বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস-‌বিসিএস

in BDCommunity3 years ago

বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস এর শর্ট ফর্ম হলো বিসিএস (BCS). এটা হল বাংলাদেশ সরকারের সিভিল সার্ভিস। বিসিএস এর ক্যাডার সংখ্যা মোট ২৬ টি। প্রায় প্রতি বছর বাংলাদেশ বিসিএস পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। তবে যেহেতু এটা সরকারি সিভিল সার্ভিস সেহেতু বাংলাদেশের সকল শিক্ষার্থীর আসা এই চাকরি। এটাকে বাংলাদেশের সোনার হরিণ বলা হয়।

গতকাল ৪০ তম বিসিএস পরীক্ষার ফলাফল দেয়া হয়েছে। বিসিএস পরীক্ষার কিছু ধাপ রয়েছে। এই বিসিএস পরীক্ষাটির প্রিলি অনুষ্ঠিত হয়েছিল 2018 সালে। তারপর ২০২১ সালে করোনার জন্য সবকিছু বন্ধ ছিল। অর্থাৎ প্রায় ৩-৪ বছর লাগে বিসিএস পরীক্ষার ফলাফল হাতে পেতে। তবে যাই হোক এই সময় শিক্ষার্থীরা অন্যান্য চাকরির ব্যবস্থা করে, তারা কোনো চাকরি পেলে সেটায় ঢুকে পড়ে। পরবর্তী তারা বিসিএসে উত্তীর্ণ হলে আবার এটায় ফেরত আসে। মূলত বাংলাদেশের অধিকাংশ শিক্ষার্থী লক্ষ্য বিসিএস ক্যাডার হওয়া অথবা সরকারি চাকরি পাওয়া। কেননা এটার মাধ্যমে বাংলাদেশের একটি লেভেল চিন্তা করা হয়।

এবার আসি ৪০ তম বিসিএস পরীক্ষা ২০১৮ এর সংক্ষিপ্ত ফলাফল।
ফলাফলে বিভিন্ন ক্যাডারে ১ হাজার ৯৬৩ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়। প্রশাসন ক্যাডারে ২৪৫, পুলিশে ৭২, পররাষ্ট্রে ২৫, কৃষিতে ২৫০, শুল্ক ও আবগারিতে ৭২, সহকারী সার্জন ১১২ ও পশুসম্পদে ১২৭ জনসহ মোট ১ হাজার ৯৬৩ জনকে বিভিন্ন ক্যাডারে সুপারিশ করা হয়েছে। এরা মূলত বিসিএস ক্যাডার নামে পরিচিত। এছাড়া ১৮৬৬ জন নন-ক্যাডারের নাম ও দেয়া হয় ‌।
এতে আবেদন করেছিলেন ৪ লাখ ১২ হাজার ৫৩২ প্রার্থী। এর মধ্যে পরীক্ষা দিয়েছেন ৩ লাখ ২৭ হাজার জন। তাদের মধ্যে প্রিলিতে উত্তীর্ণ হন ২০ হাজার ২৭৭ জন।

IMG20220331211613.jpg

এটা ছিল একটি সংক্ষিপ্ত পরিসংখ্যান। এখন আসি মুল প্রসঙ্গে । আপনারা জানেন বাংলাদেশ মানুষ তিন ধরনের পড়াশোনা করে থাকে। ডাক্তারি,প্রকৌশলী অথবা কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে। এই যে গতকাল রেজাল্ট দিল এর মধ্যে ২৬ টি ক্যাডার এর মধ্যে ১৮টি ক্যাডারে প্রথম স্থান অর্জন করেছে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। প্রায় ৬০০ জন শিক্ষার্থীর বিভিন্ন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ক্যাডার হয়েছে। এখন কথা হল এরা কি বিসিএস ক্যাডার হওয়ার জন্য প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হয়েছিল? তাদের জীবনের লক্ষ্য কি সিভিল সার্ভিসে যোগ দান করা? না তারা দেশের উন্নয়নে কাজ করবে, স্থাপত্যবিদ্যায় বিভিন্ন রিসার্চের কাজে।হ্যাঁ যারা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় পড়ে এবং ডাক্তারিতে পড়াশোনা করতেছে তারা অত্যন্ত মেধাবী। তবে এটা তো তাদের ক্ষেত্র না এটা হল যারা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে তাদের ক্ষেত্র। আগে অবশ্য প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিসিএস ক্যাডার হত কিন্তু খুবই নগণ্য। কিন্তু বর্তমানে সেটা অত্যাধিক বেড়ে গিয়েছে। ১৯৬৩ জনের মধ্যে ৮০০ জন শিক্ষা ক্যাডারে উত্তীর্ণ হয়েছে।তো সে ক্ষেত্রে এই ৮০০ জন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা ডাক্তারি থেকে হওয়া সম্ভব নয়। অর্থাৎ বাকি ১১৬৩ জনের মধ্যে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৬০০জন হয়ে গিয়েছে এবং বাকি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাত্র ৫৬৩ জন অন্যান্য ক্যাডারে। বিষয়টা কেমন লাগে না?

খামাখা সরকারের এতো টাকা ব্যয় করে কি লাভ? যদি প্রকৌশল ও ডাক্তাররা সাধারণ ক্যাডারে আসে..! ৪০তম বিসিএস পরীক্ষায় প্রশাসনে প্রথম স্থান (কুয়েট), পুলিশে প্রথম স্থান (কুয়েট), পররাষ্ট্রে প্রথম স্থান (বুয়েট),কাষ্টমসে প্রথম স্থান (বুয়েট), ট্যাক্সে প্রথম স্থান (বুয়েট)।

বুয়েট, চুয়েট, কুয়েটে যারা পড়েন, তাঁরা ছাত্র হিসেবে মেধাবী। নিশ্চয়ই তাঁরা এই পেশাগুলোতেও ভালো করবেন। কিন্তু যে শ্রম ও সময় দিয়ে তাঁরা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়েছিলেন, সেই বিদ্যা আর তাঁদের পেশাজীবনে সরাসরি প্রয়োগ হবে না। শ্রম, সময় ও রিসোর্সের এ এক অপচয়।

আমার মনে হয় এইচএসসি পরীক্ষার পর বিভিন্ন সামরিক বাহিনীতে চাকরি ব্যবস্থা করা কিংবা বিভিন্ন সরকারি চাকরিতে ঢোকার ব্যবস্থা খুবই ভালো এবং সেখান থেকেই তাদের উচিত গ্রাজুয়েশন শেষ করা । আরো অনেক ব্যবস্থা রয়েছে।যদি এইচএহসির পর পরই একজন শিক্ষার্থীকে চাকরির ক্ষেত্রে নিয়োজিত করা যায় তাহলে দেশের উন্নয়ন আরো বেশি হবে। সে ক্ষেত্রে আর কষ্ট করে গবেষণার ক্ষেত্রে সরকারের এত টাকা খরচ করতে হবে না ,একজন শিক্ষার্থীর পিছনে।আমরা সকলে জানি একজন শিক্ষার্থীর পিছনে প্রতিবছর প্রায় লাখ লাখ টাকা সরকারের খরচ হয়। পাশাপাশি বাবা-মায়ের খরচ তো আছেই।চাইলে আরো অনেক কিছু করা সম্ভব ফ্রিল্যান্সিং করা সম্ভব, উদ্যোক্তা হওয়া সম্ভব ।তবে আমরা কি করছি? আমরা সরকারি চাকরির বিশদ দৌড়াচ্ছি। এমনকি আমি নিজেও এখন অনার্স শেষ করব ,এর পরে চাকরির জন্য দৌড়াদৌড়ি করব।
একজন শিক্ষার্থী যখন অনার্স শেষ করে,তখন যদি তাকে জিজ্ঞেস করা হয় তুমি এখন কি করছো?সেই ব্যক্তি উত্তর দেয় বিসিএস এর প্রিপারেশন নিচ্ছি। এ ছাড়া আর কেউ কোন উত্তর দেয় না। আমরা অন্যান্য দেশ থেকে অনেক পিছিয়ে আছি। কারণ আমরা আমাদের মেধাটাকে সঠিকভাবে ব্যবহার করছি না। আমাদের উচিত আমাদের মেয়েটাকে সঠিক কাজে ব্যবহার করা। এবং সকলের উচিত দেশের জন্য কোনটা ভালো, নিজের জন্য কোনটা ভালো ,সেই বিষয়ে এগিয়ে যাও।
তবেই দেশ এবং জাতি উন্নতি সাধন হবে।

Sort:  

Hi @minhaz007, your post has been upvoted by @bdcommunity courtesy of @rehan12!


Support us by voting as a Hive Witness and/or by delegating HIVE POWER.

JOIN US ON