তখন সম্ভবত আমি এইচ. এস. সি. ২য় বর্ষের ছাত্র। এক বিকেল বেলা গনিত করছিলাম। তখন আমার পাশের বাসার এক দাদির আগমন। সালাম দিয়ে দাদির কুশলাদি জিজ্ঞেস করলাম। কিন্তু দাদির মুখ খানা দেখে, উনি ভালো আছেন মনে হলো না।
দাদি আমার মায়ের সাথে কথা বলা শুরু করলো। আমি অংক করতেছিলাম। কিন্তু হঠাৎ একটি কথায় কান আটকে যায়।
দাদি আমার মায়ের সাথে বলল, আজ বাজারে গিয়েছিলাম।
বাজার থেকে কাজল আনাতে তার ওহাবে আমার সাথে ঝগড়া শুরু করল। পরে একসময় চুলোচুলি হয়। এখন তার ওহাবে নাকি আমার নামে সিডি করবে।
আমি বই বন্ধ করে দাদির সাথে কথোপকথনে যুক্ত হলাম। শিওর হওয়ার জন্য দাদিকে জিজ্ঞেস করলাম, দাদি আপনি কি বলেছিলেন? কষ্ট করে আবার বলেন তো!
দাদি আবার বলতে লাগলেন, বাজার থেকে কাজল আনাতে তার ওহাবে আমার সাথে ঝগড়া শুরু করল। পরে একসময় চুলোচুলি হয়। এখন তার ওহাবে নাকি আমার নামে সিডি করবে।
আমি বললাম বাজার থেকে কি এনেছেন? দাদি উত্তর দিলেন কাজল। তো বাজার থেকে কাজল এনেছেন! তাতে সমস্যা কোথায়? কিন্তু দাদি বললেন কাজল তার ওহাবে খায় না।
আমি হেসে ফেল্লাম এবং বললাম কাজল আবার কিভাবে খায়? কাজল কি খাবার জিনিস নাকি চোখে ব্যবহার করার জিনিস!
দাদি এবার বিরক্ত হয়ে বললেন কাজল চিনিস না? চোখের কাজল হবে কেন? খাবার যে কাজল বাজারে পাওয়া যায় সেটার কথা বলেছি।
আমি গম্ভীর হয়ে দাদীকে বললাম, আচ্ছা কাজলের এবং কেমন, যেগুলো খাওয়া যায়?
এবার দাদি বললেন,
মুলার মত লাল রঙ্গের যেগুলো বাজারে পাওয়া যায়। এগুলো কাঁচা খাওয়া যায় আবার সবজি হিসেবে রান্না করে খাওয়া যায়, সেগুলোর নাম ই তো কাজল।
আমি উচ্চস্বরে হাসলাম এবং দাদিকে বললাম, বুড়ি এগুলোর নাম কাজল না এগুলোর নাম গাঁজর।
দাদি বিরক্ত হয়ে বললেন আমি তোর মত এত পন্ডিত না।
যাইহোক এবার বললাম ওহাব কে? আমাদের পাশের বাসার এক ভাইয়ের নাম ওহাব। তো বলতে থাকলাম ওহাব ভাই আপনার সাথে কেন ঝগড়া লাগবে?উনি উত্তর দিলেন না এই ওহাব আমার সাথে ঝগড়া লাগবে কেন? আরে তার ওহাবে আমার সাথে ঝগড়া লেগেছে!
আম্মু মিটিমিটি হাসছে। কিন্তু আমি দাদির সাথে প্যাঁচাল পারছি। আমি আবার বললাম বুড়ি ওহাব মানে কে ?
এবার দাদি উত্তর দিলেন,
আরে আমার ছেলের বউ। তুই পড়ালেখা করছস, তাও জানোস না। বউয়েরে ইংরেজিতে ওহাব কয়! সব বুঝে বুঝে আমার সাথে ঢং করস!
এবার হাসলাম না। বললাম এটা ওহাব না, এটাকে ইংরেজিতে ওয়াইফ বলে। যাইহোক এবার বলেন আপনার ছেলের বউ আপনার নামে সিডি করবে কেন? ভাবছিলাম হয়তো মোবাইলে ঝগড়া এর ভিডিও করেছে। সেটাকে হয়তো তিনি সিডি বলে চালিয়ে যাচ্ছেন।
বাগদাদী আমার প্রতি বিরক্ত হয়ে গেলেন। বললেন মবাইলে ভিডু করবে কেন? সে আমাদের হুমকি দিছে! আমাদের নামে পুলিশের কাছে সিডি করবে!
এবার হাসি না দিয়ে পারলাম না। বললাম তাহলে আপনার ছেলের বউ পুলিশের কাছে সিডি করব। তিনি বললেন হ্যাঁ। পরে বুঝতে পারলাম,
এটি সিডি না জিডি।
পরে রাতে কে বললাম দাদি এটি সিডি না জিডি। দাদি বললেন এত শুদ্ধ করে শিখার সময় এখন আমার নাই। তুই থাক তোর শুদ্ধ নিয়ে। আমি যাই। পরে উনি নিজেও হেসে চলে গেলেন।
যাইহোক পুরো বিষয়টি আমি খুবই উপভোগ করেছিলাম। কেনণা দাদির সাথে আমার সম্পর্ক টি অন্যরকম। আমার উদ্দেশ্য ছিল নিজে হাসা এবং দাদিকে ও কিছুটা আনন্দ দেওয়া। কেন এই মানুষগুলো এই বয়সে এসে খুবই একাকীত্ব অনুভব করে। মাঝেমধ্যে শিশুসুলভ আচরণ করে। তাই তাদের সাথে একটু ভালো সময় কাটালে তা খুবই খুশি হয়।
ধৈর্য সহকারে আমার লেখাটি পড়ার জন্য সকলকে আমার অন্তরের অন্তস্থল থেকে শুভেচ্ছা এবং ভালোবাসা।
Thanks For Your reading and visiting
I am Md. Kawsar Hasan. I am Bangladeshi and proud to introduce myself as a Bangladeshi because I love my country so much. Because this is my motherland. I am engaged in the teaching profession. When I can teach my students something new, I have a different feeling. I also like to learn and do something new every day, I like to mingle with new people and like to learn something new. I always think of myself as a student of nature. Because we have a lot to learn from nature. I just try small to learn. I love to travel. A lot can be learned from nature through travel. Love to learn and write. I have been trying to write since I was a child and that is why I often fall behind in writing. I try to respect people. I think if you respect someone, your self-esteem does not decrease but increases.
Follow Me On Twitter
Add Me On Facebook
Thanks again for your reading my post...
হা হা হা হা
ভাই আমিও আপনার দাদির মতো কাজল খেতে পছন্দ করি। গল্পটা রসালে ছিলো, ভালো লেগেছে আমার কাছে।
ধন্যবাদ আপনাকে আমার লেখাটি পড়ার জন্য। কাজল বাংলাদেশের অনেক মানুষই খেতে পছন্দ করে।
ধন্যবাদ আমাদের সাথে আপনার মজার অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেয়ার জন্য
নিজের কথা-নিজের অনুভূতি-প্রকাশ করো নিজের ভাষায়
Really funny story. The Dadi made her own vocabulary.
This is the effect of urbanization :)
হা হা হা৷ ফেলে আসা দিন গুলোর কথা মনে পরে গেলো ভাই৷ আমার দাদীর বয়স ১০০+ বছর। এখিনো বেচে আছে, এবং ভালোই আছে 😍
আপনি অনেক সৌভাগ্যবান। ছোটবেলায় দাদা-দাদী নানা-নানি সব হারিয়েছি। আল্লাহ আপনার দাদিকে সুস্থ রাখূক।