আচ্ছালামু আলাইকুম। সবাই কেমন আছেন আশা করি মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ কৃপায় আপনারা সবাই ভালো আছেন।
মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের সৃষ্টি করেছেন তার ইবাদত করার জন্য। আমাদের উচিত শুধু তারই ইবাদত করা। মহান আল্লাহ তায়ালা কিছু বিশেষ মুহুর্তের ইবাদত বেশি পছন্দ করেন। এর মধ্যে জিলহজ মাসের প্রথম দশটি দিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জিলহজ হিজরি বর্ষের সর্বশেষ মাস। এই মাসের প্রথম দশ দিনের আমলগুলো মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে সবচেয়ে বেশি প্রিয়। এই দশদিনের আমলগুলো মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে জিহাদের চেয়েও বেশি প্রিয়। জিলহজ মাসের এই দশ দিনের আমলগুলো আল্লাহ তায়ালার কাছে অধিকতর পছন্দ হওয়ার কারণ হলো আল্লাহ তায়ালা সকল মৌলিক ইবাদতের সমন্বয় করেছেন জিলহজ মাসের প্রথম দশ দিনে। এই দশ দিনের মৌলিক ইবাদতগুলো হলো সালাত, নফল রোযা, সাদকা, কুরবানি, হজ্ব, যে মৌলিক ইবাদতগুলোর সমন্বয় অন্য কোনো মাসে পাওয়া যায়না।
মহানবি হযরত মুহাম্মদ (স.) জিলহজ মাসের প্রথম দশ দিনে যে আমলগুলো করতে উৎসাহিত করে গেছেন:
- মহানবি হযরত মুহাম্মদ (স.) আমাদের জিলহজ মাসের প্রথম দশ দিনে বেশি বেশি নফল ইবাদত করতে উৎসাহিত করে গেছেন। তাই আমাদের জিলহজ মাসের প্রথম দশ দিনে ফরজ ইবাদতগুলোর পাশাপাশি বেশি বেশি নফল ইবাদত করতে হবে।
- তিনি আমাদের তাহমিদ, তাহলিল, তাকবির দিয়ে জিলহজ মাসের প্রথম দশটি দিন মুখরিত করে রাখতে আদেশ করে গেছেন। তাই আমাদের জিলহজ মাসের এই দশ দিনে সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, লা ইলাহা ইলাল্লাহ, আল্লাহু আকবার - এই তাসবিহগুলো বেশি বেশি পাঠ করতে হবে।
- জিলহজ মাসের ৯ তারিখের নফল রোযা অর্থাৎ আরাফার রোযা রাখতে মহানবি হযরত মুহাম্মদ (স.) উৎসাহিত করে গেছেন। মহানবি (স.) প্রতিজ্ঞা করেছেন এই আরাফার রোযার মাধ্যমে মহান আল্লাহ তায়ালা বিগত ১ বছর এবং পরবর্তী এক বছরের সকল পাপ ক্ষমা করে দিবেন (সুবহানাল্লাহ)। কাজেই আমাদের প্রত্যেকের উচিত জিলহজ মাসের ৯ তারিখে আরফার রোযা রাখা। তবে কোনো ব্যাক্তি চাইলে জিলহজ মাসের প্রথম দশ দিন ব্যাপি নফল রোযা রাখতে পারেন।
- জিলহজ মাসের ৯ তারিখ ফজরের সালাত হতে জিলহজ মাসের ১৩ তারিখ আসর সালাত পর্যন্ত আমাদের ওয়াজিব তাকবির দিতে হয়। এই দিনগুলোতে প্রত্যেক সালাতের পর আমাদের ওয়াজিব তাকবির দিতে হবে।
- জিলহজ মাসের প্রথম দশ দিনে মহানবি (স.) আমাদের হাতের চুল এবং নখ কাটতে নিষেধ করে গেছেন।
- জিলহজ মাসএর প্রথম দশ দিনে মহানবি (স.) বেশি বেশি কুরআন মাজিদ তিলাওয়াত করতে উৎসাহিত করে গেছেন।
- মহানবি (স.) এই দশ দিনে আমাদের আল্লাহ তায়ালার নিকট বেশি বেশি দোয়া করতে উৎসাহিত করে গেছেন।
জিলহজ মাসের প্রথম দশ দিনের ইবাদতগুলো যেহেতু মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে অধিকতর প্রিয় সুতরাং, আমাদের উচিত এই দশ দিনে বেশি বেশি নফল ইবাদত করা, বেশি বেশি আল্লাহ তায়ালার শুকরিয়া আদায় করা এবং রাসুল (স.) এর নির্দেশিত আমলগুলো করা। আমাদের উচিত আমাদের আল্লাহ তায়লাকে খুশি করার এই সুযোগ হাতছাড়া না করা।