গতকাল মানহা মানে আমার মেয়ের পাঁচ মাস পূর্ণ হলো। মালয়েশিয়াতে বাচ্চা জন্মদানের একটা পদ্ধতি আছে সেটা এমন, যখন আপনি বুঝবেন আপনি গর্ভধারন করেছেন তখন আপনাকে যেকোনো হাসপাতালে, সেটা সরকারি বেসরকারি যায় হোক নিবন্ধন করতে হবে। তখন তারা দুইটা বই তৈরি করবে।একটি গর্ভবতী মাকে দেবে, আরেকটি নিজেদের কাছে রাখবে। বাচ্চা প্রসবের আগ পর্যন্ত চেকআপের সমস্ত রিপোর্ট, পজিশন সবি এই বইয়ের মধ্যে লিপিবদ্ধ থাকে। যাতে বাচ্চা প্রসবে কোনো সমস্যা দেখা দিলে ডাক্তারদের চিকিৎসা সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হয়।আবার যে তারিখে যেতে বলবে অবশ্যই যেতে হবে না গেলে নার্স প্রয়োজনে ডাক্তার বাড়িতে চলে আসবে। যদি বিদেশি হয় তাহলে ভিজিট ফি দিতে হবে তবে মালয়েশিয়ান হলে ফ্রি।
আমার মানহা পেটে থাকার সময় আমি এই পদ্ধতিটি অনুসরণ করেছি বা করতে হয়েছে। প্রতিমাসে দুই বার চেকআপের জন্য যেতে হতো।ক্লিনিকে বিভিন্ন ধরনের লোক মালয়,মায়ানমার, চায়নিজ, ইন্ডিয়ান,ইন্দোনেশিয়ান, আমি একা বাংলাদেশী। মানহার জন্মের একমাস আগে সেই ক্লিনিকে এক বাংলাদেশী আপুর সাথে পরিচয় হয়। ওনাকে পেয়ে আমি যেমন খুশি হই ওনি ও তেমন খুশি হন। এখান থেকে আমরা ভালো বন্ধু হয়ে যায়।আবার ওনিও প্রথম মা হবেন আমিও প্রথম মা হবো দুজনের অভিজ্ঞতাও কম তাই সব কিছু একজন আরেক জনের কাছে শেয়ার করি। আজ মানহারও এপয়েন্টমেন্ট ছিলো ওনার ছেলের ও এপয়েন্টমেন্ট ছিলো। ডাক্তার দেখার পর দুজনকেই টিকা দিলো। তারপর আমাদের পরিকল্পনা ছিলো কোথাও ঘুরতে যাবো তারপর বাসায় যাবো। কিন্তু বারোটার বেশি বেজে গিয়েছে আমি মানহাকে দুইটার মধ্যে গোসল করাবো তাই আর যাওয়া হবে না। আমার বাসা ক্লিনিকের কাছে তাই ওনাকে আমার বাসায় নিয়ে আসলাম। ওনার স্বামী রাতে কাজ করে তাই এখন ঘুমাচ্ছে। তিনটায় ঘুম থেকে উঠবে।এর আগে তিনি বাসা চলে যাবেন।
বাসায় আসার পর মানহা ঘুমিয়ে গেলো।ওনার ছেলে সজাগ থাকলেও খেলনা নিয়ে ব্যস্ত।আমি আপুর সাথে গল্প করতে করতে ঘর গুছালাম এরপর সেমাই রান্না করে দুজন খেয়েছি। মানহা ঘুম থেকে ওঠেনি। আড়াইটায় ওনি চলে যাবেন।সবটা সময় আমি লক্ষ করলাম ওনি ছেলেকে নিয়ে একটু ভয়ে থাকেন। ওনি যখন ওনার ছেলেকে বেবি কেরিয়ারে নিচ্ছিলেন ওর পা সামান্য একটু লেগে আছে এতে এমন চিল্লাইয়া উঠলেন আমি ভয় পেয়ে গেলাম। এর তাকিয়ে দেখি কিছুই হয়নি। আমি জিজ্ঞেস করলাম আপু আপনি এতো ভয় পান কেনো।ওনি উত্তর দিলো ওর কিছু হলে ওর দাদী আমাকে আস্ত রাখবে না।
আমি খুব আশ্চর্য হলাম।ওনি ২০২০সালে মালয়েশিয়া আসেন।এখানে আসার এক বছর পর বাচ্চা গর্ভধারন করেন। এখানে তিনি একা তার উপর ওনার গর্ভধারনে বিভিন্ন সমস্যা ছিলো। একা সব পাড় করেছেন। এরপর চারদিন প্রসব বেদনা সহ্য করার পর ডাক্তার বলে নরমাল ডেলিভারি হবে না সিজার করতে হবে। সিজারের একদিন পর বাচ্চা নিয়ে বাসায় এসে একা একা যে বাচ্চা দিনরাত এক করে বড় করছেন তাকে নাকি তার দাদী বেশি ভালোবাসে। কেন ওনার ছেলের ওরস জাত সন্তান। তার উপর দাদীর অধিকার বেশি কারণ সেই একটাই। বড় আজব এই নিয়মগুলো।
ঐ যে বাংলাদেশি নায়ক শাকিব খান নাকি ওনার ছেলে জয়ের জন্য আমেরিকার ভিসা এপ্লাই করেন অপু বিশ্বাস কে না বলে।শুনেছি ওনি নাকি চাইতেন না জয় পৃথিবীতে আসেন।যে মা নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সন্তান জন্ম দেন সে সন্তান নাকি তার না।যদিও সবার জীবনের সত্য এমন নয়।
Congratulations @setararubi! You have completed the following achievement on the Hive blockchain and have been rewarded with new badge(s):
Your next target is to reach 200 upvotes.
You can view your badges on your board and compare yourself to others in the Ranking
If you no longer want to receive notifications, reply to this comment with the word
STOP
Support the HiveBuzz project. Vote for our proposal!
মাশআল্লাহ, মামনী দেখি ভালই বড় হয়ে গেছে। সময় কত তাড়াতাড়ি চলে যায়
হ্যাঁ সৌরভ ঠিকই বলেছো,সময় দ্রুতই চলে যাচ্ছে।