আগেকার দিনে আমাদের দেশের গ্রামাঞ্চলে একটা প্রথা ছিল এই; দূর থেকে কেউ বাড়িতে এলে বা কোন পথিক যদি পানি পান করতে চায়তো তাহলে তাকে শুধু পানি-ই দেওয়া হত না। পানির সাথে এক টুকরো মিছরির দোলা বা কম করে হলেও একটা বাতাসা দেওয়া হতো।
বিষয়টি নিয়ে আমি কোনদিন ভেবে দেখেনি। কেন পানির সাথে একটা বাতাসা দেওয়া হতো।ভাবতাম বাড়ির গিন্নি হয়তোবা আপ্যায়নের সৌজন্যে এমনটা করতো। মিষ্টিজাত দ্রব্য দিয়ে পথিককে পানি দেওয়ার রহস্য কি? কেনই বা ঝাল, টক, নোনতাজাত দ্রব্য পানির সাথে দিত না?
বিষয়টি আমার কাছে রহস্যময় মনে হত। বিজ্ঞান ভিত্তিক একটা প্রবন্ধ পড়ে বিষয়টি আমার কাছে খোলাসা হয়।কোন পথিক যখন দীর্ঘ সময় ধরে পরিশ্রম করে বা হাটবার পরে পৌঁছাতো তখন তাদের শরীরে পানিশূন্যতার সাথে সাথে শক্তির পরিমাণও কমে যেত। তখন শরীরের ওই হঠাৎ শক্তি হ্রাস পূরণ করতে ওই ছোট্ট মিছরির টুকরোটি বা বাতাসাটি অনেক কাজে দিত।
কিন্তু এতকিছু আর ওই নিরক্ষর গিন্নিরা জানতো না। যাইহোক বিষয়টি যে আমি-ই জানতে পেরেছি তাতেই বা কম কি! একটা রহস্য থেকে মুক্তি পেলাম। এবার অন্য একটি রহস্য আমার মাথায় চেপে বসেছে। কোন ভাবেই এটিকে দূর করতে পারছি না। আমার সবাই জানি মৌলিক স্বাদ চারটি তা হলো- মিষ্টি, টক,নুনতা ও তিতা।স্বাদের এই অনুভূতি আমারা সহজেই অনুভব করতে পারি। কিন্তু এর বাইরের স্বাদের কথা কি আমরা চিন্তা করতে পারি? বা কোন খাদ্য কি এই চারটি স্বাদ ছাড়াও কি আদৌও অন্যকোনো স্বাদ বিদ্যমান আছে? যদি থেকেই থাকে তাহলে এটির অনুভূতি কেমন হবে?
আশ্চর্যের বিষয় মিষ্টি, টক, নুনতা, তিতা এই চারটি মৌলিক স্বাদের বাইরেও আরো একটি স্বাদের অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছে বিজ্ঞানীরা।
এই স্বাদটির নাম হলো, 'উমামি' স্বাদ।সাম্প্রতিক সময়ে জাপানি বিজ্ঞানীরা এটি আবিষ্কার করেছেন। আপনারা হয়তো এর নাম শুনে অবাক বনে যেতে পারেন। উমামি স্বাদ আবার কেমন স্বাদ। এই স্বাদের অভিজ্ঞতা যাদের নেই তারা কোন ভাবেই এটিকে অনুভব করতে পারবে না। যেমন, আমি পারছি না।
এতক্ষণ যে স্বাদগুলোর কথা আলোচনা করা হলো তা কিন্তু মানবজাতির সূচনা লগ্ন থেকেই আসে নাই। মানুষের হাজার বছরের ভিবিন্ন প্রকারের খাদ্যগ্রহনের চর্চ থেকেই তা এসেছে। এখন তাহলে আমাদের মনে প্রশ্ন আসতে পারে তাহলে কি চর্চা করার মাধ্যমে আমরা নতুন নতুন স্বাদ আবিষ্কার করতে পারি? এটি আমরা অবশ্যই পারি। কিভাবে? আমাদের দেশে আজ থেকে একশত বছর পূর্বে যে সব শাক-সবজি ও ফলমূল মানুষ খেতো এখন কি আমরা সে সব শাক-সবজি ও ফলমূল খাই? অবশ্যই না।
এই দীর্ঘ সময়ে খাবারের বিবর্তন ঘটেছে। কিছু খাবার আমাদের মেনু থেকে বাদ পরেছে আবার কিছু খাবার সংযুক্তও হয়েছে। যেমন আমি শুনেছি, পূর্বে আমাদের
গ্রামের মানুষ সজনেপাতা খতো না। কিন্তু এখন আমার কাছে সজনেপাতা অনেক মজার একটি শাক।
এখন আমাদের খুঁজে বের করতে হবে কোন শাক-সবজিগুলো পূর্বে মানুষ খেতো। একি সাথে আমাদের এটিও খুঁজে বের করতে হবে যে, মাঠে -ঘাটে জন্মানো কোন বৃক্ষ ও বৃক্ষের ফল খাওয়া যাবে। আমারা যদি খাদ্য অন্বেষণের এই প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে পারি তাহলে কিন্তু বিশ্ব থেকে খাদ্য সমস্যার চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত হবে।
তরকারি তে একদম লবণ না হলে যে স্বাদ আসে তাকে কি বলে? মৌলিক স্বাদগুলো তখন জানালা দিয়ে পালায়। 😅
ধন্যবাদ ভাই। খাওয়ার সময় ভোজ্য বস্তটির অনুভূতি যদি ভালো না লাগে তাহলে কিন্তু সেটাকে আমরা স্বাদ বলতে পারিনা।
তেতো অনুভূতি টাও আমার খাওয়ার সময় ভাল লাগে না, করলা ভাজি নির্দিষ্ট করে বলতে গেলে 🤣🤣
যাইহোক বিষয়টি প্যাচানো, কথার মাঝে কথা ঘুরতেই থাকবে 😛
Congratulations @hernack! You have completed the following achievement on the Hive blockchain and have been rewarded with new badge(s):
Your next target is to reach 100 comments.
You can view your badges on your board and compare yourself to others in the Ranking
If you no longer want to receive notifications, reply to this comment with the word
STOP
To support your work, I also upvoted your post!
Check out the last post from @hivebuzz:
Support the HiveBuzz project. Vote for our proposal!