স্কুলে পড়াকালীন টিফিন টাইম আসলেই স্কুল গেইটের সামনে ফুচকা, চটপটি কিংবা পানিপুরি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা মামার উপর হামলে পড়তাম। সবকিছু বাদ দিয়ে এই খাবার গুলো কেন যেন খুব ভাল লাগতো। বিশেষ করে পানিপুরি। ৫ টাকায় ১ প্লেইট পাওয়া যেত। এক প্লেইট খেয়ে শেষ ক্ল্রে ইচ্ছে হতো আরো এক প্লেইট খাওয়ার। কিন্তু সেই সুযোগ তো নেই। প্রতিদিন টিফিনের জন্য শুধু এই ৫ টাকা বরাদ্দ থাকতো। এবং এই পাঁচ টাকা নিয়েই আমরা খুশি থাকতাম।
আজ দুপুরে কান্দিরপাড় যাবার সময় মডার্ন স্কুলের সামনে পানিপুরি আর ভেলপুরি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা মামাদের দেখে ছোট বেলার স্মৃতিগুলো মনে পড়ছিল। যেহেতু টিফিন টাইম, তাই দোকানগুলোতে স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের ভীড় ছিল। এদের দেখে আমার নিজেরও ইচ্ছে হল ওদের সাথে দাঁড়িয়ে পানিপুরি খাবো, যেমনটা ছোটবেলায় স্কুলে পড়াকালীন সময় বন্ধুদের সাথে মিলে খেতাম।
যেই ভাবা, সেই কাজ। রিকশা থেকে নেমে সোজা চলে গেলাম মামার কাছে। এক প্লেইট পানিপুরির অর্ডার দিলাম, ঝাল টক দিয়ে। ঝাল জিনিসটা আমার খুব পছন্দে। আরেকটা আছে মিষ্টি টক, সেটাও ভাল। কিন্তু ঝাল ও টকের মাঝে পার্থক্য করতে বললে আমি ঝালটককেই এগিয়ে রাখব।
যেহেতু ভীড় খুব বেশি ছিল, তাই খাবার পেতেও অনেক সময় লাগছিল। তার উপর আবার দুপুরের কড়া রোদে খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয় থাকতে খুব কষ্ট হচ্ছিল। ইচ্ছে হচ্ছিল অর্ডার ক্যানসেল ক্ল্রে চলে যাই। কারণ যেখানে যাচ্ছিলাম, সেখানেও এসবের দোকান অহরহ রয়েছে। কিন্তু স্কুলে গেইটের সামনে দাঁড়িয়ে স্কুল ছাত্র ছাত্রীদের সাথে খাওয়ার সুযোগ তো সেখানে পাব না। তাই কষ্ট হওয়া সত্ত্বেও পানিপুরির জন্য চুপচাপ সেখানে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করে যাচ্ছিলাম।
দোকানদার খুব নিপুন হাতে একটা একটা করে প্লেইট রেডি করে সবাইকে দিচ্ছিল। অনেকটা রোবটের মতো৷ মনে হয় অনেক দিন ধরেই উনি এই পেশায় যুক্ত। মিনিট ১৫ এর মতো অপেক্ষা করার পর আমার হাতে সেই কাঙখিত পানিপুরির প্লেইটটা আসলো। তীব্র গরমে ঘেমে একাকার হয়ে গেলেও পানিপুরির প্লেইট হাতে পেয়ে বেশ ভালই লাগছিল। পাশাপাশি স্কুল গেইটের সামনে সমস্ত স্কুল ড্রেস পরা ছাত্রছাত্রীদের সাথে দাঁড়িয়ে নিজেও স্কুল ছাত্র হিসেবে মনে হচ্ছিল। মনে হচ্ছিল এই বুঝি স্কুলের ঘন্টা বাজবে আর সবকিছু ফেলে ক্লাস রুমে এক দৌড়ে চলে যেতে হবে।
কিন্তু না, স্কুললাইফ তো সেই কবেই পার হয়ে এসেছি। এখন আর সেই পুরানো জীবনে ফিরে যাবার উপায় নেই। অথচ ছোটবেলায় অপেক্ষা করতাম কবে বড় হব। আর এখন মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে আবারও ছোট বেলায় ফিরে যাওয়ার। মানুষের ইচ্ছে কিংবা চাহিদার কোনো শেষ নেই, তাই না? যখন যেটা থাকে, তার প্রতি আগ্রহ থাকে না। কিন্তু যেটা নেই বা পাওয়ার সম্ভাবনা নেই, তার প্রতি অনেক আগ্রহ!
যায় হোক, পানিপুরির টেস্ট খুব ভাল। দামটাও কম। এক প্লেইট মাত্র ২০ টাকা। অথচ সেইম জিনিস কুমিল্লার অন্যান্য স্থানে ৩০ টকায় পাওয়া যায়৷ খুব সম্ভবত স্কুলের সামনে হওয়ায় দামটা কিছুটা কম। তাই এই কম দামে আরো কিছু খাওয়ার লোভ সামলাতে পারলাম না। খেতে খেতেই আরো এক প্লেইট অর্ডার দিয়ে দিলাম। তবে এবার আর ১৫ মিনিট অপেক্ষা করতে হয় নি৷ আগের প্লেইট শেষ করতে না করতেই নতুন প্লেইট হাজির।
আর আমি একদিকে যখন পানি পুরি খেয়ে তৃপ্তি মেটাচ্ছিলাম, অন্যদিকে তখন আমার ওয়াইফ ভেলপুরি খাচ্ছিল। ভেলপুরি জিনিসটা আমারও ভাল লাগে৷ তবে পানিপুরিটা একটু বেশিই ভাল লাগে। ওর কাছে আবার ভেলপুরি ভাল লাগে, সাথে মিষ্টি টক। ঝাল জিনিসটা খুব একটা খেতে পারে না সে।
যায় হোক, দুপুরের দিকে বাইরে আরো বেশ কিছু খাওয়া দাওয়া করা হয়েছিল। একটা হোটেলে ঢুকে মুরগ পোলাও খেয়েছিলাম দুইজনে ভাগ করে। কারণ কাল রাতে ও আজ সকালে কিছুই খাওয়া হয় নি আমার। ক্ষিদেও লেগেছিল বেশ। এজন্য কাজের ফাঁকে হোটেলে ঢুকে মোরগ পোলাও খেয়ে ফেললাম। সব মিলিয়ে বেশ ভাল একটা দিনই কেটেছে। আপাতত আজকের মতো বিদায়...
তখন পাঁচ টাকায় এক প্লেইট ফুচকা পাওয়া যেতো,গতকালকে দাম জিজ্ঞেস না করে এক প্লেইট ফুচকা খেয়েছিলাম,পরে বলে একশো টাকা প্লেইট,আমি পুরোই হতবাক....
এর থেকে স্কুলের সামনে বসা এই মামাদের খাবার মজাও বেশি,দামও খুব কম।
এগুলা আসলে স্ট্রিটফুডস হিসেবেই ভাল। রেস্টুরেন্টে খেতে গেলে বেমানান লাগে৷
Congratulations @reza-shamim! You have completed the following achievement on the Hive blockchain and have been rewarded with new badge(s):
Your next target is to reach 39000 upvotes.
You can view your badges on your board and compare yourself to others in the Ranking
If you no longer want to receive notifications, reply to this comment with the word
STOP
To support your work, I also upvoted your post!
Check out the last post from @hivebuzz:
Support the HiveBuzz project. Vote for our proposal!
ফুচকা , ভেলপুরি ছিলো স্কুল জীবনের সেরা টিফিন ! ভিড় ঠেলে , লম্বা লাইনে দাড়িয়ে হলেও এই দুইটা জিনিস খেতাম ...ছোট ফুচকা বা পানিপুরি সাথে বোম্বাই মরিচের টক ...আহা ...অমৃত !
জিভে জল এনে দেয়ার মতো। বিশেষ করে গতকাল ভীড় ঠেলে লাইনে দাঁড়িয়ে পানিপুরির প্লেইট হাতে পাওয়ার পর মনে হচ্ছিল আমিও বুঝি স্কুল জীবনে ফিরে এসেছি আবার...
পানিপুরি দেখে এখন আর কিছুই ভালো না লাগা আমি 🤤🫣
এগুলা খেতে ভালোই লাগে। তবে কোয়ালিটি টাই হলো ম্যাটার। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এগুলা হাইজিনিক না 😐
Hi @reza-shamim, your post has been upvoted by @bdcommunity courtesy of @rem-steem!
Support us by voting as a Hive Witness and/or by delegating HIVE POWER.
JOIN US ON