একটা মুভি কতটা আন্ডাররেটেড হতে পারে, তা স্যার অ্যান্থনি হপকিন্স আর আলেক বাল্ডউইনের ১৯৯৭ এর সার্ভাইভাল ক্লাসিক থ্রিলার The Edge থেকে প্রমাণ পেলাম। এই জিনিস ছোটবেলায় দেখেছিলাম, যখন অল্প ২-১টা ভাল্লুকের দ্রিশ্য ছাড়া কিছু মনে ছিলো না, জানতাম যে এটা থ্রিলার কম, ড্রামা বেশি। এরপর কতো সার্ভাইভাল ফিল্ম দেখলাম, মাঝে Animal Attack ফিল্মও দেখলাম। বিশেষ করে লিয়াম নিসনের The Grey এতদিন আমার পছন্দের wilderness/animal threat মুভি ঘরানায় পছন্দের শীর্ষে ছিলো। কে জানতো, তারপর The Revenant এ ডি কাপ্রিয়র বিখ্যাত ভাল্লুকের দ্রিশ্যটা। অথচ কয়জন জানে, ভাল্লুক বা সার্ভাইভাল সিনেমা হিসেবে The edge এর মতো মাস্টারপিস রয়ে গেছে। তার উপর আবার বস অ্যানথনি হপকিন্স। এরপরও এতদিন লাগালাম মুভিটা দেখতে কারণ আইএমডিবিতে ৬.৯/১০ নিয়ে বসেছিলো। আমি সাধারণত ৭ এর উপরে না হলে মাস্ট ওয়াচে রাখিনা কোন ফিল্ম।
তাই দেরিতে হলেও দেখে ফেললাম আজ ফিল্মটি। ৯০ এর দশকে এর আগের আরেক অলটাইম ক্লাসিক animal threat মুভি ছিলো The Ghost and The Darkness। ওই মুভি যেমন কয়েক বছর পরপর বারবার দেখার মতো, the edge ও তাই।
"Most of the people die in the woods. Because of why?
- They die of shame"
এরকম মনে রাখার মতো প্রচুর লাইন আছে এই মুভিতে, যার বেশীরভাগই হপকিন্স সাহেবের। ভদ্রলোক এখানে একজন বিলিয়নিয়ার। তার স্ত্রী একজন ফটো মডেল। আর আলেক বাল্ডউইনের বব চরিত্রটি একজন ফটোগ্রাফার। সবাই মিলে বেড়াতে আসে। মুভির প্রথম এক্টে মূলত চার্লস বা হপকিন্সের চরিত্রটি বেশি ফোকাস পায়। এই বুড়ো এতো সুন্দরী স্ত্রী পেল কীভাবে? এই প্রশ্নের উত্তর ধীরে ধীরে মেলে। সাথে ববের চরিত্রটিও সামনে আসতে থাকে।
সার্ভাইভাল থ্রিলারের স্বাভাবিক ফর্মুলা মেনে চললেও স্পেশালিটি হচ্ছে বব আর চার্লসের মধ্যকার সম্পর্ক। দুজন দুই মেরুর মানুষ, মিল এক জায়গাতেই। ববের মডেল আর চার্লসের স্ত্রী একি মানুষ। যাই হোক, চার্লস ধনী হলেও তার জ্ঞানের পরিধিও ব্যাপক। অনেক পড়াশোনা করে, তাই সবকিছুতেই জ্ঞান দেয়ার একটা প্রবণতা থাকে তার। শুরুতে আশেপাশের মানুষজন সিরিয়াসলি না নিলেও সার্ভাইভাল মুড অন হলে দ্রুন কাজে লাগে সেটা। সেজন্যই এই মুভিটি দারুণ অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে। সাথে মনুষ্যত্ব, বন্ধুত্ব, বন্য পরিবেশে টিকে থাকার কৌশল - এসবের ব্যাপক অভিজ্ঞতা নিয়ে বের হবেন মুভি শেষে। তবে কোনোকিছুতেই সস্তামি নেই। আজকালকার মুভি হলে হয়তো কেটেছেটে দেড় ঘন্টায় আনতো, মুভির একটা পর্যায়ে শেষও হতে পারতো, তবু এরপর আরও ৩০ মিনিট যায় যা এর মানকে আরেক উচ্চতায় নিয়ে যায়। প্রমাণ করে যে এটা শুধু সার্ভাইভাল ফিল্মই নয়, সম্পর্কের ফিল্মও।
পুরাটা সময় শেষ পর্যন্ত কে টিকে থাকবে, আদৌ তারা কেউ পারবে কিনা, এই অনুমান লেগেই থাকবে। তৃতীয় এক্টে এমন একটা জিনিস প্রকাশ হয়ে যায়, যাকে যা ফিল্মের ভাষায় "টুইস্ট" বলে। আগেকার দিনের ফিল্মগুলো এরকম লাইফটাইম ক্লাসিক ভাইব রেখে যেতে পারতো। এই মুভি আজকে রিমেক হলে মনে হয়না ব্যাপারগুলোকে এতো সূক্ষ্ম রাখতে পারতো।
২ ঘন্টার মুভি হলেও ২ অভিনেতার অসাধারণ অভিনয় আর দুর্দান্ত থ্রিলের কারণে বোর লাগবে না কখনো।
Must watch for Survival film / Animal Threat film Lovers. A True Classic for all times.