আসসালামুআলাইকুম,
https://unsplash.com/t
টাকা পৃথিবীর সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ বটে, টাকা ছাড়া পৃথিবীর আপন মানুষ গুলোর পর হয়ে যায়।যদি আপনার কাছে প্রচুর অর্থ থাকে তাহলে পর মানুষ সহ আপনার আপন হতে দ্বিধাবোধ করবে না। আপনার কাছে তো প্রচুর টাকা আছে তাই আপনার মূল্য সমাজে থাকবে অনেক বেশি।এখন মানুষ মানুষকে টাকার জন্যই মূল্যায়ন করে। টাকায় যেন মূল্যায়নের একমাত্র উৎস।যদি টাকা না থাকে তাহলে আপন মানুষগুলো কাছে বোঝা হয়ে দাঁড়াবেন। যখন আপনি তাদের কাছে যাবেন।হয়তো তারা মনে করবে টাকা চাওয়ার জন্য এসেছে।সেইটাই মনে করে অভাবে থাকলে।
আক্ষেপ করে বলছিলেন একজন প্রবাসী,
অনেক বছর যাবত প্রবাসে ছিলেন, সংসারের জন্য অনেক অর্থ খরচ করেছেন। জীবনের অর্ধেক সময়ের প্রবাসে কাটিয়েছেন।তবে নিজের মাতৃভূমির প্রতি তাঁর ছিল অগাধ ভালবাসা। সেই ভালোবাসার টানে সমাজের কোন ভাল কাজের কথা যদি শুনতো। প্রবাস থেকে সেই প্রবাসী টাকা পাঠিয়ে সমাজের উন্নয়নের কাজ করতো।
পরিবার আত্মীয়-স্বজন যারা যেই বিপদে পড়ে তার কাছে সাহায্য চাইতেন।তিনি সামর্থ্য অনুযায়ী সাহায্য করত কখনো তিনি কাউকে খালি হাতে ফিরিয়ে দেননি। গ্রামের এবং পরিবারের মানুষের কাছে খুবই আদরের এবং সম্মানের মানুষ ছিল তিনি। প্রবাসে থাকলেও সমাজে যদি কোন অনুষ্ঠান করতো তার সাথে কথা বলত তার থেকে পরামর্শ নিতে এবং অর্থসাহায্য নি তো।
সামাজের মানুষগুলো যেন তাকে ছাড়া চলতে পারত না।সমাজের কথা কেন বলছি? আত্মীয়-স্বজন পরিবারের মানুষগুলো তাকে ছাড়া চলতে পারত না। প্রতিটা কাজে কর্মে তার সাহায্য সহযোগিতা নিয়ে চলত।
আজ সে প্রবাসী অর্থের অভাবে নিজের সুচিকিৎসা করতে পারছে না।
যে প্রবাসী দুই হাতে ইনকাম করেছে, সমাজের পরিবারের মানুষের সাহায্য সহযোগিতা করেছে। কিন্ত আজ নিজের বেলায় কোন সাহায্য সহযোগিতা পাচ্ছে না সমাজ এবং পরিবার আত্মীয়-স্বজন থেকে। সেই প্রবাসীর করুণভাবে জীবন কাটছে। বহু বছর প্রবাসে কাটিয়ে দেশে ফিরে এসেছেন বছরখানেক চলছে।
এরইমধ্যে ওই প্রবাসী শরীরের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে শুরু করেছে।প্রবাসে থাকা অবস্থায় প্রবাসী ঐ দেশের বিভিন্ন দালানকোঠার রংগের কাজ করতেন। রঙ্গে যে মেডিসিন থাকে,সেই মেডিসিন এর প্রভাব হয়তো শরীরে পড়েছে। তাই তার বিভিন্ন সময় মাথায় ব্যথা এবং আরো শারীরিক অনেক সমস্যা দেখা দিতে শুরু করেছিল।
বিভিন্ন ডাক্তার দেখায় কিন্তু কোন ডাক্তারি তার রোগ ধরতে পারেনি। ডাক্তার দেখাতে দেখাতে আর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে করতে কয়েক বছর কাটিয়ে দিয়েছিল।কিন্তু কোন কোল-কিনারা পায়নি।আস্তে আস্তে প্রবাসী মাথায় তীব্র আকারের ব্যথা শুরু হয়।তার এই কষ্ট শুনে তার একজন পরিচিত বন্ধু প্রবাস থেকে জানাই দেশের বাইরে গিয়ে চিকিৎসা করানোর জন্য। প্রবাসী ওই ভাইয়ের কথা শুনে ঠিকই চিকিৎসা করানোর জন্য ভারতে চলে যায়।
ভারতে যাওয়ার পরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ধরা পড়ে ব্রেন টিউমার।এই কথা শুনে প্রবাসীর চোখে মুখে অন্ধকার দেখতে থাকে।দেশে ফিরে চিকিৎসা করতে চেয়েছিলেন, তাই টিউমারের জন্য অনেক চিকিতসা করেছেন। কিন্তুু কোন লাভ হয়নি,বরঞ্চ তার যত সহায়-সম্বল ছিল সব বিক্রি করে চিকিৎসা করা হয়েছে।কিন্তু চিকিৎসার ফলাফল ছিল নিতান্তই খুবই খারাপ।
কারণ টিউমার থেকে ক্যান্সারে রূপান্তরিত হয়েছে। আর এদিকে তার এই চিকিৎসা করার জন্য কোন অর্থ সম্বল বলতে কিছুই ছিল না। আস্তে আস্তে তার অবস্থা অবনতি হতে লাগলো অর্থের দিক দিয়ে যেমন শরীরের দিক দিয়েও তেমন।
তার স্ত্রীর জমানো অর্থ আর কিছু অলংকার বিক্রি করে কোনরকমে তার থেরাপি দিচ্ছে।কিন্তু দুইটা থেরাপি দেওয়ার পরে আর থেরাপি দেওয়া সম্ভব হচ্ছিল না টাকার অভাবে। তখন সমাজের মানুষগুলোর কাছে আত্মীয়স্বজনের কাছে হাত পেতে সাহায্য চেয়েছিল কেউ সাহায্য করতে রাজি হয়নি।
এখন প্রবাসীকে তার সমাজের মানুষ আত্মীয়-স্বজন সাহায্য না করলে কি হবে।প্রবাসে থাকা অবস্থায় তার বন্ধুরা প্রতিমাসে বিভিন্ন মানুষের থেকে অর্থ সাহায্য নিয়ে এ প্রবাসীকে সাহায্য করে থেরাপি দেওয়ার জন্য। এখন কোন রকমে বেঁচে আছে প্রবাসী বন্ধুদের সাহায্য সহযোগিতায়।
তাইতো প্রবাসী টি আক্ষেপ করে বলে জীবনে যাদেরকে সাহায্য সহযোগিতা করছি, তাদের থেকে এক বিন্দু পরিমাণ সাহায্য-সহযোগিতা পায়নি। বরঞ্চ তারা আমাকে মনে করে তাদের কাছে সাহায্য চাইবো। তাই আমাকে দেখলে এড়িয়ে চলে।কোন কষ্ট লাগে না আমি নিজেকে সবসময় বুঝায় আমি মানুষের উপকার করেছি।
আমার উপকার হয়তো আল্লাহ করবে, হয়তো আমি আর বেশি দিন বাঁচবো না।যাদেরকে সাহায্য সহযোগিতা করেছি তাদের কথা সারা জীবন মনে থাকবে এবং তারা যে আমাকে না আমার টাকার জন্য সম্মান করতো মূল্যায়ন করত সে জিনিসটা এখন বুঝতে পেরেছি।
বুঝতে অনেক সময় লেগেছে সব হারিয়ে।
সত্যি প্রবাসী ভাইটি বলেছে, টাকার জন্য এখন কার সম্পর্ক গুলো টিকে আছে। টাকা থাকবে তো আপনার সম্পর্ক ভালো থাকবে।
এই লেখাটি বাস্তব জীবন থেকে নেওয়া।ধন্যবাদ,
এ জীবনে টাকাই সবকিছু, এটা বাংলাদেশী সমাজের একটি ওপেন সিক্রেট, টাকা না থাকলে মানুষের মূল্য কমে যায়,এই অনুভূতিটা নিদারুণ সত্য কথা,অভিজ্ঞতালব্ধ উপলব্ধি, ধন্যবাদ, লেখাটি পছন্দ হয়েছে সত্যিই,বিশেষ করে বাস্তবধর্মী গুনের জন্য।👍
ধন্যবাদ আমার লেখাটি আপনার ভালোলাগার জন্য,তবে এটাই বাস্তব আমাদের সমাজে।