কিছু জিনিস উপলব্ধি করবার জন্য সম্ভবত এক্সপেরিয়েন্স না করলে সম্ভব না।
আমি বেজায় অভিমান নিয়ে প্রশ্ন করেছিলাম "কেনো সংখ্যালঘুরা এই দেশকে 'ওউন' করতে পারেনা?"
কিন্তু এই মধ্যরাতে সুবন্ধু'র কল্যাণে নতুন এক চিন্তার আঙ্গিক পেলাম যে, "কেনো আসলে তারা ওউন করতে পারেনা"। এই কথাগুলো তাদের জন্য।
আমার দেখা সব মুসলিমদের দেখে এসেছি এইসব ধর্মীয় ভেদাভেদে না যেতে, তাই ধারণা করেছিলাম হয়তো সবাই এরকম প্রতিবেশী অন্তপ্রাণ জাত, ধর্ম নির্বিশেষে।
কিন্তু সম্ভবত না।
কথায় কথায় হিন্দুদের বাড়িতে আক্রমণ, (যদিও খ্রিস্টান, বৌদ্ধদের ব্যাপারে খুব একটা শুনিনি), যেইটা সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত আর বিচারের আওতায় না আসাটা এখন ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে।
দেশে যেকোনো রকম ছোট, বড় অরাজকতা হলেই শোনা যায় হিন্দুদের উপর আক্রমণ হচ্ছে।
এদের কেউ জানেনা, কখন, কোথায় কে হামলা করবে।
ঠিক বর্তমানে ডাকাত পড়ার মতো।
আপনি ভেবে দেখুন দু'দিনে ডাকাত পড়ায় কিরকম ত্রাস সৃষ্টি হয়েছে, নির্ঘুম রাত কেটেছে, আর এই সংখ্যালঘু মানুষগুলা দিনের পর দিন, বছরের পর বছর হয়তো এই দুশ্চিন্তা নিয়ে ঘুমাতে যাচ্ছে।
ড্যাম্ন দূর্গা/কালী পূজার মত মহাআয়োজনেও সম্ভবত এরা আনন্দ উদযাপনে না মেতে, চাপে থাকে কখন কোথায় হামলা হয়!
একটা কনস্ট্যান্ট টেরিফায়িং অবস্থার মধ্যে দিয়ে তাদের জীবন যাপিত হচ্ছে!
এমতাবস্থায়, তারা কেমনে ওউন করবে এ দেশকে?
পূজা হলে, রাজনৈতিক কোন্দল হলে, যেকোনো আন্দলোন হলে, হরতাল হলে মানে সোজা কথা যেকোনোরকম বিশৃঙ্খলা হলে এমনকি কিছু না হলেও, শোনা যায় হিন্দু বাড়ি মন্দিরে আক্রমণ হয়েছে। এইগুলা নিয়ে নিউজ হয়, খবর আসে, দুষ্কৃতকারীদের " তেব্র" নিন্দা জানানো হয়, মাঝেমধ্যে হয়তো "ক্ষতিপূরণ" দেয়া হয়, তারপর এগুলা আমরা ভুলে যাই। দেশের প্রায় গ্রুপভিত্তিক সব ক্রাইমের মতই এটাও এই চক্রে চলে আসছে যুগের পর যুগ
এখন জামাত-শিবির, বিএনপি যত্রতত্র মিছিল করে বেড়াছে, তাদের সুদিন আসছে বলে প্রচার করছে এইগুলা দেখেতো আমার মনে হয় বাকিরা দেশ ছাড়ার তোড়জোড় শুরু করতেসে। অন্তত হাসিনার যুগে তারা জানতো হিন্দুদের উপর হওয়া নির্যাতন অনেকটাই কম ছিলো, স্বস্তি ছিলো কিছুটা হলেও।
সবাই আমার আপনার মতো সুচিন্তক না। সবার মাঝে দাবাবলের মত ভয় ছড়িয়ে পড়ছে জামাত-শিবির আর বিএনপি'র কার্যকলাপ দেখে।
এদেরকে ছাড়া গরুর মতো চড়ে বেড়াইতে কেনো দেয়া হচ্ছে?
তাছাড়া শহর দিয়ে পরিস্থিতি বিচার করছেন কিভাবে যেখানে মানুষ মফস্বল, গ্রামেও আছে প্রায় অর্ধেক বা তার বেশী! এইযে, এত হামলা, ভাঙচুর হলো, শুধুতো হিন্দু বাড়ি/মন্দির না, জাতীয় ভাস্কর্যও।
এগুলার বিচার কবে হবে? আদৌ হবে?
(আমি এখনো বিশ্বাস করি ইসলাম খুবই চমৎকার একটা ধর্ম, কিন্তু ইসলামের নামে এইদেশে খুনী, এক্সট্রিমিজম যে চলছে এর বিচার কেনো হচ্ছেনা? আমি দুঃখিত কিন্তু কথায় কথায় শিবিরের অমুক মন্দির পাহারায়, শিবিরের তমুক হিন্দুবাড়ি পাহারায় কথাগুলা কেবল হাইস্যকরই লাগছে এখন!)
[বিঃদ্রঃ আমি বলতেসিনা সব অরাজকতার দায় কেবল শিবিরের, প্রত্যেকটা রাজনৈতিক দল সমান অপরাধে অপরাধী।
সুতরাং ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দলের লোকজন, আপনারা যে নাশকতার ইতিহাস রেখে এসেছেন, সেইটা মুছে ফেলারতো কোনো সদিচ্ছা আপনাদের মাঝে দেখছিইনা, উল্টা আপনারা ক্ষমতা জাহির করবার আগ্রাসী ভূমিকায় নেমেছেন সবখানে। একশান কি কথার থেকে বেশী পরিষ্কার না!?]
ইসলামপন্থী দল শুনলেই মানুষের আতঙ্কিত হয়ে যাবার এই ইতিহাস কে সৃষ্টি করেছে?
আপনাদের উপর প্রচন্ড অভিশাপ থাকলো আমার। জানিনা আপনারা ধর্মের টুপি লাগায়ে ঘুরলেও কেয়ামত, হিসাব কিতাবে আদৌ বিশ্বাস করেন কিনা, তবুও আপনাদের উপর আমার চরম অভিশাপ, আপাতত আমার ক্ষমতায় করবার মত আর কিছু নাই।
এক্সট্রিমিস্ট, টেররিস্টদের কোনো ধর্ম নাই। হাসাহাসি না করে ওদের থামান, ওরা ভীতির সঞ্চার করছে জনমনে। ওদের বিচার চাই।
প্রান্তিকের মানুষদের, সংখ্যালঘুদের খবর নিন, কেমন আছে, কি করছে, জানতে চান, কি চায় তারা।
জুলাই মাস থেকে ভাবতেসিলাম যা থাকে কপালে, লিখবো।
এখন স্বাধীন দেশে এসে, এই লিখাটা লিখেই মনে হচ্ছে কারো কারো গোপন তালিকায় নাম উঠে গেলো৷
[Cartoon artist's name is written on the picture]
স্বাধীনতার পর এই প্রথম অদ্ভুত আক্ষেপ আর আক্রোশে ভুগছি। মানুষ "এই তোমার স্বাধীনতা" বললেই দৌড়ে যাইতাম ডিফেন্ড করতে, খাবার প্লেটে শুকায়ে যাইতো আমার আঙুল থামে না। হঠাৎ করে এখন সেই গৌরব, আনন্দ অনুভব করতে পারছিনা।
উদযাপনের এই কাতার থেকে দুই ধাপ পিছিয়ে এলাম।
"সবাই" স্বাধীন হলে আবার কাতারে যোগ দেবো।
All the contents are mine, until mentioned otherwise.
Congratulations @fahmidamou! You received a personal badge!
You can view your badges on your board and compare yourself to others in the Ranking
Check out our last posts: