একটা ভাঙ্গা কফিন আর মিজানের ছিন্নবিচ্ছিন্ন দেহ! (পর্ব ৩)

in BDCommunity3 years ago

হেলোও,আসসালামু আলাইকুম।সবাই কেমন আছেন?


আজকে আমি আপনাদের সাথে আমার লেখা একটি গল্প শেয়ার করছি।আশা করছি সবাই পড়বেন,


source


এরপর রুমা কাঁপা কাঁপা হাতে পাশে থাকা বইয়ের র‍্যাকটা ধরে দাড়ালো। রুমা স্বজ্ঞানে ছিলোনা , তার বারবার মনে হতে লাগলো ওই কফিনের ভেতরের কোনো অজানা শক্তি তাকে ধীরে ধীরে নিজের দিকে টানছে।খুব ধীরে ধীরে রুমার কানের পাশে কেও বলছে " মা,মা! ওমা, আসো!আমার কাছে আসো একটু কাছে আসো।" রুমাও কেমন যেনো মন্ত্রমুগ্ধের মতো সামনের দিকে আগাতে লাগলো।হঠাৎ নাজিবা এসে রুমা ম্যাডাম বলে রুমাকে হেচকা টান মেরে পাশের সোফায় ফেলে দিলো আর সেই সাথে নাজিবার হাতে থাকা কর্ণ সুপ্যের বাটিটাও হাত থেকে পরে ঝন ঝন শব্দ করে ভেঙ্গে গেলো আর পুরো স্যুপটা মেঝেতে পরে গেলো।রুমা ওই অবস্থাতেই বেহুঁশ হয়ে গেলো।নাজিবা তাড়াতাড়ি আলতাফকে ফোন করলো,আলতাফ প্রায় ত্রিশ মিনিট পর এম্বুল্যান্স নিয়ে এসে রুমাকে আবার হসপিটালে নিয়ে গিয়ে এডমিট করালো।ডাক্তার সিটিস্ক্যান করালো সাথে আরো না না পরীক্ষা দিলো।সেসবের রিপোর্ট আসতে আসতে প্রায় দুদিন লেগে গেলো।দুদিনে রুমা এক সেকেন্ডের জন্যও চোখ মেলে তাকায়নি কারণ তাকে কড়া ঘুমের ওষুধের ইঞ্জেকশন দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়েছে।দুই দিন পর সব রিপোর্ট আসলে ডাক্তার বললো যে, " তেমন কোনো সমস্যা নেই।তবে রুমা খুব বড় শক পেয়েছে যার কারণে রুমা খুব বেশি হেলুসিনেট করছে। " এরপর ডাক্তার কিছু ওষুধ দিয়ে রুমাকে ছেড়ে দিলো আর বললো তাকে যেনো চোখে চোখে রাখা হয়।আসলে নার্স নাজিবা রুমাকে টান দিয়েছিলো কারণ রুমা চোখ মেলা অবস্থাতেই কোনো পলক ফেলা ছাড়াই সামনের দিকে তাকিয়ে খোলা বারান্দার দিকে চলে যাচ্ছিলো আর দুই কদম দিলেই সাত তালা থেকে একদম সোজা নিচে পরে যেতো কারণ রুমার বারান্দায় কোনো রেলিং নেই,ছোট করে একটা বিট আছে আর এক কোণে কিছু গাছপালা।এরপর রুমাকে বাসায় আনা হলো।সব ঠিকঠাক করে রাতের একটার দিকে আলতাফ বিছানায় শুলো।শুয়ে ভাবতে লাগলো কি থেকে কি হলে গেলো তার জীবনে!সে আরো ভাবতে লাগলো যদি মিজান পুকুরের পানিতে পরে ডুবেই যায় তবে তার কাটা হাত কেনো শুধু পাওয়া গেলো?শরীরের অন্য অংশ কই?গ্রামের পুলিশরা অবশ্য ভয়ে কোনো তদন্ত না করেই বলে দিয়েছে যে হয়তো পাশের বন থেকে কোনো মাংস খেকো জন্তুজানোয়ার এর কাজ এটা। তারা হয়তো সম্পূর্ণ শরীরটাই খেয়ে ফেলেছে আর বাকি হাতটা হয়তো মানুষের আনাগোণার টের পেয়ে পুকুরে ফেলে দিয়ে চলে গেছে।কিন্তু আলতাফের মনে কেনো যেনো ঠিক সায় দিচ্ছিলোনা তবে আলতাফ আর কথা বাড়ায়নি কারণ জানেই অজপাড়াগাঁ তাই খুব একটা সুবিধা করা যাবেনা।এসব ভাবতে ভাবতেই মনের অজান্তেই আলতাফ এর চোখ বেয়ে দু ফোটা জল গড়িয়ে পড়লো।খুব আদরের ছেলে ছিলো মিজান তাদের।বাবা মা এর চোখের মণি ছিলো ছেলেটা আর সেই ছেলের এমন দৃশ্য দেখে বাবা আলতাফ নিজেকে ঠিক রাখতে পারলেও মা রুমা নিজেকে আর ঠিক রাখতে পারেনি।আলতাফের সাজানো গোছানো সংসারটা কেমন নিমিষেই নষ্ট হয়ে গেলো।দুদিন আগের মতোই চলতে লাগলো,দুদিন পর হঠাৎ রুমা অনেকটা স্বাভাবিক আচরণ করতে লাগলো আর বললো মেয়ে মিনহাকে বাড়ি থেকে নিয়ে আসতে। আলতাফ ভাবলো হয়তো রুমা ছেলের শোক কাটিয়ে উঠছে আর শোক কাটাতেই মেয়েকে কাছে আনতে চাইছে তাই পরেরদিন ই দাদা মিনহাকে দিয়ে গেলো।এরপর সবকিছু ভালোই যাচ্ছিলো।নার্স নাজিবাকেও এক সময় বিদায় করা হলো কিন্তু আলতাফ কয়েকদিন ধরে খেয়াল করতে লাগলো মিনহা কেমন যেনো দুর্বল হয়ে যাচ্ছে দিন দিন।পরক্ষণেই ভাবলো হয়তো এমনিতেই।আসলে মিনহার দুর্বল হয়ে যাওয়ার কারণ ছিলো অন্য কিছু!!
রুমাই আস্তে আস্তে করে মিনহার ঘাড়ে কামড় বসিয়ে রক্ত চুষে খেয়ে ফেলছিলো।ব্যাপারটা রুমা নিজের অজান্তেই করছিলো।ব্যাপারটা ঘটেও খুব অদ্ভুত ভাবে।দুপুর একটার দিকে আলতাফ অফিসে থাকে আর সে সময় মিনহা ঘুমায় আর ঠিক ওই সময়েই হঠাৎ করে রুমার চোখে অসম্ভব ঘুম নেমে আসে আর তখন ই রুমা ঘুমেই উঠে দাঁড়িয়ে যায় আর নিজের মেয়ে মিনহার ঘাড়ের রক্ত চুষে চুষে খেতে থাকে।এরপর আবার রুমা মিনহার পাশেই শুয়ে ঘুমিয়ে যায়।এরপর স্বাভাবিক ভাবেই মিনহা,রুমা দুজনের ই ঘুম ভাঙ্গে এরপর স্বাভাবিক ভাবেই উঠে,খায়।
কিন্তু একদিন এক অদ্ভুত কিছু ঘটে গেলো রুমার চোখের সামনে। যা সে কল্পনাই করেনি!
রুমা দেখলো তার চোখের সামনেই তার মেয়ে মিনহা নিজের রক্ত .......

চলবে.......


ধন্যবাদ গল্পটি পড়ার জন্য।গল্পটির সামনে পাবেন আরো নতুন নতুন রহস্য।রহস্যগুলো জানতে চাইলে অবশ্যই শেষ পর্যন্ত পড়তে হবে।আর অবশ্যই আপনাদের মতামত জানাবেন। ধন্যবাদ সকলকে পোস্টটি বা গল্পটি পড়ার জন্য।

লিখাঃ নূসুরা নূর।