাবেই গোসল করতে পারবে না। অন্যদিন সকালে এসে গাইনী ডাক্তারকে দেখাবেন।
বিয়ের আগে নাকি তার ভাইকে তার রুমে আসতেই দিতেন না।
আজ আমার চেম্বার থেকে গিয়েই নাকি অবশ্যই আজকের পরিহিত কাপড়গুলো ধুয়ে দিবেন।
উপরের উদাহরণ গুলো একজন OCD patient এর জন্য typical রোগ লক্ষণ এবং অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে মোটামুটি serious পর্যায় আছে। মাঝে অনেকবার নাকি উনাদের সংসার পর্যন্ত ভেঙে যাবার উপক্রম হয়েছিল, কারণ স্বামীর ভাষ্যমতে মেয়েপক্ষ বিয়ের সময় বিষয়টা লুকিয়েছিল।
যাই হোক! স্বামী বেচারার এখন আর কিছু করার নাই! সহ্য করা ছাড়া! যদিও অতীতে অনেকবার নাকি চিকিৎসা নিয়েছে কিন্তু কোন লাভ হয় নাই! আমার কাছে যেহেতু এটার সঠিক চিকিৎসা নাই, অগত্য আবারও অন্য কোন মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ এর কাছে যাওয়ার তাকিদ দিয়ে আমি মুক্তি পেলাম!
এ রোগের আরো কিছু পরিচিত লক্ষন আছে. যেমনঃ
বার বার সাবান দিয়ে হাত ধুয়া! হাত ধুয়ে বাত রুম থেকে হয়ত বেরোনই হয় না আবার হাত ধুতে লেগে যাওয়া!
রাতে ঘুমানোর আগে বার বার দরজা চেক করা যে দরজা বন্ধ হয়েছে কিনা! যদিও রোগী নিজেই দরজা বন্ধ করে!
ভাই আমি নতুন আপনাকে ফলো করেছি.............. প্লিজ আমাকে ফলো করুন আর ভোট এবং কমেন্ট করুন প্লিজ। আমি আপনার সব পোস্টে ভোট এবং কমেন্ট করবো.............
রিপ্লাই দিয়েন ভাই............
আমি ভাই এরকম চুক্তিভিত্তিক কাজ করি না। সরি। আমি বাংলাদেশীদের সব পোষ্ট পড়ার চেষ্টা করি। এবং রিপ্লাই দেবারও চেষ্টা করি
Posted using Partiko Android