বৃষ্টি বৃষ্টি বৃষ্টি,
এ কোন অপরুপ সৃষ্টি,
এতো মিষ্টি মিষ্টি মিষ্টি,
আমার হারিয়ে গেছে দৃষ্টি ।
নিদারুণ দৃশ্যপটসম্পন্ন প্রকৃতির এক অনন্য নিয়ামত হলো বৃষ্টি।এখন বর্ষাকাল,তাই না বলে কোয়েই যেকোনো সময় বৃষ্টির আগমন ঘটে। রাত ভোর বৃষ্টি হচ্ছে,সাথে ব্যাঙ্গের ঘ্যা -ঘো,ঘ্যা-ঘো ডাক তো বোনাস হিসেবে আছেই।সব মিলিয়ে আমার মনে এখন ছন্দের অভাব নাই।প্রকৃতির অনন্য সুন্দর এই নিয়ামতকে উপভোগের জন্য আমাদের মতো ঐতিহ্যবাহী জাতির সৌখিনতাও কিন্তু কম না।রাতে ঘুমানোর আগে আম্মুকে বলে রাখছিলাম যেনো সকালে খিচুড়ি রান্না করে এবং সাথে আলুভাজি। রাতে এ কথা বলেই পরেরদিন সকালের দৃশ্য নিয়ে ভাবা শুরু করে দিয়েছিলাম।আহা ,সে যে কোন ধরণের আত্মতৃপ্তি বলে বোঝাতে পারবোনা।
রাত তো কেটে গেলো।তখন বাজে সকাল ৫;৪৮।ফোলা ফোলা চোখ নিয়ে ঘুম ভাংতেই শুনতে পেলাম টিনের চালে বৃষ্টি পরার মনোমুগ্ধকর আওয়াজ।সকাল সকাল রোমাঞ্চ,এক অন্যরকম শিহরণ।আর বৃষ্টির পাশাপাশি রয়েছে পছন্দের দল আর্জেন্টিনার সাথে উরুগুয়ের ফুটবল ম্যাচ।বলতে গেলে সকাল বেলাতেই ফাইভস্টার মুডের দেখা পেয়েছি।সময় ৬টা৪৮ মিনিট,খেলার তখন ৪২ মিনিট চলে।তখন অবধি আর্জেন্টিনাও ১-০ গোলে এগিয়ে।এরই মাঝে নাকে ভেসে আসে খিচুড়ির ঘ্রান।তখন কি আর বসে থাকা যায়।একপ্রকার দৌড়েই গেলাম রান্নাঘরে। আম্মুকে বলেছিলাম খিচুড়ির সাথে আলুভাজি করতে কিন্তু সে যে আলুভাজির সাথে গরুর মাংস উপহার দেবে তা অকল্পনীয় ছিল।আর্টিকেলটির মান বৃদ্ধির জন্য শুধু তিন চারটে ছবি তোলার মতো ধৈয্য নিজের মধ্যে পোষণ করেই প্লেট সাজিয়ে নিয়ে সোফার উপর বসে পরেছিলাম।খিচুড়ি,আলুভাজি সাথে গো-মাংস,টিনের চালে বৃষ্টির শব্দ,বাহিরে ব্যাঙ্গের ডাক এবং বাবার সাথে বসে ফুটবল ম্যাচ উপভোগ।আর কি দরকার?সবকিছু একসাথে পাওয়ার পর নিজেকে রাজার থেকে কোনো অংশে কম মনে হচ্ছিলো না।মনে রাখার মতো একটি সকাল ছিল।
বর্তমানে আমরা এমন এক সমাজে এসে পড়েছি যেখানে সবাই অর্থচিন্তার নিগড়ে বন্দি।সেই নিগড় থেকে বেরোতে না পেরে মৌসুমভিত্তিক এই তৃপ্তিগুলোর স্বাদ আমরা পাইনা।ক্ষনিকের এই জীবনে যদি আমরা এই ছোট ছোট আনন্দগুলো উপভোগ করতে নাই পারি তাহলে আমার মনে হয় যে কয়দিন আমরা বেঁচে থাকব সেকয়দিনই হবে অযথা সময় পার।
Sort: Trending