অনেক দিন পর আমি এসেছি তার সাথে দেখা করতে। তার মধ্যে অদ্ভূত এক ভালোবাসার অনুভূতি । আমাকে দেখা মাত্র সে যেন এক নতুন জীবন ফিরে পেলো। তার চোখে মুখে ভেসে উঠছে ভালোবাসার চাপ। তা গ্রাস করলো আমাকে। আমি যেন তার ভালবাসার চোখের দিকে তাকিয়ে হারিয়ে গেলাম। সে নেশাগ্রস্তের মতো বলতে লাগলো ... ভালোবাসি আমি অনেক তোমাকে। খুব আপন করে নিতে চাই তোমাকে এই আমার জীবনে।
নিজেকে স্থির করে আপন মনে হাসলাম এক ঝলক !! কিন্তু তার দৃষ্টির আড়াল হয়নি সেই হাসি।
সে : বললো হাসলে কেন ? হাসির মতো কি বললাম ?
আমি : কাকে পেতে চাও তুমি ?
সে : তোমাকে।
আমি : আমাকে ? নাকি তোমার আগের প্রেমিকাকে ?
সে : শুধু আমার ''তুমি'' কে।
আমি : সে তো কবেই মরে গেছে। পচা শরীরে পোকারা খুব খেলছে।
সে : এভাবে বলো না। আমি নিতে পারি না।
আমি : শুনেই নিতে পারছো না ? তাহলে একবার ভেবে দেখো যে সয়েছে সে কিভাবে ধারণ করছে এই যন্ত্রনা। প্রতিরাতে নীরব অপেক্ষায় মনের মন্দিরে দ্বীপ জ্বালিয়েছি। এই বুঝি আমার ভালোবাসার দেবতা এসে মুক্তকর বেমিথ্যে সম্পর্কের শিকল থেকে।
সে : জানি সব আমার ভুল। আমার আসলে তোমার কাছে আসাই উচিৎ না আর।
আমি : সত্য , সময়গুলো খুব নিষ্ঠুর।
সে : হ্যা তাই। তুমি যা জানো তাই শুধু সত্য।
আমি : এত কিসের বিরক্তি তোমার ? কোনটা ভুল ছিল আমার ?
সে : জানি না। আমি কিচ্ছু জানি না। আমি শুধু জানি , তোমাকে পাওয়ার অক্ষমতা আমাকে গ্রাস করে নিচ্ছে। আমি পাগল হয়ে যাচ্ছি।
আমি : এত ব্যাকুলতা ! এত যন্ত্রনা ! সত্যি ? আবার মোহে পড়ো নিতো ??
সে : সে তুমি বুঝবে না। তোমার বুঝার বয়স হয়নি।
আমি : শব্দ করে হেসে বললাম হাহা আমার এখনো বয়স হয়নি ?
সে : কেউ যদি সব বুঝেও না বুঝতে চাই তাকে বোঝানোর ক্ষমতা আমার নেই।
আমি : থাক যেদিন গেছে তা নিয়ে আর ভেবে কি হবে ?
সে : কিন্তু আমি তো আটকে আছি সেখানেই। তোমাকে ফিরিয়ে দিয়েছি ঠিকই , কিন্তু আমি আটকে আছি তোমার ভিতর। চলো উঠি। অনেকটা পথ যেতে হবে।
আমি : চলেতো যাবেই। সেদিন যখন ভালোবাসার মালা হাতে , হৃদয়ের সব অনুভূতি তোমাকে শপে দিয়েছিলাম এই মনে ,কিন্তু তাকে যখন ধারণ করতে পারলে না সে ব্যার্থতার দায়ী আমার না।
সে : সত্যি বলতে তুমি কি জানো , তুমি আমাকে আসলেই চাওনা। তুমি তোমার যন্ত্রনা থেকে মুক্তি চাও।
আমি : এবার কিন্তু অপমান করছো আমাকে .......
সে : কথায় কথা বাড়ে। মান অপমানের নাম টাই বড় হয়। মিথ্যে স্বপ্ন হাতে নিয়ে আশারা সব খেলা করে। তারচেয়ে বাদ দাও।
চুপ হয়ে গেলাম দুজনেই। যে যার যন্ত্রণার ভার বহন করছি। সে পারেনি আমাকে ধারণ করতে আর আমি পারিনি তাকে ধারণ করতে। আমিও এখন সমাজ-সংসারের নিয়মে বন্দী।
কিছুটা সময় স্তব্দ হয়ে থেকে আমি বললাম চলো সামনের দিকে এগোয়।
অন্ধকার হয়ে এসেছে। মেঘের শ্রাবন আড়াল নিয়েছে সন্ধের কালোই। মৃদু বাতাসে ঢাকা পড়ছে দীর্ঘশ্বাস। সেই কৃষ্ণচূড়া , সেই প্রথম দিনের ফুল , পাপড়ি , কালোপিচ , স্মৃতি, শোক , তিক্ততা , তীব্রতা সব কিছু পিছনে ফেলে দিয়ে দুজনে নীরবে পার হলো প্রিয় পথ। পেছনে পড়ে রইলো স্মৃতিরা।
Hi @farzanaakter, your post has been upvoted by @bdcommunity courtesy of @rem-steem!
Support us by voting as a Hive Witness and/or by delegating HIVE POWER.
JOIN US ON