হনুমানের নাম শুনে সবাই হয়তো কোনো হনুমানকেই খুঁজবেন৷ কিন্তু ছবিতে তো কোনো হনুমান নেই, তাহলে হনুমানের প্রসঙ্গ আসছে কোত্থেকে, তাই না? এইটাই হল আসল মজার ব্যাপার৷ সারাদিন হুটুপুটি করতে থাকা এই ছোট বিড়ালছানাটার নামই আদর করে হনুমান রাখা হয়েছে। এই নাম রাখার পেছনে অবশ্য নির্দিষ্ট কোনো কারণ নেই। আদর করে ডাকতে ভাল লাগছে, তাই সবাই মিলেই হনুমান বলে ডাকছে৷
অবশ্য নাম দিয়ে তো কিছু যায় আসে না। নামে হনুমান হলেও সে কিন্তু বিড়াল ছানাই রয়ে গেছে। সারাদিন লুরো ঘর জুড়ে দৌড়াদৌড়ি করছেম আপন মনে একা একা খেলে যাচ্ছে৷ বাসার সবাই যে যখন কাছে পাচ্ছে, আদর করছে। সবমিলিয়ে দিন তো তার ভালই কাটছে। সবাইকে মাতিয়ে রাখছে।
হনুমান যখন বাড়িতে আসে, তখন মাত্র কয়েক দিন বয়স ছিল। আজ প্রায় ৩ মাস ধরে সে আমাদের বাড়ির একজন সদস্য হয়ে গিয়েছে। নিজেকেও সে এই পরিবারের মাঝেই মানিয়ে নিয়েছে৷ অথচ প্রথম যখন সে আসে, তখনও ভাবি নি যে সে আমাদের বাড়িতেই থেকে যাবে৷ হনুমানকে পালার উদ্দেশ্যেও নিয়ে আসা হয় নি৷ ওমনিতেই কিছুদিন বাড়ির সামনে একা একা ঘুরাঘুরি করতো। দেখতে খুব সুন্দর ছিক, তাই সবাই একটু একটু করে আদর করে বাড়ির ভেতর এক্সেস দিয়েছিল। আর এখন সে নিজেকে পরিবারের সদস্য বলেই মনে করছে। সারাদিন এই ঘর থেকে সেই ঘরে ঘুরে বেড়াচ্ছে আপন মনে৷
তবে হনুমান যে গাছে উঠা শিখে গিয়েছে, তা জানতাম না। আজ হুট করে দেখলাম বাড়ির সামনের গাছটাতে উঠে বসে আছে। প্রথম দেখে অবাক হয়েছিলাম। আমার অবাক হওয়ার কারণ হয়তো সে বুঝতে পেরেছিল৷ আর তাইতো গাছ থেকে এক লাফ দিয়ে নেমে আবারও গাছে উঠে গেল আমাকে দেখানোর জন্য৷
বাসায় যে যখন থাকে, তখন তার সাথেই খেকা শুরু করে দেয়। বিরক্ত হয়েও লাভ নেই৷ পেছনে লেগেই থাকবে৷ তবে বাসায় যখন কেউ থাকে না, তখন সে বাইরে গিয়ে মুরগীদের সাথে খেলা শুরু করে৷ মুরগীকে ভয় দেখিয়ে পেছন পেছন দৌড়ানো যেন তার স্বভাব হয়ে গিয়েছে। এই স্বভাবটা আগে ছিল না। ইদানিং শুরু হয়েছে। তবে বাসায় বাসার মানুষদের বিরক্ত করার চেয়ে বাইরের মুরগীদের সাথে খেলাটা অনেক ভাল।
তবে বাড়ির সীমানার বাইরে সে যায় না৷ আরেকটু বড় হোক, তারপর তাকে নিয়ে যাওয়া হবে। আপাতত বাড়ির সীমানার ভেতরেই তার জীবন। এতটুকু জায়গার মাঝেই তার সবকিছু। নিজে হাসিখুশি থাকছে, আমাদেরও হাসিখুশি রাখছে৷ আর কী লাগে?
দুপুরে হনুমানের সাথে খেলাধুলা শেষ করে বিকেলের দিকে বের হয়েছিলাম একটু৷ পুকুর ঘাটের আশেপাশে বেশ কিছুক্ষণ ছিলাম৷ বাসায় কারেন্ট ছিল না। ঘরের ভেতরের তুলনায় বাইরের পরিবেশ অপেক্ষাকৃত ঠান্ডা। আর পুকুর পার তো আরো বেশি ঠান্ডা। সেজন্যই সময় কাটাতে পুকুর পাড়ের দিকে যাওয়া। ইচ্ছে ছিল হনুমানকে সাথে নিয়ে যাওয়ার। কিন্তু ওকে সাথে নিলে শান্তিতে বসে থাকা সম্ভব হতো না। সেজন্য তাকে বাড়িতে রেখেই আমরা বের হয়েছিলাম।
আমাদেরকে বাড়িতে খুঁজে না পেয়ে সে বাড়ি থেকে বের হয়ে গিয়েছিল। আর তখনই বাড়িতে এসে দেখি হনুমান গাছে উঠে বসে আছে। কিভাবে গাছে উঠা শিখেছে জানি না। পশুপাখিদের সম্ভবত এসব শিখাতে হয় না৷ প্রাকৃতিক ভাবেই তারা তাদের প্রয়োজনীয় সবকিছু শিখে নেয়। কিন্তু সত্যি কথা বলতে কী, এত ছোট বিড়ালছানাটাকে গাছের উপর চড়ে বেড়াতে দেখে বেশ ভালই লাগছিল।
কখনো বিড়াল পালার মতো সুযোগ হয় নি আমাদের। অনেক আগে অবশ্য আমাদের বাসায় একটা বিড়াল ছিল। কিন্তু সেটা কোনো পালিত ছিল না। কোত্থেকে যেন উদয় হয়েছিল। কিছু মাস থেকে আবার হুট করে হারিয়েও গিয়েছিল৷ বিড়ালটা হারিয়ে যাবার পর মন খারাপ হয়েছিল খুব আমাদের। আমাদের মন খারাপ দেখে বাবা বাসায় দুইটা মুরগী নিয়ে এসেছিল আমাদের জন্য। মুরগী পেয়ে বিড়ালের দুঃখ ভুলে গিয়ে ভাইয়েরা মিলে মুরগী পালা শুরু করলাম। কিন্তু সেই দুইটা মুরগীও বেশি দিন টিকে নি৷ হুট করে এক দিনের ব্যাবধানে মুরগী দুইটাই মারা গিয়েছিল। এরপর থেকে আর কোনো কিছুই পালা হয় নি আমাদের।
আমাদের হনুমানটাও কতদিন আমাদের কাছে থাকবে জানি না। কিন্তু যতদিন আছে, ততদিন হাসি খুশিতেই থাকবে, এই আশা করি...
আশা করি আপনার হনুমানটি মানে বিড়ালছানাটি ভালো থাকবে
আমিও সেই আশাই রাখি ❤️
আচ্ছা হনুমান সাহেবের রঙ কি প্রাকৃতিকভাবেই এইরকম নাকি ক্যামেরার কারসাজি😉
রঙটাই এমন। এজন্যই তো আরো বেশি কিউট লাগে।
Congratulations @reza-shamim! You have completed the following achievement on the Hive blockchain and have been rewarded with new badge(s):
Your next target is to reach 38000 upvotes.
You can view your badges on your board and compare yourself to others in the Ranking
If you no longer want to receive notifications, reply to this comment with the word
STOP
To support your work, I also upvoted your post!
Check out the last post from @hivebuzz:
Support the HiveBuzz project. Vote for our proposal!
বিড়াল আমার খুব পছন্দের প্রানী৷ ছোটবেলায় একটা বিড়াল পুষতাম। কিন্তু হঠাৎ করে একদিন আর তাকে খুজে পাওয়া যায়নি, খুব কষ্ট পেয়েছিলাম সেদিন 😐