সকাল থেকেই ঝিরিঝিরি বৃষ্টি!ঘুম থেকে উঠেই মনে হলো ধোঁয়া উড়ানো গরম এক চা হলে মন্দ হয় না।সাথে নইলে মনকে চাঙা করার জন্য রবি ঠাকুরের
'আজি ঝরো ঝরো মুখর বাদল দিনে
জানি নে, জানি নে...
কিছুতে কেন যে মন লাগে না' গানটা হালকা ভলিউমে শোনাই যায়।বৃষ্টি মানেই যে ভালো লাগা! শহরের বড় বড় দালানের ছোট্ট বারান্দায় এই সব ভাবনা কিন্তু দোষের না!কিন্তু এই একি বৃষ্টি তো অন্য মানুষের জীবনে হয়তো ভিন্নরুপে আসে।বর্ষাকালে একটা দুশ্চিন্তার কারণ হয় বন্যা।টানা বৃষ্টিপাতে বিভিন্ন জায়গায় পানি জমে থাকলেও সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সিলেট ও সুনামগঞ্জের মানুষজন।এই প্রত্যেকটি জেলাই প্রায় ৮০ ভাগ বন্যার পানিতে ডুবে আছে।এক রাতের মধ্যেই কোমর পানি থেকে গলা পানিতে পৌঁছে গেছে।ঘর-বাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে।এবারের এই বন্যা অতীতে ঘটে যাওয়া যত বন্যা হয়েছিল বাংলাদেশে তারমধ্যে ১৯৮৮ আর ১৯৯৮ সালের বন্যার মতোই ভয়াবহ।প্রায় প্রতি ১০ বছর মধ্যে একটি বড় বন্যা হয় বাংলাদেশে।বিশ্বের একটি স্বল্পোন্নত দেশ হওয়া সত্ত্বে এখনো বন্যা নিয়ন্ত্রণ এর কোন উন্নয়ন চোখে পরেনি।ফলাফলে আমাদের ডিজিটাল বাংলাদেশের এক অংশ বন্যায় ডুবে গেছে।
বিশেষ করে সিলেটের উত্তর পশ্চিমে অবস্থিত ভারতের চেরাপুঞ্জি সাথে মেঘালয়ে মুষলধারে বৃষ্টির কারনে মুলত সিলেটে এই ভয়াবহ বন্যা।
কিন্তু আমাদের রাষ্ট্রপরিচালকদের নজর অন্য দিকে।পদ্মা সেতু নিঃসন্দেহে আমাদের দেশের অন্যতম অর্জন।কিন্তু মানুষের জীবনের চেয়ে বড় অন্যকিছুই মূল্যবান হতে পারে না।তাছাড়া বন্যার এতটা তীব্রতার প্রধান কারণ হলো পানি সরাসরি নদীতে নামতে বাধা পাচ্ছে।নদী তার নব্যতা হারিয়েছে অনেক আগেই।হাওরে চলছে নানা নির্মাণকাজ।তাই হাওর বাওড়ের পথ বন্ধ।পানি তাই সরে যেতে পারছে না।
মুষলধারে যদি আরো কয়েকদিন এভাবে বৃষ্টি পরে,তাহলে অবস্থা যে কোথায় গিয়ে থামবে, সেটা কল্পনাও করা যাচ্ছে না!
ভৌগোলিক অবস্থানে বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ।যেহেতু আমাদের দেশের দক্ষিণে বিশাল জলাধার বঙ্গোপসাগর আছে তাই বৃষ্টির পানি বা উজানের পানি যাই হোক কেন তা সহজেই নদীগুলো দিয়ে সাগরে চলে যাবে।কিন্তু অতি লোভী কিছু মানুষ নিজেদের সুবিধামতো নদী ভরাট করতেছে।তারা নিজস্ব স্বার্থের জন্য সকল নদী খাল দখল করে স্থাপনা নির্মান করেছে।যার কারনে বৃষ্টির পানি যাওয়ার কোন পথ পাচ্ছে না আর সৃষ্টি হচ্ছে জলবদ্ধতা।প্রকৃতিকে তার নিজস্ব গতিতে চলতে দেয়া উচিত।নইলে যে প্রকৃতিও ছেড়ে দেয় না।প্রাকৃতিক এই দুর্যোগের কাছে আসলে আমরা সবাই অসহায়।যাদের স্বার্থের জন্য এত মানুষের দুর্দশা তারা যদি বন্যার সাথে ভেসে যেত বেশ হত!
তাছাড়া আমাদের না সার্মথ্য আছে এই বন্যা বন্ধ করা বা প্রতিহত করার!তবে সরকারের উচিত পূর্বপ্রস্তুতি গ্রহন করা।এতে কিছুটা ক্ষয়ক্ষতি কমানো যেত অন্তত।
অনেক উপায় হয়তো নেই।কিন্তু ভারতের সাথে পানি চুক্তি আরো জোরালো করতে হবে এর জন্য আন্তর্জাতিক আদালতের শরনাপন্ন হতে হবে।সকল নদী,খাল,হাওর-বাওড়কে দখল মুক্ত করতে হবে এবং ঠিকভাবে পানির
প্রবাহ নিশ্চিত করতে হবে।নইলে প্রকৃতি এভাবেই তার প্রতিশোধ নিবে।
ভবিষ্যতে আবারো এরকম বন্যা না চাইলে এখন থেকেই পরিকল্পনা গ্রহন করে এগিয়ে যেতে।আর এই পরিস্থিতিতে আমরা সবাই যে যার সামর্থ্য মতো সাহায্যে করতে এগিয়ে আসি।সৃষ্টিকর্তা এই কঠিন প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে আমাদের সবাইকে হেফাজত করুন!
Congratulations @rodmila! You have completed the following achievement on the Hive blockchain and have been rewarded with new badge(s):
Your next target is to reach 3500 upvotes.
You can view your badges on your board and compare yourself to others in the Ranking
If you no longer want to receive notifications, reply to this comment with the word
STOP
Support the HiveBuzz project. Vote for our proposal!