বছর ঘুরতে না ঘুরতেই ঈদ এর দেখা। আনন্দ , ফুর্তি সব কিছুর যেন বন্যা লেগে যায় সেই ঈদ এর সময়। আজ কোরবানির ঈদ। চারিদিকে শুধু গরু আর গরু। সকালে নামাজ শেষ করে বের হতে না হতেই দেখি সবাই গরু জবাই দেয়ার জন্য একদম প্রস্তুত হয়ে বসে আছে। শুধু হুজুর আসার অপেক্ষা। আজকে নামাজ শেষ হওয়ার পর কিছুক্ষণ গরু জবাই করে দেখে বাসায় এসেছিলাম। সত্যি , গরু গুলোকে দেখলে অনেক কষ্ট হয়। কি জানি , ওদের জন্য আলাদা একটা মায়া জন্মায়। আমাদের এইবার কোরবানি দেয়া হয়নি। ওই পারিবারিক সমস্যার কারণে। যাক ঐদিকে আমরা না যাই। এইবার কোরবানি দেয়া হয়নি বিধায় বাড়িতেও যাওয়া হয়নি। আর কোনো ঈদ ঢাকায় বসে বসে কাটানো , এর থেকে একঘেয়েমি আর কিছু আছে বলে আমার মনে হয়না।
আজকে সারাটা দিন এভাবেই ঘরের মধ্যে বসে বসেই কাটাবো। বন্ধুবান্ধবও নেই। সবাই তো এখন ব্যস্ত। যদি বিকেলে সময় হয় আরকি। আর যদিও বের হয় তাহলে বেশি একটা দূর যাওয়া হবে না। এমনিতেও আম্মু বাসা থেকে বেরই হতে দেয় না। আবার যদি শুনে দূরে কোথাও যাবো তখন ঘর থেকেই বের হতে নিষেধ করে দিবে। এইবার তো গরুর হাটেও যেতে দেয়নি আম্মু। আমাদের বন্ধু যারা আছে তারা প্রতিদিন হাটে যেত , এমনকি কালকে রাতেও সবাই মিলে হাটে গিয়েছে , আম্মুকে বলেছিলাম বলতে না বলতেই আব্বুকে কল দিয়ে বলে দিয়েছে। আরতো কোনো যাওয়ার সুযোগই নেই এখন ।
রোজার ঈদ আর কোরবানির এর সাথে যদি আপনি তুলনা করেন তাহলে সত্যি বলতে আমার কোরবানির ঈদকেই একটু বেশি ভালো লাগে। বিশেষ করে গরুর হাট । কোরবানির ঈদ এর আসল মজাই তো গরুর হাট। আমাদের বাসা থেকে কিছুদূরেই একটা হাট বসে। তুলনামূলক হাটটা অনেক বড়ই। আমাদের বেশির ভাগ ওখানেই যাওয়া হয়। ঐদিন একটা ফ্রেন্ড মেসেজ দিয়ে বলছিলো রাতে সেখানে যাবো নাকি। ওরা গরু কিনবে। তাও রাত ১০ টায়। যাই হোক , ওদের গরুটা কাল দেখতে গিয়েছিলাম।ভালোই হয়েছে দেখলাম। সবাই বলছিলো টাকা অনুযায়ী ওদের গরু নাকি মাশাল্লাহ অনেক বড় হয়েছে। গরু দেখার পর মনে মনে ভাবি হয়তো এটাই হচ্ছে আঙ্কেল এর রাতের বেলা গরু কিনতে যাওয়ার আসল কারণ।
আজকে মনে কোনো আনন্দ নেই। আর অন্যদিকে যদি আজ গ্রামে হতাম তাহলে সম্পূর্ণ তার উল্টোটা হতো। হয়তো খাবার মতোও সময় হতো না আমার , সব থেকে বড় কথা হচ্ছে। আমাদের সব আত্মীয়ও স্বজন বেশির ভাগই গ্রামে ঈদ উদযাপন করে। সবাই যখন একসাথে একত্রে ঈদ উদযাপন করে তখন সত্যি অনেক আনন্দ হয়। কলেজ আর কয়েকদিন পরই খুলে যাবে। আর বাড়িতে গেলে এমনিতেও একদমই পড়া শুনা হয়না। এই মুহূর্তে এমন ভাবে পড়াশুনা থেকে বঞ্চিত থাকাটা মোটেও ঠিক হবে না। এইসব চিন্তা ভাবনা করেই আর যাওয়া হয়নি।