নিশুর সাথে আমার মনে মিল থাকলেও আর কোন দিক দিয়ে মিল ছিল না। তার চিন্তা, স্বভাব পছন্দ সব ছিল আমার বিপরীত। যেমন, পলিটিক্স এর দিক দিয়ে আমি লীগের সমর্থক আর সে জামায়াত সমর্থক। যেকোন ইস্যুতেই তার সাথে আমার ঝগড়া লেগে যেত। সারারাত ঝগড়া করে রাগের মাথায় ফোন কেটে দিয়ে ঘুম দিতাম। এরপর সকালে উঠে হয় আমি স্যরি বলতাম, নয়তো সে স্যরি বলতো। ব্যাস, ঝগড়া শেষ...
ফুটুবলের দিক দিয়ে আমি ব্রাজিল সমর্থক আর সে আর্জেন্টিনার সমর্থক। ২০১৪ এর ফুটবলের শুরুর দিক পর্যন্ত আমি তারে ভালই পঁচাতে পারতাম। মুখ বুজে সহ্য করে নিত। কিন্তু জার্মানির কাছে ব্রাজিল সাত গোল খাওয়ার পর থেকে আমি আর কিছু বলার সুযোগ পাই নাই। উঠতে বসতে সেভেন আপ নিয়ে ট্রল করে। এমনকি আমাদের দেখা হবার সময়ও সে আমার হাতে সেভেন আপ ধরিয়ে দিত।
ক্লাব ফুটবলে আমি রিয়াল মাদ্রিদ আর সে বার্সেলোনা। আমার প্রিয় খেলোয়াড় রোনালদো আর তার প্রিয় খেলোয়াড় মেসি। বার্সেলোনার কতগুলা গ্রুপে সে এড ছিল। ঐসব গ্রুপের অদ্ভুত অদ্ভুত সব লজিক নিয়ে এসে সে আমাকে ট্রল করত। এই ট্রলগুলা বুঝতেও আমার সময় লাগতো। এল ক্লাসিকোর রাতগুলোতে তো কথাই নেই। খেলা দেখতাম আর একে অন্যকে ট্রল করতাম। বার্সেলোনা হেরে গেলে সে অবশ্য মোবাইল অফ করে ঘুম দিত। ট্রল করার কোন সুযোগই পেতাম না!
এত অমিলের পরেও আমাদের সম্পর্কটা খারাপ কাটে নি এত বছর। মাঝে মাঝে মনে হয়, এই ধরনের সম্পর্কগুলাই পৃথিবীর সবচেয়ে বেস্ট সম্পর্ক।
অধিকাংশ সম্পর্কগুলা এমনই হয়। আমি আমার জীবনে যতগুলো সম্পর্ক দেখেছি সেগুলোর অধিকাংশই ছিল এরকম বিপরীতমুখী
সবসময় ঝগড়া না হলে মজাও লাগে না 😀
ভাই আপনার জন্য 😛