আসসালামু আলাইকুম বন্ধুরা, আসা করি সবাই ভালো আছেন সুস্থ এবং নিরাপদে আছেন। করনার কারনে পুরো বিশ্ব এখন থমকে আছে। মানুষের দৈনন্দিন জীবনে চলছে এসেছে নানা ধরনের পরিবর্তন। এত ভয়ংকর ভাইরাসের আক্রমণ এর মধ্যেও মানুষ নিজেকে নতুন নিয়ম ও পরিবেশ এর সাথে মিলিয়ে নিয়ে জীবন যাপন করতে শিখে গেছে। আমিও চেষ্টা করতেছি নিজেকে নতুন নিয়ম ও পরিবেশের সাথে মানিয়ে নেওয়ার। যার একটা বড় উদাহরণ হচ্ছে হোম কোয়ারান্টাইনে থাকা। কোয়ারান্টাইনে থাকতে থাকতে জীবনের ঘটে যাওয়া নানা দুঃখ ও আনন্দের গল্পগুলো অনেক বেশি মনে পরে। যার একটা গল্প আজ আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। কিছু দিন আগে আমি এবং আমার বন্ধুরা মিলে আমার বাড়ির পাসের একটা রেলস্টেশনে ঘুরতে গেছিলাম তার কিছু আনন্দঘন মুহুর্ত আমি আপনাদের সাথে আজ শেয়ার করবো।তাই সময় নষ্ট না করে শুরু করা যাক......
আমাদের একসাথে হওয়াটা একটা মজার বা আকস্মিক ঘটনায় । কারন ঘটনাটি ঘটেছিল জানুয়ারি মাসে সীমিত কয়েকদিনের জন্য যখন লকডাউন বন্ধ করা হয়েছিল। হুট করে এক বন্ধুর মাথা আইডিয়াটা আসে, যে অনেক দিন হল বন্ধুদের আড্ডা দেওয়ার হয় না। বন্ধুরা মিলে কোথাও ঘুরতে যাওয়া এবং হালকা খাবার খাওয়া হবে ঠিক করা হল। সবাইকে খবর দেওয়া হল। বিকাল ৪টার দিকে আমারা বের হব। আমি সহ মোট ৮ জন বন্ধু উপস্থিত হল। কিসে করে ঘোরাঘুরি করবো তার একটা চিন্তা সবার মাথায় আসলো। হঠাৎ করে এক বন্ধু বললো লকডাউনের কারনে আমার চাচার খোলা জিপ পড়ে আছে তোরা চাইলে ঐটায় করে যাওয়া যায়। সবাই হুররেএ... বলে চিৎকার করে উঠলো। সবাই তারাতাড়ি করে উঠে পরলাম চার সিটের খোলা জিপ এ। শুরু হলো আমাদের যাএা।
প্রথমে আমারা গোপালগঞ্জের চাপাইলি ব্রিজে গেলাম। সেখানে গিয়ে ব্রিজ এর উপর থেকে সবাই চারপাশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোক করলাম। বন্ধুরা মিলে ঘুরতে বের হয়েছি আর ছবি তোলা হবে না তা কি আর হয় শুরু হয়ে গেল ছবি তোলার পর্ব। সবাই মিলে ঝটপট করে কিছু ছবি তুলে ফেললাম।
এর পর আমরা রওনা দিলাম গোপালগঞ্জের গোবরা রেলস্টেশন। সেখানে গিয়ে সবাই মিলে রেললাইন ধরে হাটা শুরু করলাম । সুন্দর একটা জায়গায় দেখে বসে পরলাম সবাই। রেললাইন এর উপর বসে শুরু হলো আমাদের আড্ডা। সবার হাতে বাদামের প্যাকেট, আড্ডা দিবো বাদাম খবো না তা কি করে হয়। লকডাউনের ভিতর কার দিনকাল কেমন কাটতেছে কে কি করতেছে। সবার দুঃখ আনন্দের কথা ভাগাভাগি করে নিলাম সবাই । কখন যে টাইম শেষ হয়ে সন্ধ্যা শুরু হলো বুঝতেই পারলাম না। তারপর রেল স্টেশনের চারপাশে ঘুরে দেখলাম এবং ঝটপট করে আরো কিছু ছবি তোলা হল।
সন্ধ্যার পরপরই আমরা একটা রেস্টুরেন্টে ঠুকে পরলাম। রেসিপিতে অনেক কিছু ছিল কে কি খাবে তা অর্ডার করা হলো। খাবার পরিবেশন করতে কিছুটা সময় লাগবে তাই বললেন রেস্টুরেন্টে এর লোক। ৮ জন মিলে রেস্টুরেন্টের ভিতরে শুরু হইয়ে গেল বিভিন্ন ধরনে গল্প। খাবার চলে আসলো টেবিলে রাখা হলো খাবার। শুরু হলো বন্ধুদের খাবারের সময়ের দুষ্টমি। কার প্লেট থেকে কে খাচ্ছে তা বুঝা মুসকিল। খাবারের স্বাদ ছিল খুবই সুন্দর এবং সুস্বাদু। সবাই মিলে ঝটপট করে খাবার এর পর্ব শেষ করলাম।
তার পর শুরু হলো বাড়ি ফেরার যাএা। ফেরার পথে এক বন্ধু গান শুরু করলো তার সুরের সাথে সুর মিলিয়ে আমরাও শুরু করলাম মুহুর্তটা ছিল খুবই একটি আনন্দের মুহুর্ত। কিছু সময়ের ভিতরে বাড়ি পৌঁছে গেলাম। পুরো দিনটাই ছিল জীবনের একটা স্বরনিয় দিন।
বন্ধুত্ব হচ্ছে পৃথিবীর সবচাইতে দামি জিনিস। যা কখনে কোন টাকা দিয়ে কেনা যায় না, যা শুধু মাএ ভালবাসা ও আত্মার অস্তিত্বের মাধ্যমে অর্জিত হয়। বন্ধু হচ্ছে গোলপ গাছের ফুল এর মত যা আত্মার অস্তিত্বে দিয়ে অর্জন করতে হয়,ত না হলে তারাহুড়া করলে কাটার খোঁচা খেতে হয়।
আজকের গল্পটা এই পর্যন্তই, আসা করি আজকের গল্পটা সবার ভাল লেগেছে।জিবনের একটি বাস্তব অভিজ্ঞতা সবার সাথে শেয়ার করতে পেরে আমিও অনেক আনন্দিত।
Photo collection : All photo taken by me with my phone redmi note 7 pro.