বোঝার বয়স থেকে আমি সময়কে দুইভাবে ব্যবহার করে আসছি।দৈনন্দিনের যে কাজগুলো আবশ্যিক সেই কাজগুলোর জন্যই তো সময়কে আমরা বেশি ব্যবহার করি।এর পাশাপাশি কিছু সৌখিন কাজের জন্যও আমি সময় ব্যয় করি।যদিও সেটা প্রত্যেকদিন না।জানিয়ে রাখি আজকের আর্টিকেলটার অন্তরালে একটা মেয়ের কথাও বলবো। আজ আপনাদের সাথে আমার সেই সৌখিন কাজগুলোর পাশাপাশি তারও যুতসামান্য কাজ নিয়ে কথা বলবো।
আজকের আর্টিকেলে মোট তিনটি জিনিস নিয়ে কথা বলবো। যার ভেতোর একটি আমার স্বীয় বুদ্ধি ও ছেলেমানুষি থেকে তৈরি।তবে , আমি বাকি দুইটি জিনিস নিয়ে কথা বলতে একটু বেশি উৎসুক। কেনোনা ঐ দুইটা জিনিসের সাথেই জড়িয়ে আছে সেই মেয়েটি। আপনাদের কাছে বিষয়টা সাধারণ মনে হইতে পারে বাট আমার কাছে সেটা মনের ভাব প্রকাশ,এক অদ্ভুত শান্তি।
#১,রিকশাঃ
২০১৮ সালে জে,এস,সি পরিক্ষা দিয়ে অবসর সময়গুলো বেকার বসে থেকেই পার করতেছিলাম। হঠাৎ করেই ক্যানজানি কাগজ কাটাকাটির ভূত মাথায় চেপে বসলো। সেই সূত্র ধরেই মনের চিন্তা ভাবনা মিশিয়ে ছবির রিকশাটি তৈরি করেছিলাম।বেশ কিছুদিন পায়ে ঠেলা রিকশার মতোই ছিল রিকশাটি, চাকা হিসেবে ছিল প্লাস্টিক বোতোলের কর্ক। আমার ভাইয়ের একটা রিমোট কন্ট্রল গাড়ি ছিল, হয়তো আমার তৈরি রিকশাটির উন্নয়নের জন্যই সেই গাড়িটি নিজের জীবনের মায়া ত্যাগ করে নিজের শরীরে চার্জ নেয়া বন্ধ করে দিয়েছিল।গাড়িটির আত্মত্যাগ স্বরণীয় করে রাখার জন্য ওর ভেতোর থেকে ব্যাটারি,মোটর,চাকাসহ আরো কিছু জিনিস নিয়ে আমার কাগজের পায়ে ঠেলা রিকশাকে অটো রিকশার রুপ দিয়েছিলাম।স্কুলের বিজ্ঞান মেলায় প্রজেক্টের অংশ হিসেবে রিকশাটি স্থান পেলেও তা কেবোলি দর্শকদের জন্য দেখার জিনিস ছিল।পুরস্কার লাভের মতো কোনো বিশেষ গুন ছিলোনা তার মাঝে। রিকশাটি বেশ কয়েকমাস স্থায়ি ছিল।পরবর্তীতে বাসার মেরামত কাজের সময় রিকশাটিও তার অস্তিত্ব হারায়।
নিজের তৈরি জিনিসটির কথা তো বলে ফেললাম। এবার তাইলে মেয়েটির সাথে জড়িত বিষয় দুটিতে আসি।গানের কথা অনুযায়ী অনেক সাধনার পরে প্রিয় মানুষের মনের সন্ধান পাওয়া গেলেও আমি পেয়েছি তার মতো একটা বান্ধবী,যদিও বান্ধবী মানতে আমার কিঞ্চিত কষ্ট হয়। যাইহোক সে বিষয়ে না যাই। রিকশার পরে যে দুটি বিষয় নিয়ে কথা বলতে চাচ্ছিলাম সেগুলো হলো একটা ডার্ট বোর্ড আরেকটি হলো কাগজের তৈরি দেয়ালের সৌন্দর্যবর্ধনকারী একটি বড় মাপের সুর্যমুখী ফুল ।এই দুই জিনিসের পিছনেই রয়েছে সেই রমণীর অবদান।
#২,ডার্টবোর্ডঃ
তখন তার সাথে আমার মেসেজে কথা হচ্ছে। সঠিক মনে নেই তবে কোনো এক প্রসঙ্গক্রমে সে তার ভাইয়ের ডার্টবোর্ডটির একটি ছবি আমায় দেখায়।জিনিসটি আমি আগে থেকে চিনলেও নাম জানতাম না। তার মাধ্যমে সেদিন নামটাও জানা হয়ে গেছিলো।তার ভাইয়ের ডার্টবোর্ডটি দেখার পর মনে বাসনা জাগলো একটা ডার্টবোর্ড কেনার।অনলাইনে সার্চ দিলাম,তার প্রাইসট্যাগে লেখা ছিল ১৪৮০ টাকা। আমি ছাত্র মানুষ ওতো টাকা কই পাব?গেলাম ইউটিউবে,তারপর সার্চ দিলাম "how to make a dartboard at home?"একটা ভিডিও দেখে কাগজ,টুথপিক,টেপ,রঙ্গিন কলম এবং ফোমের সাহায্যে টানা ৩ ঘন্টার পরিশ্রমে বাসায় বসেই ডার্টবোর্ডটি বানায় ফেলি।পরে সে আমায় খেলার নিয়ম-কানুন সব শিখায় দেয়।
#৩,সূর্যমূখীঃ
এবার আমার কোনো সৃজনশীলতা কিংবা কায়দা কৌশল নেই। সম্পুর্ণই তার কীর্তি।আমি যদি আমার সৃজনশীলতার দরুনে কিছু বানাই তো সে বানালে দোষ কোথায়?সেও কাগজ দিয়ে দৃষ্টিনন্দন একটি সূর্যমূখী ফুল ওয়ালমেট হিসেবে বানিয়েছে।তার সাথে সরাসরি কথা এবং ফুলটি বাস্তবে না দেখার অভাবে ফুলটি সম্পর্কে খুব বেশি বর্ণনা দিতে গেলে আমি ব্যর্থ হয়ে যাবো।তবুও আমি জানি সে যেমন রুপবতী ঠিক তেমনই গুণবতী। নিদারুণ স্কেচ করতেও সে সিদ্ধহস্ত।
আজ এই বিষয়টি লেখার পিছোনে সৃজনশীলতা প্রকাশ আমার মূল উদ্দেশ্য না,তার সাথে কিছু স্মৃতি জমে রাখাই আমার উদ্দেশ্য।আশা করি কোনো একদিন শুধু তাকে নিয়েই একটা আর্টিকেল লিখতে পারবো।
Hi @farhantanvir
Congratulation!
Your post has been manually curated by @zrss.