মানুষ অভ্যাসের দাস, এই প্রবাদ টা আমরা সবাই জানি। কিন্তু আমাদের কিছু কিছু বাজে অভ্যাস আছে যেগুলোকে আমরা চাইলেও পরিবর্তন করতে পারি। কিন্তু আমরা সেটা ভুল জেনেও ভুলের মধ্য দিয়েই জীবনযাপন করতেছি প্রতিনিয়ত। এর মধ্যে এখন সবার কমোন একটা বদঅভ্যাস হলো সকালে দেরিতে ঘুম থেকে ওঠা আর রাতে দেরিতে ঘুমাতে যাওয়া। তবে আমরা ইচ্ছা করলেই এই বদঅভ্যাস গুলো পরিবর্তন করতে পারি।
আমাদের দিনের শুরুটা কি সঠিক সময়ে হচ্ছে? না, আমাদের দিনের শুরুটা ভোরবেলা থেকে করতে পারি না। আমাদের জীবনের এতো এতো ব্যস্ততা বেড়েছে যে এখন দেখা যায় আমরা ঘুমাতে ঘুমাতেই রাত ২,৩টা বেজে যায়। তার পর দেখা যায় আমরা সকালবেলা ঘুম থেকে উঠতে উঠতে ১০,১২টা বেজে যায়। এখন বর্তমান সময়ে দেখা যায় সবার নিত্যদিনের রুটিন হয়ে গিয়েছে এটা। কিন্তু আমরা যদি প্রতিদিন ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠতে পারি তাহলে সকালের যে গুনগুলো আছে সব কিছুই আমরা উপভোগ করতে পারি। যেমন সকালবেলা ঘুম থেকে উঠতে পারলে আমাদের শরীর মন দুটোই ভালো থাকে। আবার দেখা যায় যদি আমরা ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠে ফজর নামাজ টা পড়ে একটু হাটাহাটি করি তাহলে সারাটা দিন অনেক ভালো ভাবে কেটে যায়।
ভোরবেলা উঠার যে অভ্যাস টা আমরা যদি গড়ে তুলতে পারি তাহলে দেখা যাবে আমাদের ব্যক্তি জীবনে এবং শারীরিক ভাবেও অনেক ভালো থাকতে পারি। আমরা যদি প্রতিদিন রাত ১২ টার আগে ঘুমানোর অভ্যাস করতে পারি তাহলে দেখা যাবে আমরা সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠতে পারি। কিন্তু রাতে যদি দেরিতে ঘুমাতে যাই তাহলে তো সকালে উঠা কষ্টকর হবে এটাই স্বাভাবিক। এখন আমার দিকটাই যদি বলতে চাই তাহলে দেখা যায় আমার একটি বাজে অভ্যাস তৈরি হয়ে গিয়েছিলো। আমি রাতের বেলা ঘুমাতাম অনেক দেরিতে, গেইম খেলতাম না হয় ভিডিও দেখতাম। যার ফলে দেখা যেতো আমি সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠতে পারতাম না এবং আমার নামাজও পড়া হতো না। ঘুম থেকে দেরিতে উঠার পর অর্ধেক দিন ঘুমের কেটে যেতো, দিনটা একদম ছোট মনে হতো। কিন্তু কিছুদিন যাবত আমি চেষ্টা করি অনেক আগে ঘুমিয়ে যেতে। রাতের গেইম খেলার অভ্যাস টা বাদ দিয়ে দিয়েছি।
এখন আমি সকালে ঘুম থেকে উঠে নামাজ পরে বাহিরের আবহাওয়া টা অনুভব করি। আলহামদুলিল্লাহ এখন অনেক ভালোও লাগে সারাটা দিন। সকালে ঘুম থেকে উঠার পর দেখা যায় সকালের পরিবেশটা বেশ নিরিবিলি। এবং ভোরবেলার পাখির কোলাহল সব কিছু উপভোগ করে মনে অনেক প্রশান্তি মিলে। সকালের মৃদু ঠান্ডা বাতাস যখন গায়ে লাগে তখন মন এমনি আনন্দিত হয়ে যায়। ছোট বেলায় দেখতাম আমি ঘুম থেকে উঠার আগেই আমার মা উঠে নামাজ পড়ে একটু হাটাহাটি করছে বাড়ির পাশের রাস্তা দিয়ে। এর পর এসে বাড়ির কাজ করছে। তখন আমিও সকাল সকাল উঠে হাটাহাটি করতাম অনেক ভালো লাগতো তখনকার দিন গুলো। সকালবেলা ধানের ক্ষেতে দেখা যেতো শিশির জমে আছে। পাশদিয়ে হেটে যাওয়ার সময় আমার পায়ে শিশির লাগতো। সেই অনুভূতিটা এখন অনেক মিস করি।
ছোট বেলায় দেখা যেতো ঘুম থেকে সকাল বেলা উঠার জন্যে অস্থির হয়ে পরতাম কিন্তু মা বলতো এখনও আযান দেয়নি। এখনি উঠা যাবে না আর একটু ঘুমা। আর বর্তমানে সেই ছোটবেলার দিন আর নেই, হয়েছে তার উল্টো টা। এখন মা ঘুম থেকে তুলার জন্যে চিল্লাচিল্লি করে কিন্তু আমাদের ঘুম ছাড়েই না। ছাড়বেই বা কিভাবে আমরা তো ঘুমাতেই রাত পাড় করে দেই। সব কিছু হইতো হয়েছে আধুনিকতার প্রভাবে। আমাদের হাতে হাতে যদি আজ মোবাইল ফোন না থাকতো। আমরা হইতো এতো রাত জেগে ফোন চালাতাম না। রাতে আগেই ঘুমিয়ে যেতাম সকালে আমাদের মাদের ডেকে উঠাতে হতো না, বা সকালে ঘুম থেকে ওঠার জন্য আলার্ম ব্যাবহার করা লাগতো না। আমাদের সেই ছোটবেলার মতো সকাল না হতেই ঘুম ভেঙে যেতো। সকালে উঠার অভ্যাস গড়ে তুলা আমাদের জন্যে অনেক প্রয়োজনীয়। কারন কিছু দিন পর সবাই কর্মক্ষেত্রে চলে যাবো। তখন আমাদের না চাইলেও সকালে উঠেই কর্মসংস্থানে পৌঁছাতে হবে। তাই আমাদের উচিত নিজের শরীরের জন্যে এবং নিজের মন কে ভালো রাখতে, রাতে তারাতারি ঘুমাতে যাওয়া এবং সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠার অভ্যাস গড়ে তুলা।
করোনার সময় এটাই হয়েছে! বেশিরভাগ সবাই রাতে দেরি করে ঘুমানো ও সকালে বেলা করে উঠা অভ্যাস করে ফেলেছে।
করোনা এসে সবার জীবনের রুটিন অনেক পরিবর্তন হয়ে গেছে।
Congratulations @imam-hasan! You have completed the following achievement on the Hive blockchain and have been rewarded with new badge(s):
Your next target is to reach 3250 upvotes.
You can view your badges on your board and compare yourself to others in the Ranking
If you no longer want to receive notifications, reply to this comment with the word
STOP
Check out the last post from @hivebuzz:
Support the HiveBuzz project. Vote for our proposal!