হেলোও,আসসালামু আলাইকুম।সবাই কেমন আছেন?
আজ আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো আমার করা আমারই গ্রামের কিছু ফটোগ্রাফী।আমি ফটোগ্রাফার নই তবে শখের বসে টুকটাক করা।তাই আপনাদের সামনে তুলে ধরছি আর সেই সাথে পাবেন ছবিগুলোর কিছু কাহিনীও ।আশা করি সবার তেমন একটা মন্দ লাগবেনা।
আমাদের ছোট গ্রামটি সঙ্খ নদীর তীরে অবস্থিত।এক কালে এই সঙ্খ নদী অনেক বড় ছিলো দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ দুটোতেই,অনেক বিশাল এই নদী এখন আস্তে আস্তে ছোট হয়ে যাচ্ছে কারণ লোকজন একেতো মাটি কাটছে আর অপরদিকে নদীর পার ঘেষেই ফসলী জমী করছে যার কারণে নদীটা ধীরে ধীরে দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের দিক দিয়ে তার বিশালতা হারিয়ে ফেলছে।এই সঙ্খ নদীর উপর চলে গেছে এক লম্বা ব্রিজ আর ওই ব্রিজ পেরুলেই আমাদের সে গ্রাম।ছোট্ট সে গ্রামের মানুষ বা প্রকৃতি দুই ই খুব সুন্দর।
এক দাদার বাড়ির আরেকটু দূরে গিয়ে এই ছবিটি তুললাম।এখানে যে বাড়িগুলো দেখতে পাচ্ছেন এই বাড়িগুলো হলো সবকটা আমার দাদাদের ভাইদের তাদের ছেলেমেয়েরা অর্থাৎ আমার আপন বা দূরসম্পর্কের চাচারা সবাই দালান তুলেছেন।এখানেও মাঝেমধ্যে এসে থাকেন।কি মনোরম দৃশ্য তাইনা বলুন?দেখেই যেনো চোখ জুড়িয়ে যায়!এই প্রত্যেকটা বাড়ি,রাস্তা, গাছগুলোও আমার খুব খুব আপন।প্রত্যেকটি বাড়ির মানুষগুলো আমায় খুব স্নেহ করে।এই ছবিটার তুলার ঠিক দশ কি পনেরো মিনিট আগেই বৃষ্টি থামলো তাই চারিদিকটা এমন নিরব,ঠান্ডা ও হাল্কা অন্ধকার।মেঘ এখনো পুরোপুরি কাটেনি, বোধহয় আরো কয়েক পসলা বৃষ্টি পরে তবেই মেঘেরে মন খারাপ কমবে আর ওই কালোর ঘনঘটা ও উবে যাবে।আমি কিন্তু তাই ই অপেক্ষা করছি কারণ বৃষ্টি দিয়ে রাস্তাঘাটে হাটা আমার জন্য খুবই বিচ্ছিরি এক ব্যাপার।কারণ আমি একদম ই কাঁদা-মাটিতে সুন্দরভাবে হাঁটতে পারিনা।আমার আবার রেকর্ড আছে এই কাঁদায় আছাড় খাওয়ার।আমি অনেক চেষ্টা করি ধীরে সুস্থে হাঁটার।কিন্তু কোনোভাবেই যেনো সম্ভব হয়না। সে এক কষ্টের কথা না হয় বাদ ই দি।
এইযে দেখছেন দোচালা ঘর এই ঘরটি আমাদের বাড়ির পাশেই এক দাদার বাড়ি।বাড়িটির ছবি তুলার সময় এক মজার ব্যাপার ঘটল,বলছি শুনুন।যখন আমি বাড়ির ছবি তুলছিলাম ঠিক সেই সময় ই পেছন থেকে ওই বাড়ির মালিক অর্থাৎ আমার দাদাটি আসলো।খুবই বয়স্ক উনি,বয়স বোধহয় ১১০ এর কাছাকাছি।কুজো হয়ে লাঠিতে ভর দিয়ে আস্তে আস্তে আমার গিয়ে এগিয়ে হেসে এক গাল হেসে বললেন, " কি মা?অফিসারের বাড়ির ছবি তুলছিস?কেও দেখতে চাইলো নাকি?তুল তুল,একটু ভালো করে তুলে আজকাল এমন বাড়ি কি আর দেখা যায় নাকি!সব তো তোদের ওই শহরের মতো প্রাণ ছাড়া বাড়ি। কি করে যে তোদের এসব ভালো লাগে কে জানে বাবা!তোর বাপ ও তো একদম এই রকম।ওই একটা তুলে রেখেছে ঘর।নেই দেখার ছিরি, নেই ঘরের ছিরি।" আমি ওসব শুনে শুধু মুচকি হেসে বললাম, " না গো দাদা এমনিই ছবি তুলছি,তোমার বাড়ির মতো কারো বাড়ি কি আর আছে নাকি!তাই আরকি!"
আসলে সবাই নিশ্চয় ভাবছেন গ্রামের ১২০ বছরের বৃদ্ধ কি আর এভাবে শুদ্ধ ভাষায় কথা বলতে পারে!নির্ঘাত মেয়েটা বানিয়ে বানিয়ে লিখেছে।আসলে কিন্তু তা না, উনি এক কাল অনেক বড় অফিসার ছিলেন, রিটায়ার্ড করার ঠিক দুই বছর আগেই পায়ে গুলি খায় আর চাকরিতে জয়েন দিতে পারেনি।এখনো মুখের ভাষা শক্ত।বয়স ১২০ হলেও কথাবার্তা বা চালচলনে তিনি তার সে আগেকার ভঙ্গিমা বা রাজকীয়তা বজিয়ে রেখেছেন।দাদার চার ছেলেমেয়ে তারাও কেও না কেও ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার বা ব্যবসায়ী। কিন্তু বাবার সামনে আজ পর্যন্ত এক অক্ষর উলটো জবাব কোনো ছেলেমেয়ে দেয়নি এমনটাই কথিত আমাদের গ্রামে।
এরপর এইযেই দেখুন হাসগুলো।এই হাসগুলোর এক মজার ব্যাপার আছে।এই হাসগুলো নাকি একার কারোনা। বুঝলেন না তো?বুঝিয়ে বলছি।এই হাসগুলো আমাদের বাড়ির ই তবে কারো মালিকানাধীন নয়।আমার এক দাদা নাকি এগুলো মরার আগে কিনে দিয়ে গিয়েছিলো আর বলেছিলো এগুলা আমি এই বাড়িতেই কিনে দিয়ে যাচ্ছি,সবাই খাওয়াবি।আর কখনো এগুলোকে জবাই করে খেয়ে ফেলবিনা,বাড়ির মসজিদেই দান করে দিবে আর ডিম দিলে ওগুলো আমার নাতিনাতনিদের খাওয়াবি।এই হলো আসল কাহিনী।আমি আবার এদের কাছ থেকে একটু দূরে দূরেই থাকি কারণ হাঁস এর মাথা গরম হলে নাকি তারা খুব জোরে কামড় দেয়। এটা কি সত্যি?আমি কিন্তু জানিনা, সবাই বলে তাই আমি একটু দূরত্ব বজায় রাখি।আর ওই দূরত্ব বজায় রেখেই আমি ছবিটা তুলল্লাম?কেমন হয়েছে বলবেন।
আজকের জন্য এখানেই আমার পোস্টটি শেষ করছি।আশা করি সবার ভালো লেগেছে।সবাই ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন এবং সাবধানে থাকবেন।ধন্যবাদ সকলকে।
লিখনিঃ নূসুরা নূর
Beautiful images
thank you.
Congratulations @nusuranur! You have completed the following achievement on the Hive blockchain and have been rewarded with new badge(s) :
Your next target is to reach 50 posts.
You can view your badges on your board and compare yourself to others in the Ranking
If you no longer want to receive notifications, reply to this comment with the word
STOP
To support your work, I also upvoted your post!