লেখক বনাম পাঠক

in BDCommunity4 years ago

জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে লেখকের সংখ্যাও ঢেড় বৃদ্ধি পেয়েছে। বৃদ্ধি পেয়েছে পাঠকের সংখ্যা। এটা স্বাভাবিক। লেখকের সংখ্যা যে হারে বেড়েছে পাঠক সংখ্যা কি সেই একই হারে বেড়েছে?

pexelsphoto851213.jpeg

pexelsphoto261970.jpeg

কোনো এক সময় ছিল যখন পাঠকে ভরপুর ছিল সাহিত্যাঙ্গন। লেখকের সংখ্যা ছিল খুবই নগণ্য। সাহিত্য ক্ষেত্র ছিল সুশৃঙ্খল। অতীতে লেখকের একটি বই পেতে পাঠককে দীর্ঘদিন অপেক্ষা করতে হতো। এখন অনায়াসে ঘরে বসেই একজন পাঠক বই হাতে পেয়ে যায়। পাঠক রাজ্যে যেন বইয়ের সমাহার।

প্রযুক্তির এই যুগে বিভিন্ন ধরনের সোশ্যাল মিডিয়া হওয়ায় মানুষের মাঝে লেখালেখির প্রবণতা জ্যামিতিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এটা অবশ্যই একটি ইতিবাচক দিক। মানুষের মনের কিছু না-বলা কথা বলে প্রকাশ করতে না পারলেও লেখার মাধ্যমে কিঞ্চিৎ প্রকাশ করার সুযোগ হতে বঞ্চিত হয় না। প্রযুক্তি এই সুযোগ করে দিয়েছে। তাই একজন স্মার্টফোন ব্যবহারকারী চাইলেই তার মনের কথা কিংবা অভিযোগ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নামক অভিযোগ বক্সে তুলে ধরেন। তারা কিন্তু সনদ প্রাপ্ত কোনো লেখক নয়।

প্রযুক্তির এ যুগে মানুষ একটা বিষয় পড়ার চেয়ে শুনতে এবং দেখতে বেশি পছন্দ করে। আমরা যখন একটা আর্টিকেল কিংবা কোনো গল্প পড়ি সেটা আমাদের মস্তিষ্কে এক ধরনের প্রতিকৃতি তৈরি করে। আমরা সেটা নিয়ে ভাবতে শুরু করি। এক্ষেত্রে যদি একটি বিষয়কে কেন্দ্র করে একটা আর্টিকেল লেখা এবং একটি ইউটিউব ভিডিও তৈরি করা হয়, তাহলে নিশ্চিতভাবে বলা যায়, ইউটিউব ভিউ'র সংখ্যা বেশি হবে। পাঠক সংখ্যা কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ হতে পারে এটি একটি।

পাঠক একটি অনুচ্ছেদ পড়ার পাশাপাশি বিনোদন খুঁজে। অনেক লেখক লেখায় সেই বিনোদন তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছেন। তাদের মধ্য অন্যতম হুমায়ুন আহমেদ। তার লেখাগুলো পড়া শুরু করলে পড়তেই ইচ্ছে করে। লেখকের লেখার প্রাণ খুঁজে পাওয়া যায়। যা লেখকের সৃষ্টি।

ভালো লেখক হতে হলে আপনাকে অবশ্যই ভালো পাঠক হতে হবে৷ তবে, অতিথি পাখির ন্যায় পাঠক হওয়া যাবে না৷ যেমনটা আমরা দেখি একুশে বইমেলায়। হঠাৎ করেই অনেক পাঠক দেখা যায়, যারা বই কিনতে হুড়মুড় খেয়ে পড়ে সেখানে। এই বই পড়ার অভ্যাসটা ধরে রাখতে পারে না অনেকেই।

সুন্দরভাবে লিখতে পারা এবং সুন্দর কণ্ঠে কথা বলা- এই দুটি গুণ। এই দুটি গুণের পেছনে অনেকেই ছুটে। এই গুণ দুটি আপনাকে অনেক কাজে সাহায্য করবে। অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাবে। তাই, মনের কথা প্রকাশ করতে লেখুন। মনের কোনে লুকিয়ে থাকা প্রতিটি কথা প্রকাশ হোক। লেখক-পাঠক তৈরি হোক জ্যামিতিক হারে। পাঠক তৈরি হলেই লেখকের লেখায় মূল্যায়ন হবে।

Image1

Image2