সুন্দর একটা পৃথিবীতে আমরা সবাই বাস করি।আমরা সবাই এখানে প্রবেশ করি এক আড়ম্বরপূর্ণ আয়োজনের মাধ্যমে।সৃষ্টিকর্তা মায়ের প্রবল ভালোবাসা আর বাবার মতো একটা শক্তিশালী ছাদ দিয়ে পরোক্ষভাবে আমাদের আগলে রাখে।'মায়া' নামক এক কঠিন শব্দে বেধে রেখেছে এক-আরেকজনকে।এই বাঁধন যেমন ছিড়ে ফেলা সহজ না, তেমনি কঠিন ও না।এর উদাহরণ দেখতে হলে খুব বেশি দূরে যেতে হবে না।আশে-পাশে খুব ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করলেই, অনেকের মধ্যেই তা লক্ষ্য করা যাবে।
অনেকে হয়তো ভাববে যে হঠাৎ এমন ভাবনা কেন?কারন এর প্রত্যক্ষ সাক্ষী আমি নিজেই! আষাঢ় মাসের আজ দিন।আকাশটাও যে বড্ড খেয়ালি হয়ে উঠেছে আজ!কখন কিযে তার ভাবভঙ্গি, তা আগে থেকে বোঝা কঠিন।কখনো ঝকঝকে রোদের আড়ালে মেঘ খেলা করে আবার কখনো কালো মেঘ জুড়ে এসে এক পশলা বৃষ্টি নামায়।অদ্ভুত এই আবহাওয়ার সাথেই তাল মিলিয়ে চলছিলাম এই কয়েকদিন!মানে ছাতা আবশ্যক আর কি!আজকে বের হবার সময় হঠাৎ আনমনা হলাম আর ভুলেই গেলাম যে ছাতাটা যে নিতে হবে!পরে নিজেকে একটু সান্ত্বনা দিলাম এই বলে,আজ রোদ ঝলমলে আকাশ!এবার গন্তব্যে যাবার জন্য গাড়িতে চড়ে বসলাম।ব্যস!আকাশ তার খেয়ালি ভাব শুরু করে দিলো।
জোরে জোরে মেঘের গর্জনে বুঝতে বাকি রইলো না যে বৃষ্টি আসছে।কিছুক্ষন দমকা হাওয়ার সাথে শুরু হলো ভারী বর্ষণ।এই বৃষ্টির মধ্যেই নামতে হলো।রিকশার জন্য অপেক্ষা করছি এমন সময় একটা লেগুনা সামনে এলো।লেগুনার হেলপার ছেলেটা খুবই ছোট, বড়জোর সাত-আট বছরের।রিকশা পাচ্ছিলাম না দেখে উঠে পরলাম।অন্তত কিছুটা রাস্তা তো আগানো যাবে।উঠে দেখলাম ভিতরে একি কলেজের কিছু শিক্ষার্থী। তারা মাঝে মাঝে হেলপার ছেলেটার সাথে মজা করছে।ছেলেটাও হাসতেছে।ওদের মজা দেখে ভালোই লাগছিলো!এর মাঝে আমার কাছে ভাড়া চাইলো, আমি ছেলেটার কাছে ভাংতি হবে কিনা জিজ্ঞেস করলাম?!বললো ওস্তাদের (মানে ড্রাইভার) কাছে চাইতে হবে।আমি বললাম, বলে জানাও আমাকে।হেলপার ছেলেটা গেল তার ওস্তাদের কাছে! আমি ওর ওস্তাদকে দেখে জোরে হেসে ফেললাম!ওই পিচ্ছির ওস্তাদ হলো আরেক পিচ্চি!
ড্রাইভার ছেলেটার বয়স আনুমানিক চৌদ্দ বা পনের বছর হবে।এত ছোট ছেলে ড্রাইভ করতেছে দেখে এবার একটু ভয় করতে লাগলো।যদি কোন দূর্ঘটনা ঘটে। আমি বার বার জিজ্ঞেস করতে লাগলাম যে চালাতে পারে কিনা! আমি যাই কুয়েশ্চন করি হেল্পার ছেলেটা শুধু হাসে।পরে হেল্পার ছেলেকে বললাম,'তোর বাড়ি কইরে'? বলে 'জানি না'! বাবা-মা কোথায় আছে,? তার উত্তরও ছিলো 'জানে না'বলে হাসতে লাগলো। কি কঠিন একটা কথা,কত না সহজেই বলে ফেললো! যেটা আমি বা আমাদের কারোর পক্ষেই সহ্য করা সম্ভব না।আর এই ছেলে বেশ আনন্দের সাথে তা বলতেছে সাথে এক ঝিলিক হাসি।ভাড়ার টাকাটাও ঠিকমতো হিসেব করতে পারে না।কাউকে বেশী দিচ্ছে, কাউকে তার পাওনা টাকা দিতে ভুলে যাচ্ছে আর যে যাই বলছে,সমানে হেসে যাচ্ছে! কি কঠিন জীবন আর নিশ্চিত হাসি!এভাবেই গন্তব্যের কাছাকাছি এসে আমি নেমে পরলাম।ড্রাইভার ছেলেটাকে বললাম, 'তুমি আর এভাবে লেগুনা চালিয়ো না,পুলিশ দেখলে ধরে নিয়ে যাবে'!ছেলেটাও মৃদু হেসে সম্মতি জানালো।বৃষ্টিটা কিছুটা কমে এসেছে।ভিজা রাস্তায় হাটছি আর লেগুনা স্টার্ট দিয়ে তারাও তাদের রাস্তায় চলেছে।এই পৃথিবীতে সবাই আসে একি প্রক্রিয়ায় তারপরে কারো কারো জীবন বিভিন্নভাবে ছিটকে যায়। জীবনটা হয়তো এমনই!
Congratulations @rodmila! You have completed the following achievement on the Hive blockchain and have been rewarded with new badge(s):
Your next target is to reach 600 upvotes.
You can view your badges on your board and compare yourself to others in the Ranking
If you no longer want to receive notifications, reply to this comment with the word
STOP
To support your work, I also upvoted your post!
Check out the last post from @hivebuzz:
Support the HiveBuzz project. Vote for our proposal!
Hi @rodmila, your post has been upvoted by @bdcommunity courtesy of @rem-steem!
Support us by voting as a Hive Witness and/or by delegating HIVE POWER.
JOIN US ON
Dear @rodmila, we need your help!
The Hivebuzz proposal already got important support from the community. However, it lost its funding a few days ago when the HBD stabilizer proposal rose above it.
May we ask you to support it so our team can continue its work?
You can do it on Peakd, Ecency,
https://peakd.com/me/proposals/199
All votes are helpful and yours will be much appreciated.
Thank you!