-আপনি আমাকে সিন জোন করছেন কেন?
মেসেজটা দেখে কিছু না বলেই মেসেঞ্জার থেকে বেরিয়ে গেলাম। এই "কেন" তে আমার বেশ এলার্জি। কত কেন এর জবাব আমার জানা হয়নি। এই ছোট খাটো কেন এর জবাব না দেওয়া অনেকটাই হালাল আমার কাছে।
ঘুম আসছে না। মানুষের কফি খেলে ঘুম চলে যায়। আমার ক্ষেত্রে ঠিক উল্টো। কফি খেলে আমার ঘুম পায়। আমার সব কিছুই উল্টো।
গান চলছে। গভীর রাতে গান শুনতে আমার ভালো লাগে। বারান্দায় যাব কিনা বুঝতে পারছিনা। সাহসে কুলায় না। ভুতের ভয়। কি অদ্ভুদ! পড়াশোনা করা মানুষ আমি ভুতের ভয় পাই। ভয় তো পাওয়া উচিত মানুষকে। কারন মানুষ ভীষণ রকম কুৎসিত এবং ভয়ংকর।
-আপনি কি জানেন আপনি খুব বেশি বুঝেন?
-হুম
-আপনি জানেন আপনি কারও সাথে টিকতে পারবেন না। মেয়েদের এত বুঝতে হয়না।
-আমি জানি।
অপরপ্রান্তের ব্যাক্তি আমতা আমতা করছে। আর কিছু বলতে পারছেনা। অস্বস্তিকর একটা পরিবেশ।
আজকাল সবার সাথে তর্কে যেতে ইচ্ছা করেনা। কারন আমি জানি প্রশ্নকর্তা চাইছেন আমি তর্কে যাই। আমি তর্কে গেলে কথার পরিধি বাড়বে, ওনার অনেক সন্তুষ্টি হবে, সেই সন্তুষ্টি আমি তাকে দিতে চাইছিনা। বিরক্তিকর ব্যাক্তিরা যা চায় ঠিক তার বিপরীতে আজকাল কাজ করতেই আমি পছন্দ করি। ওইযে বললাম, আমার সব কিছুই উল্টো!!!
-গানটা তোমার জন্য ডেডিকেট করলাম। শুনে দেখো।
"মাঝে মাঝে তব দেখা পাই চিরদিন কেন পাইনা....."
পুরো গানটা শুনলাম...আমার পছন্দের গান। কিন্তু আমাকে কেন ডেডিকেট করেছে???
নাহ আসলে করেনি। কিছু একটা বলতে ইচ্ছা করলেই আজকাল আমরা অনেক কিছুই বলে ফেলি কিছু না ভেবেই। ক্ষনিকের মোহ বলে বোধহয় একেই। মোহে কখনও পা মারাতে হয়না। মোহ হলো মরীচিকার মত। যত কাছে যাবেন দেখবেন তত আপনার ইলুশন হাওয়ায় মিলাবে, কষ্ট বাড়বে।
-আমি কি আপনার সাথে মাঝে মাঝে কথা বলতে পারি?
-কেন?
-অনেক শান্তি লাগে
-কিন্তু আপনার সাথে কথা বলে তো অশান্তি লাগে।
-রেখে দিব?
-খুশি হব।
কিছু মানুষের জন্ম হয় মনে হয় "ভেন্টিং বক্স" হওয়ার জন্য। আমি সেইরকম একজন। মানুষ আমাকে তাদের ভেন্টিং বক্স মনে করে। মাঝে মাঝে আমার মনে হয় আমার বুকে একটা সাইনবোর্ড আছে যাতে বড় বড় অক্ষরে লেখা -
"আমি শান্তি বিলাই"
মানুষ বুঝে না, শান্তি খোঁজা উচিত নিজের মাঝে। অন্যের মাঝে শান্তি খুঁজতে চাওয়া বোকামি। কারন সেই ব্যাক্তি যখন চলে যায়, সাথে সব শান্তিও নিয়ে চলে যায়। সব জানার পরেও আমরা অন্যের মাঝে শান্তি খুঁজি। কারন আমরা মানুষ। আমরা ভুল করতে ভালোবাসি!
গতদিন প্যাথলজিকাল লায়ারদের নিয়ে একটা আর্টিকেল পড়ছিলাম। তেমন কোন উদ্দেশ্য নয়। আসলে আজকাল মিথ্যার রাজ্যে কি সত্য কি মিথ্যা বোঝা মুশকিল। তাই মানুষের সাইকোলজি বুঝতে আমার এই ব্যবস্থা। সাইকোলজি বেশ ইন্টারেস্টিং একটা জিনিস।
শেষ রাতের দিকে আমার মন বেশ ভালো থাকে। ফুরফুরে, শান্ত। কারন আমি জানি রাতের পর ভোর আসে। ঠিক আমার জীবনের মত, যার শুধু আঁধার আলো নিয়েই খেলা। কারন আমি আঁধার পেরিয়ে আলো ছুঁই, দিন দিন প্রতিদিন।