প্রিয় হাইভ বন্ধুরা,সবাইকে শুভেচ্ছা। আশা করি সবাই সুস্থ এবং ভালো আছো। অনেকদিন পর আবার তোমাদের মাঝে ফিরে আসলাম। ব্যস্ততার কারণে অনেকদিন এই কমিউনিটিতে আসা হয়নি। আজ আমি তোমাদেরকে আমার ছোট এবং সাধারণ একটি স্বপ্ন এবং সেই স্বপ্ন পূরণের গল্প শোনাব।
মানুষ তার স্বপ্নের চেয়েও বড়। কোন এক মনীষীর উক্তি এটি। স্বপ্ন এবং মানুষের বেঁচে থাকা সমার্থক। স্বপ্ন আছে বলেই আমরা বেঁচে আছি।পৃথিবীতে এমন কোনো মানুষ নেই যে স্বপ্ন দেখেনা। শিক্ষকতা আমার পেশা।এ পেশার মাঝে আমি দারুণ আনন্দ খুঁজে পাই। আমি বিশ্বাস করি পৃথিবীর মহৎ পেশা গুলির মধ্যে শিক্ষকতা অন্যতম। একারণেই শিক্ষকদের মানুষ গড়ার কারিগর বলা হয়ে থাকে। শিক্ষকতা পেশার পাশাপাশি অন্য কিছু একটা করার ইচ্ছা মনের মধ্যে সবসময় কাজ করতো।
চাকরি জীবনে আমার প্রিয় সহকর্মী জনাব আবু সাইদ উনার সাথে সব সময় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলাপচারিতা হয়। উনি একদিন বললেন একটি ছাগলের খামার করা যায় কিনা? সেটি নিয়ে পরবর্তীতে বেশ চিন্তা ভাবনা করি এবং একটি সম্ভাব্য স্থান ও নির্ধারণ করি যেখানে একটি আদর্শ ছাগলের খামার প্রতিষ্ঠা করা যায়। পরবর্তীতে আমাদের আরো কিছু সহকর্মীর সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করি।উনারা তাতে বেশ আগ্রহ প্রকাশ করে। মোটামুটি আমরা ছয় জন, প্রতি জন ২ লক্ষ টাকা করে প্রায় ১২ লক্ষ টাকার মতো বিনিয়োগ করার চিন্তা ভাবনা করি।
ঠিক এমন সময় আমার সহকর্মী জনাব আবু সাইদ
নতুন একটি আইডিয়া দেন। সেটি হল বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষ। বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষ আমাদের দেশে মোটামুটি নতুন কিন্তু অতি অল্প সময়ে এটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো অতি অল্প জায়গায় অধিক পরিমাণে মাছ উৎপাদন করা যায়। বিশেষ করে তেলাপিয়া, কৈ, শিং, মাগুর, পাংগাস, টেংরা ইত্যাদি।
যেই ভাবনা সেই কাজ। বায়োফ্লক পদ্ধতিতে কিভাবে মাছ চাষ করা হয় এ নিয়ে ইউটিউবে বিভিন্ন ভিডিও দেখে এবং নেট থেকে এ বিষয়ে বিভিন্ন বই-পুস্তক, জার্নাল সংগ্রহ করে মোটামুটি ভালভাবে স্টাডি করা শুরু করলাম। প্রায় দুই মাস এই বিষয়ে জানার চেষ্টা করলাম এবং আমিও আমার কলিগ আবু সাইদ এ বিষয়ের উপর একদিনের একটি প্রশিক্ষণ কর্মশালায় ও অংশ গ্রহণ করলাম। সেখানে আরও বিস্তারিত জানলাম কিভাবে ট্যাংক সেটআপ করতে হয়, মাছ চাষ করতে হয় এবং মাছের রোগ ব্যাধি সম্পর্কে। এবার আমরা সিরিয়াস হলাম।
শহরে আমাদের প্রায় সাত কাঠার মত জায়গা আছে। এর মধ্যে দুই কাঠায় আমাদের সেমিপাকা ঘর এবং সামনে প্রায় পাঁচ কাঠারর মত খালি জায়গা রয়েছে। তাই চিন্তা করলাম এই খালি জায়গাতেই আপাতত দশ হাজার লিটার পানি ধারণ ক্ষমতার একটি ট্যাংক প্রস্তুত করে মাছ চাষ করা শুরু করবো। পরিকল্পনা মতো আমরা কাজ শুরু করলাম। আমার কলিগ আবু সাঈদ একদিন এসে আমাদের জায়গাটি ভিজিট করে গেলেন।
বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষ কয়েক পদ্ধতিতে করা যায়। তারপলিন দিয়ে ট্যাংক তৈরি করে অথবা সিমেন্টের পাকা ট্যাংক তৈরি করে করা যায় । তবে তারপলিন ট্যাংক দ্বারা মাছ চাষ করতে গেলে কিছুটা ঝুঁকি থেকে যায় কারণ ইঁদুর এর ক্ষতি করতে পারে।তাই সিদ্ধান্ত নিলাম সিমেন্টের ট্যাংক তৈরি করে মাছ চাষ করা শুরু করবো। এজন্য প্রথমে একটি স্থান নির্ধারণ করলাম। তারপর একজন রাজমিস্ত্রির সাথে কথা বলে আমাদের ডিজাইন মত একটি পাকা গোলাকার সিমেন্টের ট্যাংক তৈরি করে দিতে বললাম। তার সাথে চুক্তি হলো দশ হাজার টাকায় সে এ ট্যাংক তৈরি করে দিবে। রাজমিস্ত্রি আমাদেরকে প্রয়োজনীয় ইট, বালি, সিমেন্টের হিসাব করে যা যা লাগবেঃ কিনে দিতে বললেন। আমরা সব কিছু কিনে দিলাম । শুরু হল আমাদের স্বপ্নের পানে ছুটে চলা। স্বপ্নের বাকিটা ধারাবাহিকভাবে তোমাদের সাথে পরবর্তী পর্বগুলোতে শেয়ার করবো ইনশা-আল্লাহ।
![IMG_20200829_162552.jpg](
Congratulations @shafi81! You have completed the following achievement on the Hive blockchain and have been rewarded with new badge(s) :
You can view your badges on your board And compare to others on the Ranking
If you no longer want to receive notifications, reply to this comment with the word
STOP
To support your work, I also upvoted your post!
Do not miss the last post from @hivebuzz:
শিক্ষকতা পেশাকে আমি অনেক সম্মান করি। আপনারা আছেন বলেই, আজ হাজারো যুবক এগিয়ে যাচ্ছে সঠিক পথে। যাই হোক, বায়োফ্লোক পদ্ধতিতে মাছ চাষ এটি নতুন হলেও একদিন পুরোতন হবে আশা করা যায়। আমাদেরও অনেক ইচ্ছা উন্নত মাছ চাষ করা। পুকুরে মাছ চাষ করে লাভবান হওয়া অনেক দূস্কর। যাই হোক, পোষ্ট লেখালেখি অনেক সুন্দর ছিলো।
আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
ভালো থাকবেন।