লোড শেডিং || বিদ্যুৎ বিভ্রাট 💡

in BDCommunity3 years ago

আজকাল বিদ্যুৎ বিভ্রাট এক বহুল আলোচিত বিষয়। আর হবেই না কেনো! হরহামেশাই বিদ্যুৎ মশাই যে মামার বাড়ি ঘুরতে চলে যায় না বলে কয়ে। তার মধ্যে যা গরম পড়েছে চারদিকে, সিদ্ধ হয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা। সবদিক থেকেই প্রান যায় যায় বলে! রাতে আরামের ঘুম হারাম করে বসে থাকাই এখন দৈনন্দিন কারবার।

ইদানিং বাড়িতে বড্ড একা হয়ে গেছি। ঈদের ছুটি শেষে সবাই যার যার কাজে ব্যস্ত হয়ে গেছে। এক আমিই বাড়িতে বসে অন্ন সাবার করছি। যাইহোক এই সময়টাতে আমার সঙ্গী এক মোবাইলফোন আর ঘুম। সারাদিন ঘুমিয়ে কাটিয়ে দেওয়া রীতিমতো অভ্যাসে পরিনত হয়েছে। যাইহোক প্রানপ্রিয় মোবাইলকে রেখে যেই ঘুমাবো বলে গোছগাছ করে বিছানায় শুলাম, তেমনি কারেন্ট বাবাজি যাওয়ার পথ ধরলো।

বলছি গতকাল রাতের কথা। সারাদিন মোবাইল টিপাটিপি করে মাত্র শুয়েছিলাম ঘুমাবো বলে, আর সেই সময়ে কারেন্ট যাওয়াতে একরাশি গালি নিজের অজান্তেই মুখ থেকে বেড়িয়ে গেলো। কারেন্ট যাওয়ার কি আর সময় ছিলোনা? এখনই যেতে হলো। আরেকটু পর গেলেই তো ঘুমিতে পরতাম। তখন গরমে আমার কিছু আসতো যেতোনা।

কি আর করার, থ্রি কোয়ার্টার প্যান্ট আর একটা পাতলা গেঞ্জি গায়ে দিয়ে বেড়িয়ে পড়লাম তিনরাস্তার মোড়ের দিকে। এই জায়গাটা বেশ খোলামেলা। বহু দূর পর্যন্ত কোনো ঘরবাড়ি নেই। বর্ষাকাল হওয়াতে জমি গুলোতেও পানি জমে আছে। রাতের আকাশটা বেশ সেজেছিলো আজ। একপাশ দিয়ে মেঘলা আকাশে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে। সাথে থান্ডা শীতল হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। আহ! ভিষন সুন্দর লাগছিলো পরিবশটা।

পাশে বসে থাকা বন্ধুকে বললাম, “ জানিস ; এই বিদ্যুৎ চলে যাওয়া নিয়ে আমার একটা স্মৃতি আছে, যা এখনো বয়ে বেড়াচ্ছি”।

কৌতুহলী বন্ধু আমার জানতে চাইলো কি সেই স্মৃতি?

বললাম, “ আমি তখন ক্লাস টুতে পড়তাম। সবকিছু নিয়ে বেশ কৌতূহল কাজ করতো। একদিন রাতে বাবা আমার জন্য বিস্কুট নিয়ে আসে। সেই সময়টাতে আজকের মতো কারেন্ট চলে গিয়েছিলো। ঘরে আলোর উৎস হিসেবে একটি কপি ( হারিকেন জাতীয় আলোর উৎস) জ্বালিয়ে রাখা হয়েছিল। মা প্যাকেট থেকে বিস্কিট গুলোকে একটি বক্সে রেখে দেয়। আমি একটি বিস্কুট খেতে খেতে প্যাকটি নিয়ে খেলছিলাম। হঠাৎ করেই আমার ঘাড়ে ভুত চেপে বসে। আমি গিয়ে সেই প্লাস্টিকের বিস্কুটের প্যাকেটটি কপির আগুনে জ্বালাতে থাকি। একটা সময় নিজের অজান্তেই দুই ফোটা জ্বলন্ত প্লাস্টিকের তরল গিয়ে পড়ে আমার পায়ে। জ্বালাপোড়া শুরু হতেই কাউকে না জানিয়ে ঘরের কোনে গিয়ে অনেক কষ্টে পা থেকে সেই প্লাস্টিকগুলো ছাড়িয়ে বাবা-মায়ের পাশে শুয়ে পরেছিলাম। অন্ধকারে দেখতে পায়নি পায়ে কতোটা ক্ষত হয়েছে। কিন্তু রাত বাড়তেই জ্বালাপোড়া বহুগুণে বেড়ে যায়। তখন আর বাবা-মাকে না জানিয়ে পারিনি৷ পরে আলো জ্বালাতেই দেখি পায়ে দুটি ক্ষত তৈরি হয়েছে। উপরের অংশের চামড়াটা পুড়েই গেছে। বাবা-মা তাড়াতাড়ি করে ক্ষতস্থানে ঔষধ লাগিয়ে দেয়। তারপর থেকে আজ পর্যন্ত এখনো সেই দুটি দাগ বয়ে বেড়াচ্ছি। এই দাগগুলো আর কোনদিনো মুছবার নয়। এই দাগদুটো এখন আমার চিহ্নে পরিনত হয়েছে।”

বলতে বলতেই কারেন্ট চলে এসেছে। তিনরাস্তায় বসে থাকা সবাই বাড়ির পথ ধরেছে। বন্ধুকে নিয়ে আমিও বাড়ির দিকে হাটতে শুরু করলাম। তারপর বাসাই ফিরেই দিলাম শান্তির ঘুম।


received_2889506478020999.jpeg

Sort:  

You post has been manually curated by BDVoter Team! To know more about us join our Discord.


Delegate HIVE POWER to us & earn HIVE daily.

FOLLOW OUR HIVE AUTO CURATION TRAIL

লোডশেডিংয়ের সাথে আমারও অনেক স্মৃতি হয়েছে । তখনকার সময়ে লোডশেডিং হলেও এতটা খারাপ লাগত না কারন তখন আমার মোবাইলের প্রতি এতটা আসক্তি হয়নি। কিন্তু এখন লোডশেডিং হলে মোবাইলের চার্জ নিয়ে সবচেয়ে বেশি চিন্তা করতে হয় 😂।

Use high performance mobile batteries 😃 Then you wouldn’t worry about load shedding 😬

আসলে তখন লোডশেডিং হলে সবাই মিলে আড্ডায় বসে যেতো আর এখন সবাই মোবাইল নিয়ে বসে যায়। সেই কারনে ভালোবাসা ও কমে গেছে বা যাচ্ছে।