টাঙ্গাইলে মায়ের পা ধুয়ে ভালোবাসা দিবস পালন

in #dlive7 years ago

valen_tangailtimes-14-2-18-10_jpg.jpg

আমাদের সবচেয়ে প্রিয় শব্দ “মা,” সবচেয়ে আপন মানুষটিও মা। মাকে ছাড়া পুরো পৃথিবীই যেন অন্ধকার। আমরা হাসলে মা হাসেন, আমাদের কান্না মাকে কাঁদায়, ভয় পেলেও মা-ই আগলে রাখেন বুকে। সন্তানের জন্য মা সব ত্যাগ স্বীকার করেন, সব কষ্ট সহ্য করেন হাসিমুখে।

পৃথিবীতে এই এমন একজন মানুষ, যাকে আমরা সবাই প্রথম দেখায় ভালোবেসে ফেলি। সেই প্রথম দেখা থেকে শুরু- এরপর সারাটাজীবনই আমরা তাকে ভালোবেসে যাই। আর তাই ভালোবাসা দিবসে মায়ের জন্য একটুখানি ভালোবাসার আয়োজন করলো টাঙ্গাইলের একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানের কয়েকশত শিশু শিক্ষার্থী নিজ হাতে মায়ের পা ধুয়ে ভালোবাসা প্রকাশ করলো।

‘মা কথাটি ছোট্ট অতি কিন্তু যেন ভাই, এর চেয়ে নামটি মধুর ত্রিভুবনে নাই। সত্য ন্যায়ের ধর্ম থাকুক মাথার পরে আজি, অন্তরে মা থাকুক মম ঝরুক স্নেহরাজি।’

আজ বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। প্রেমে-ভালোবাসায় মাতোয়ারা হওয়ার দিন আজ। প্রকৃতির পালাবদলে কাল এসেছে বসন্ত, সেই ফাগুনের মাতাল হাওয়ায় আজ উদ্দাম ভেসে যাবে প্রেম পিয়াসী তরুণ-তরুণী, ভালোবাসার রঙে রঙিন হবে হৃদয়।

৪৯৬ খ্রিস্টাব্দ থেকে রোমের ধর্মযাজক সেন্ট ভ্যালেন্টাইন স্বরণে সারা বিশ্বের তরুণ-তরুনীরা এই ১৪ ফেব্রুয়ারিকে বিশ্ব ভালোবাসা দিবস হিসেবে পালন করে আসছে।

কিন্তু এতোদিন ভালোবাসা দিবস শুধু প্রেমিক যুগলদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকলেও, টাঙ্গাইলে দিবসটি উপলক্ষ্যে হয়ে গেলো ব্যতিক্রমী আয়োজন। ‘হাতেখড়ি’ নামের এক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আয়োজনে টানা দ্বিতীয়বারের মতো অনুষ্ঠিত হলো ‘মায়েদের পা ধুয়ে ভালোবাসা দিবস’ উৎযাপন অনুষ্ঠান। বুধবার সকালে শহরের এসপি পার্কে আয়োজন করা হয় এই অনুষ্ঠানের। হাতেখড়ি প্রি-প্রাইমারী স্কুলের প্রায় শতাধিক ছোট্ট ছোট্ট শিশু শিক্ষার্থী নিজের মায়ের পা ধুয়ে দিয়ে মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার অভিভ্যাক্তি ঘটায়। টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সভাপতি ও হাতেখড়ি প্রি-প্রাইমারী স্কুলের উপদেষ্টা এ্যাডভোকেট জাফর আহমেদ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার অতিরিক্ত ডিআইজি মো. মাহবুব আলম পিপিএম (বার)। বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সৈকত শাহিন, সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা কাজী গোলাম আহাদ, সুন্দর হাতের লেখা শেখার প্রতিষ্ঠান রাইট ফেয়ারের প্রতিষ্ঠাতা ফরিদ আহমেদ, দৈনিক আজকের দেশবাসী পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক একরামুল হক খান তুহিন। অনুষ্ঠান শেষে ছোট শিশুদের হাতে ফুলের চারা উপহার দেয়া হয়।

ভালোবাসা দিবস না বুঝলেও, মায়ের প্রতি ভালোবাসা ঠিকই আছে তাদের। তাই মায়ের পা ধুয়ে উচ্ছস্বিত ছোট্ট এই শিশুরা। আর বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে শিশুদের নিয়ে এমন আয়োজনে আবেগ আপ্লুত অভিভাবক ও মায়েরা। তারা বলছেন, এমন আয়োজনের মধ্য দিয়ে শিশুরা বাবা-মায়ের প্রতি আরও শ্রদ্ধাশীল হবে।

প্রকৃত ভালোবাসা হতে পারে শুধু জন্মদানা মা আর বাবার জন্য। শিশুদের মাঝে এমন ধারণা ছড়িয়ে দিতেই ব্যতিক্রমী এই আয়োজন, এমনটাই জানালেন আয়োজকরা। অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তা হাতেখড়ি প্রি-প্রাইমারী স্কুলের চেয়ারম্যান নওশাদ রানা সানভী বলেন, বর্তমান সময়ে অনেক সময় দেখা যায় সন্তানদের অবহেলায় বৃদ্ধ বাবা-মা কে বৃদ্ধাশ্রমে যেতে হয়। যা অতন্ত্য বেদনাদায়ক। আমরা মনে করি ভালোবাসা দিবসে ভালোবাসা পাওয়ার প্রথম ভাগিদার বাবা-মা। যদিও তাদের প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শনের কোন বিশেষ দিনের প্রয়োজন হয় না। তার পরও বিশেষ এই দিনে শিশুদের মনে বাবা-মায়ের প্রতি অটুট ভালোবাসা এনে দিতেই আমাদের এমন আয়োজন।

টাঙ্গাইলটাইমস