দিনটি ছিল শনিবারের দিন
আমি আমার কর্মের ক্ষেত্রে সাধারণত বাংলাদেশের যে কোন জেলায় আমাদের যেতে হয়। আমরা যখন জেলার বাইরে যাই তখন একটা আমরা গ্রুপে তৈরি হয়ে যায়। সাধারণত আট থেকে দশজন আমাদের গ্রুপের সদস্য থাকে। আমরা সবাই একসঙ্গে বাসে যায় এবং একসঙ্গে থাকি একসঙ্গে কাজ করি এবং একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করি। কাজ শেষে একসঙ্গে আমরা আবার নিজের জেলায় ফিরে আসি। সাধারণত আমরা এক মাস বা এক মাসের বেশি আমাদের সফরের সময় থাকে। সে ক্ষেত্রে আমাদের কোন আবাসিক হোটেল বা কোন বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতে হয়
যদি আবাসিক ছাড়া আমরা বাসা ভাড়া নিয়ে থাকি তাহলে আমাদের খরচা একটু কম হয়। ময়মনসিংহে আমাদের কাজ প্রায় ৪০ দিনের মতন তাই আমরা একটি বাসা ভাড়া করি। যে বাসা আমরা ব্যাবস্থা করেছি সে জায়গার ঠিকানা হল, ময়মনসিংহ জেলার নতুন বাজার এলাকায় পায়রা চত্বর মোরে। প্রথম দিনে আমরা সবাই ক্লান্ত কারণ আমাদের বাসা খুঁজতে হয়েছে জার্নি করতে হয়েছে তাই আমরা কাজ করলাম না প্রথম দিন আমরা বাসাতে থাকলাম সারাদিন আমাদের যাকিছু প্রোয়োজন তা ব্যাবস্থা করলাম এবং রাতে শোবার জন্য কিছু পলের ব্যবস্থা করলাম কারন সে বাসাতে খাট ছিল না তাই আমাদের পলের ব্যবস্থা করতে হয়েছে। বাড়িটি পরিত্যক্ত অবস্থায় অনেক দিন ছিল।
আমরা আমাদের প্রায় বাড়িটি অনেক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করতে হয়েছে। এবং বাথরুম আমাদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করতে হয়েছে।
যাই হোক মূল ঘটনায় আসি ঘটনাটি আমার সঙ্গে ঘটে যাওয়া এবং আমি আমার সহকর্মির সাথে সেই ঘটনাটি শেয়ার করি। কিন্তু তারা কেউ আমার ঘটনা বিশ্বাস করতে চায় না। তারা ঘটনাটি শুনে হাসিয়ে উড়িয়ে দেয় এবং আমাকে বলে তুমি এটা স্বপ্নে দেখেছো। প্রথম দিন রাতের বেলা আমরা ডিনার শেষ করে আমাদের রুমে আমরা শোবার জন্য সবাই প্রস্তুতি গ্রহণ করি রাত সাড়ে আটটা বাজে তখন আমরা হোটেল থেকে এসে রুমে সময় শোয়ার ব্যাবস্থা করি। রাতের বেলা অনেক হাসি ঠাট্টা গল্প-গুজব করে আমাদের প্রায় অনেক রাত হয়ে যায় প্রায় রাত একটার দিকে সবাই ঘুমিয়ে পড়ে এবং আমিও ঘুমিয়ে পড়ার চেষ্টা করি। হঠাৎ আমি বাথরুম থেকে ট্যাপ চালু করার শব্দ পাই এবং আমি আশেপাশের সবাইকে দেখি কেউ জেগে আছে কিনা। কিন্তু কেউ জেগে ছিলো না।
আমি শব্দটি শুনেও না শোনার ভান করে আমিও শুয়ে পড়ি আর তার একটু পর আমি শুনতে পাই যে গোসল করার শব্দ। মনে হচ্ছে বাথরুমে কেউ গোসল করছে আমার তো তখন গা শীতল হয়ে আসলো। হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসলো। আমি বিছানা থেকে উঠে লাইট জ্বালালাম দরজাও ভেতর থেকে লক আছে। তার মানে রুম থেকে কেউ বের হয়নি। আমি আমার সহকর্মীদের ডাকলাম কিন্তু কেউ কোন জবাব দিল না কারণ তারা জার্নি করে এসেছে তাদের শরীর খুব ক্লান্ত আমার শরীর ক্লান্ত কিন্তু আমার ঘুম রাতে একটু দেরিতে আসে। বিশেষ করে যদি কোনো অচেনা অজানা জায়গা হয় তাহলে আমার তো সেই রাতে ঘুম হয়ে গেছে। আমি সাহস করে রুমের গেট খুলে বাথরুমের দিকে গেলাম বাথরুমে গিয়ে বাথরুমের দরজা খুললাম দেখি বাথরুমের দরজা খুলে গেল। এবং বাথরুমের লাইট জ্বলছিল ট্যাপ দিয়ে পানি পড়ছিল খুব জোরে গোসলের শব্দ তখন আর ছিল না। আমি মনে করলাম আমার হ্যালুসিনেশন হচ্ছিল কিন্তু না আমার হ্যালুসিনেশন হচ্ছিলোনা।আমি বাথরুমে ঢুকে ট্যাপ বন্ধ করলাম ঠিক তখনই কেউ বাথরুমের দরজা বাইরে থেকে লক করে দেয়। আমি খুব ভয় পেয়ে যাই এবং আমি জোরে জোরে চিৎকার করতে থাকি। কিন্তু আমার চিৎকার করে কোন লাভ হয়নি।
এক সময় আমি সেন্সলেস হয়ে পড়ে যাই তারপরে কি ঘটে আমি আর বলতে পারিনা। আমার যখন চোখ খুলি তখন দেখি আমি বিছানাতে শুয়ে আছি। এবং আমাকে ঘিরে সকলের দাঁড়িয়ে আছে আমি তাদের জিজ্ঞেস করে আমার কি হয়েছিল তারা কোন জবাব দিল না। আমার মাথাটা একটু হালকা ব্যথা করছিল। আমি সবাইকে আবার জিজ্ঞেস করলাম আমার কি হয়েছিল আপনারা আমাকে এরকম করে দেখছেন কেন? তারা আমাকে উত্তরে বললো যে আমি নাকি রাতের বেলা বাথরুমে অজ্ঞান হয়ে পড়েছিলাম তারা আমাকে রাতের বেলা বাথরুম থেকে নিয়ে এসে বিছানায় শুয়ে রাখে আর আমার জ্ঞান ফিরে সকালবেলা। এই ঘটনার পর থেকে আমি খুব ভয় পেয়ে যাই। এবং আমার সেই দিন দুপুরের পর থেকে খুব জ্বর আসে আমার এত পরিমান জ্বর আসে যে আমি তাদের সাথে কাজ করতে পারি না। তারপর সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিয়ে বসের সঙ্গে কথা বলে আমাকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয় এবং এটাই আমার জন্য ভালো মনে হলো।
আমার জ্বর কেটে উঠতে প্রায় মাস খানেক এর মতন লাগল। তার পরে আমি আবার আমার কর্ম জীবনে ফিরে গেলাম। এ ছিল আমার সাথে ঘটে যাওয়া অমীমাংসিত একটি ঘটনা। আপনারা যদি কেউ এর ব্যাখ্যা করতে পারেন তাহলে অবশ্যই আমাকে জানাবেন ধন্যবাদ কষ্ট করে আমার পোস্টটি পড়ার জন্য।
Image use pixabay.com
মনে হলো একটি ভুতুড়ে নাটকের দৃশ্য। ঘটনার সাথে বাস্তবতা কি আল্লাহ ভালো জানেন।
লিখতে না পারলেও একটি নাটক উপাধি পেয়েছি ভাইয়া ভালো করে পড়ে দেখেন একবারে যা চোখে পড়ে না তা দুই তিন বারে হয়তো পড়বে।হুমায়ুন আহম্মেদ