চন্দ্রদ্বীপের কন্যা আমি।

in BDCommunity3 years ago

IMG-20220604-WA0005.jpg

IMG-20220604-WA0004.jpg

নদীপ্রধান দেশ আমাদের।এর মধ্যে নির্দিষ্ট কিছু স্থানের মানুষেরা শুধু নদীপথেই যাতায়াত করতে বেশ স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে।কেননা বাংলাদেশের দক্ষিণ অঞ্চলের মানুষের মুলত একমাত্র সহজলভ্য যাতায়াতের মাধ্যমেই হচ্ছে নৌপথ।

চন্দ্রদ্বীপের কন্যা আমি।যাচ্ছি একদিনের ভ্রমণে বরিশালে।কিছুটা নাড়ির টানে অথবা প্রয়োজনেই যাচ্ছি।বরিশাল বাংলাদেশের দক্ষিণের জেলা হওয়াতে, এখানে স্থল ও নৌপথ উভয়পথেই যাতায়াত করা যায়।তবে ভ্রমণের ক্ষেত্রে লঞ্চের ভ্রমণ আমার কাছে বেশ আরামদায়ক মনে হয়।নদীর পাশ থেকে আশেপাশের গ্রাম দেখতে দেখতে যাওয়াটা বেশ রোমাঞ্চকরই বটে।

সকালে গ্রীনলাইন ওয়াটার বাসে উঠে পরলাম।সকাল ৮ টায় ঘাট থেকে বরিশালের উদ্দেশ্যে রওনা হলো।গ্রীনলাইনের সিস্টেমটা কিছুটা বাসের মতো ডিজাইন করা।এজন্যই মুলত একে ওয়াটার বাস বলা হয়।এখানে সাধারণ ইকোনমি ক্লাস এবং বিজনেস ক্লাস এই দুইধরনের বসার সিট পাওয়া যায়।ক্যাটাগরি অনুসারে রয়েছে টিকিটের দামের পার্থক্য।সবাই সবার সুবিধামত সিট নিয়ে থাকে।ঢাকা থেকে বরিশাল যেতে মোট ছয় ঘন্টা সময় লাগে।সাধারণত অন্যান্য লঞ্চগুলো সন্ধ্যার পরে ছেড়ে যায়।সেক্ষেত্রে সেই রাতটা লঞ্চে কাটাতে হয়।কিন্তু অনেক মেয়েরা আছে যারা রাতের জার্নিটা সেইফ মনে করে না তাদের জন্য গ্রীনলাইন ওয়াটার বাস কিছুটা আর্শীবাদসরুপ।দিনের মধ্যেই খুব সহজেই পৌঁছানো যাবে।দিনের ঝকঝকে আকাশে সাথে নদীর আছড়ে পরা ঢেউ,সে এক অপূর্ব দৃশ্য দেখতে দেখতে এগিয়ে যাওয়া!সাথে ছোট নৌকায় জেলেদের মাছ ধরার দৃশ্য,এভাবে আমরা নামলাম বড় নদী মেঘনাতে।বেলা গড়িয়ে যখন দুপুর ২টা, তখন আমরা পৌঁছে গেলাম বরিশাল লঞ্চঘাটে।
দুপুরের এই ঝা ঝা করা রোদের মধ্যে বের হওয়াটা বেশ কষ্টকর।তাই আমরা একটি খাবারের হোটেল বেছে নিলাম,যেখানে আমাদের কিছুক্ষণ বিশ্রাম হবে সাথে দুপুরের খাবারটা খেতে পারবো।


IMG-20220604-WA0007.jpg

IMG-20220604-WA0006.jpg

রোদের ঝাজ কিছুটা কমে এলে বেড়িয়ে পরলাম কাজে।কাজ শেষ হতে হতে বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যার পথে!এই অল্প সময়ের জন্য গেলাম বঙ্গবন্ধু উদ্যানে যেটি বেলস পার্ক নামেই বেশি পরিচিত।পার্কের ভিতরে রয়েছে বসার জন্য বেঞ্চ ও ছাতি।তাছাড়া রাস্তার সাথেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি বড় ম্যুরাল।মুলত ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এখানে ভাষণ দিয়েছিলেন তা স্মরণীয় করে রাখতে এর নামকরণ করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু উদ্যানে।এখানে একটি ‘মুক্ত মঞ্চ’আছে। যেখানে বিভিন্ন প্রোগ্রাম করা হয়ে থাকে।মুক্তমঞ্চের সাইড ধরে রয়েছে বিভিন্ন খাবারের দোকান।ওখানে এক দোকানের স্পেশাল চা খেয়ে বেশ চাঙা অনুভব করলাম।মাঝে প্লানেট পার্ক ও মুক্তিযোদ্ধা পার্কের মধ্যে কিছুক্ষনের জন্য ঘুরে আসলাম।সবকিছুই মোটামুটি কাছাকাছি দূরত্বে!


IMG-20220604-WA0003.jpg

IMG-20220604-WA0002.jpg

টিকিট যেহেতু আগে থেকেই কাটা ছিলো তাই কিছুটা দেরী করেই সদরঘাটে পৌঁছলাম।জেটি থেকে বড় বড় সব লঞ্চ দেখতেও বেশ লাগে।প্রত্যেকটি লঞ্চই উজ্জ্বল আলােয় সজ্জিত।সব চোখ ধাধানো লাইটিং। তার ছায়া পরে নদীর পানিতে।অপূর্ব দৃশ্য বটে।বরিশাল লাইনের লঞ্চগুলো সবচেয়ে বড় হয় এবং এর ফ্যাসিলিটিও বেশী থাকে।তবে জেটিতে জেলা ভেদে লঞ্চগুলো আলাদা করে রাখা থাকে।যাতে সবার খুজে পেতে সহজ হয়।জেটি বা প্লাটফর্মে বরাবরই কোলাহলপূর্ণ ও ভিড় লেগেই থাকে।আসলে লঞ্চ ভ্রমন সব মানুষের সামর্থ্যের মধ্যে হয় তাই সব শ্রেণীর মানুষই কম-বেশী দেখা যায়।কেউ পরিবার নিয়ে যাচ্ছে,কেউ বা মালামাল পাঠাচ্ছে। লঞ্চের কর্মচারীরাও যাত্রীদের ডাকাতে প্রচন্ড ব্যস্ত থাকে।

আমরাও আমাদের লঞ্চে উঠে পড়লাম।জোরে সাইরেন বাজিয়ে লঞ্চ ছেড়ে দিলো আমাদের গন্তব্যের উদ্দেশ্যে।চমৎকারভাবে শেষ হলো আমাদের একদিনের ভ্রমণ।

IMG-20220604-WA0001.jpg

Sort:  

You post has been manually curated by BDVoter Team! To know more about us join our Discord.


Delegate HIVE POWER to us & earn HIVE daily.

FOLLOW OUR HIVE AUTO CURATION TRAIL