মানুষ জীবিকার উদ্দেশ্যে কঠিন থেকে কঠিনতম পথ পাড়ি দেয়। আর সেই জীবিকার পথই যখন বন্ধ হয়ে যায় তখন কোনো মানুষের মাথা আর ঠিক থাকেনা। মানুষ অচল, নিথর হয়ে পড়ে সব দিক দিয়ে। যেকোনো মানুষই শারীরিক, মানসিক, অর্থনৈতিকভাবে ভেঙে পড়ে। এক কথায় সার্বিকভাবে তার পতন ঘটতে শুরু করে।
দুই হাজার একুশ সালের দোসরা ফেব্রুয়ারি, পতনটা যেমনভাবে শুরু হয়েছিল আমার বাবার ক্ষেত্রে। এই তারিখটাকে একটা অভিশপ্ত তারিখও বলা যেতে পারে। এই তারিখেই আমার আব্বুর কোম্পানি সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয় যে তারা আর তাদের প্লান্ট চালু রাখবে না। বন্ধ করে দিবে সাধারন কর্মচারীদের পেটে দুবেলা ভাত যাওয়ার রাস্তা।সাধারন কর্মচারিদের সংসার কিভাবে চলবে এতে কারো কোনো মাথা ব্যাথা থাকেনা। কোম্পানি কিছুটা বাধ্য হয়েও বন্ধ করে দেয় বলে জানতে পারি।
করোনার এই মহামারির সময়ে চারেদিকে এমনিতেই অভাব।ঠিক দুর্ভিক্ষ না হলেও দুর্ভিক্ষের মতোই হাহাকার ডেকে গেছে।বিশেষত লকডাইন আর শাটডাউন দেওয়ার কারনেই মানুষের অবস্থা আরও বেশি খারাপ হয়ে পরেছে। হাতে কাজ নেই কারো ছিল তাও চলে গেছে এমনভাবে খেয়ে না খেয়ে দিন পার হচ্ছিল মধ্যবিত্ত এবং নিম্নবিত্তের দিন। এসবের মধ্যে যেসব মধ্যবিত্তদের কাজ চলে গেছে তাদের অবস্থা আরও দুর্বিষহ হয়ে পরে। দু বেলা দু মুঠো খেয়ে পার করোটায় কষ্টের বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে।
এমনত অবস্থায় আমাার বিয়ে পড়ানো হয় হয় লক ডাউনের মধ্যে। আব্বু নিজের কিছু জমানো টাকা আর ঋনদানা করে আমার বিয়ে দেয় প্রতি মাসের বেতনে বেতনে পরিশোধ করে দিবে এমন ভেবে। কিন্তু বিয়ের একমাস পরেই কোম্পানি বন্ধ হয়ে যায় এবং আমরা খুব অভাবে পড়ে যায়। ঋন পরিশোধ তো দূরেই থাক নিজেদের যে কি কষ্ট করে প্রতিটা দিন কেটেছে সে শুধু আমাদের মত জীবিকার পথ বন্ধ থাকা মধ্যবিত্তরাই জানে।
তাই সবশেষে এটুকুই প্রার্থনা থাকবে পৃথিবী আবার আগের মতো হয়ে যাক। সবাই আবার নিজেদের আপন গতিতে ছুটে চলুক।প্রকৃতি সেজে উঠুক তার অপরূপ সৌন্দর্য্যের মহিমায়....