একটা ভাঙ্গা কফিন আর মিজানের ছিন্নবিচ্ছিন্ন দেহ! (পর্ব ৬)

in BDCommunity3 years ago

হেলোও,আসসালামু আলাইকুম।সবাই কেমন আছেন?


আজকে আমি আপনাদের সাথে আমার লেখা একটি গল্প শেয়ার করছি।গল্পটির আজকে ষষ্ঠ পর্ব চলছে।এর আগের পর্ব গুলো আমার এই আইডিতেই পেয়ে যাবেন।আশা করছি সবাই পড়বেন,


source


রুমা দেখলো তার একদম পাশেই শত শত লোকের বুক টান দিয়ে ছিড়ে কদাকার প্রাণীগুলো রক্ত মাংস খুবলে খুবলে খাচ্ছে।রুমা দেখেই মা বলে জোরে চিৎকার করে উঠলো!তার ইচ্ছা করছিলো কোনো না কোনো ভাবে নিজের মস্তিষ্ককে এসব চিন্তা থেকে দূরে রাখতে তাই সে যতই চাচ্ছিলো এসব ভুলে যাক বা ভবতে চাচ্ছে এমন কিছুই ঘটছেনা তার আশেপাশে কিন্তু ততই তার এসবের প্রতিচ্ছবি বা তাদের খাবারের শব্দ আরো বেশি করে আসতে লাগলো।এক সময় সে ভালভাবে খেয়াল করে চারপাশে তাকালো।সে চারপাশে তাকিয়ে দেখলে যে সে একটা বড় রুমের মতো একটা রুমের মেঝেতে শুয়ে আছে।আর তার চারপাশের নেকড়ে মানব বা অদ্ভুত প্রাণীগুলো মানুষের মাংস খাচ্ছে তাও আবার মনে হচ্ছে তারা কয়েক শত বছর বা কয়েক হাজার হাজার বছর খাবার খায়নি তাই তারা এভাবে পাগলের মতো খাচ্ছে।হঠাৎ একটা খুব সুন্দর একদম পরির মতো মেয়ে রুমার সামনে এসে দাঁড়ালো। মেয়েটার পরনে সাদা ধবধবে একটা মসলিন কাপড়ের মতো গাউন পরা,মাথায় অনেক বড় একটা মুকুট,মাথার চুলগুলো ফ্লোরের একটু উপরে, ঠোট গুলো রক্তের মতো লাল আর গায়ের রঙ একদম চোখ ঝলসানো ফর্সা।সে মেয়েটি এসে রুমাকে আরেকটা রুমে নিয়ে গেলো।রুমার মনে হলো এই রুমটি মোটামোটি আগের রুমের তুলনায় ঠিক ই আছে।এই রুমটা বিশাল বড় আর প্রত্যেকটা দেয়ালে দেয়ালে ওই নেকড়ে মানবের হাড় ঝুলানো।আগের সব বিশ্রি সব কিছু দেখতে দেখতে নেকড়ে হাড় ঝুলানোকে তার এখন কিছুই মনে হচ্ছেনা আর। উলটো তার একটু ভালোই লাগছে।বরং হাফ ছেড়ে বাচলো যেনো। সামনে তাকাতেই রুমা আৎকে উঠলো কারণ খুব বড় ভয়ংকর একটা নেকড়ে মানব অনেক বড় একটা সোফার মতো জায়গায় বসে আছে।রুমা কে যে পরিটা নিয়ে আসলো সেও গিয়ে নেকড়ে মানবের পাশে গিয়ে বসলো। ওই নেকড়ে মানবটা রুমা কে বললো, " আমি এখানকার গড, বলতে পারো এই দুনিয়াটা সম্পূর্ণ আমার। তবে আমার উপরেও কেও আছে কিন্তু তা অন্য ব্যাপার,তোমার না জানলেও চলবে এসব।এখন মন দিয়ে শুনো আমার কথা, তোমাকে কিছু কাজ করতে হবে।আগে তো বলাই হয়েছে যে কিছু কাজ করলেই তোমাকে,মিজানকে সহ তোমার পুরো পরিবারকেই ছেড়ে দেওয়া হবে। তোমার ১ম কাজ হলো এখানকার খাবারের সাথে তোমাকে অভ্যস্ত হতে হবে কারণ তোমাকে প্রতিদিন অন্য খাবার জোগাড় করে দেওয়ার সময় বা ইচ্ছা কোনোটাই আমাদের নেই।তবে তুমি চিন্তা করোনা, তোমাকে মানব মাংস বা তুমি এখন পর্যন্ত যা যা দেখেছ তা খেতে দেওয়া হবেনা। তোমাকে অন্য খাবার দেওয়া হবে।তোমার দ্বিতীয় কাজ, এখানে একটা বড় গাছ আছে ওই গাছের কাছে আমাদের সমাজের কেও যেতে পারেনা ওই গাছের একটা শিকড় তোমাকে এনে দিতে হবে। তৃতীয় কাজ, ওই শিকড় থেকে একটা গাছের চারা করতে হবে কারণ তাহলে ওই চারাটা আমরা ধরতে পারবো আর আগের গাছের সব গুণাগুণ ও অক্ষুণ্ণ থাকবে।চতুর্থ কাজ,আমাদের এখানে একটা রক্তের সাগর আছে ওখানের নিচে সব মানুষের লাশ ওই লাশের ভিতর একটা মেয়ের হাতে খুব সুন্দর একটা আংটি আছে ওটা আনতে হবে।পঞ্চম কাজ,এইযে আমার রাণী। আমার রাণীর চুলে বিণুনি করে দিতে হবে। হয়তো ভাবছ এটা খুব সহজ কাজ। কিন্তু আমার রাণীর চুল আগুনের চেয়েও গরম,লাভার মতো নরম।তোমার ষষ্ঠ কাজ হলো নিজের পা আগুনে পুড়িয়ে তার রক্ত আমাকে দেওয়া আর সর্বশেষ ও ৭ম কাজ হলো এখানে একটা ভাঙ্গা কফিন আছে ওই কফিনের ভেতর আছে তোমার ছেলে মিজানের ছিন্নবিচ্ছিন্ন দেহ আর ওই দেহের সব টুকরো তোমাকে নিজের হাতে সব এক করতে হবে আর ওই কফিনের ভিতর আরো একজন আছে।সে হলো এই রাজ্যের সবচেয়ে খারাপ প্রানী।তার হাত থেকে তোমার ছেলে মিজানের দেহের সব অংশ নিয়ে আসতে হবে কিন্তু ওই কফিন থেকে বের হয়ে তোমাকে অবশ্যই কফিনকে বন্ধ করে দিতে হবে। সে কাজটিও সহজ নয় তবে এখনই বলছিনা অন্তিম কাজের সব নিয়ম তোমাকে অন্তিমেই জানানো হবে আর তারপর আমি তোমার ছেলে মিজানকে সম্পূর্ণ আগের মতো করে দিবো আর তোমাদের মুক্তিও দিয়ে দিবো।এসব শুনে রুমা শুধু নিচের দিকে তাকিয়ে নিঃশব্দে টপটপ করে চোখের পানি ফেলতে লাগলো।কারণ সে বুঝে গেছে তাকে যেসব কাজ দিয়েছে তা মৃত্যুর চেয়েও ভয়ংকর আর অসম্ভবের চেয়ে আরো বেশি।তারপর ওই গড আর তার সুন্দরি রানী হাওয়ায় মিলিয়ে গেলো। আর রুমটাও সেকেন্ডের মধ্যে বিলিন হয়ে গেলো।এক সেকেন্ড আগেও তার পা একটা রুমের মেঝেতে ছিলো কিন্তু ঠিক পলক ফেলার আগেই সে এখন একটা জঙ্গলে দাঁড়িয়ে আছে।হঠাৎ সে খেয়াল করলো তার সামনে একটা খাবারের টেবিল আনা আর একটা চেয়ার আনা হলো,মস্ত বড় টেবিল।আর তাতে দেওয়া হলো এক প্লেট খাবার।খাবারটা দেখে সে একটু অবাক ই হলো কারণ খাবারের প্লেটে আছে ভাত।সাধারণ মানুষরা যেমন সাদা ভাত খায় সেই ভাত।সে মনে মনে একটু হলেও স্বস্তি পেলো কারণ সে খুব ভয়ে আর বিধ্বস্ত হয়ে ছিলো এই ভেবেই যে তাকে যদি কোনো পোকামাকড় খেতে দেওয়া হয় তাহলে কি হবে।সে পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একটা নেকড়ের কাছে একটু পানি চাইলো যাতে একটু চোখ,মুখ পানি দিতে পারে।কিন্তু তাকে যা দেওয়া হলো তা সে একেবারেই আশা করেনি।সে ভেবেছিলো হয়তো পানি অন্তত স্বাভাবিক হবে কিন্তু পানির বদলে তাকে দেওয়া হলো.....

চলবে....


ধন্যবাদ গল্পটি পড়ার জন্য।গল্পটির সামনে পাবেন আরো নতুন নতুন রহস্য।রহস্যগুলো জানতে চাইলে অবশ্যই শেষ পর্যন্ত পড়তে হবে।আর অবশ্যই আপনাদের মতামত জানাবেন। ধন্যবাদ সকলকে পোস্টটি বা গল্পটি পড়ার জন্য।

লিখাঃ নূসুরা নূর।


Sort:  

Congratulations @nusuranur! You have completed the following achievement on the Hive blockchain and have been rewarded with new badge(s) :

You have been a buzzy bee and published a post every day of the week.

You can view your badges on your board and compare yourself to others in the Ranking
If you no longer want to receive notifications, reply to this comment with the word STOP

To support your work, I also upvoted your post!