আমি অর্নাস দ্বিতীয় বর্ষে পড়ুয়া একজন ছাত্র। কলেজের দিন গুলো খুব ভালো ভাবেই যাচ্ছিলো।আমি থাকি মেসে।গ্রামের বাসা শহরে থেকে বেশ দুরে।তাই তেমন গ্রামের বাসায় যাওয়া হয় না।পড়াশোনায় বেশ ভালোছিলাম।তাই বাবা-মা শখ করে শহরের কলজে র্ভতি করে দিয়েছেন।আমারও ইচ্ছা ছিলো শহরে পড়াশোনা করার।যাক সব মিলিয়ে আমার দিন গুলো ভালোই যাচ্ছিলো।
কলেজে দেখতাম আমার অনেক বন্ধুরা প্রেম ভালোবাসা করতো।আমি শুধু দেখেই যেতাম।কিন্তু আমার ওসবে ইচ্ছা ছিল না।পড়াশোনায় বেশি মনোযোগ দিতাম।
মেয়েদের থেকে যতটা সম্ভব দুরে থাকতাম।
কারন আমার মাঝে ভ্রান্ত ধারনা ছিল যে আমি যদি প্রেম ভালোবাসায় জরিয়ে যাই তাহলে আমার পড়াশোনা হবে তো??আমাকে নিয়ে আমার বাবা মায়ের স্বপ্ন পূরন হবে??
তাই এইসব ভেবে পড়াশোনায় বেশি মনোযোগ দিতাম।আর মেয়েদের থেকে যথাসম্ভব দুরেই আমার অবস্থান ছিল।
কলেজে যাই ক্লাস করি মেসে আসি।বিকেলে বন্ধুদের সাথে ঘুরে বড়াতাম।
হঠাৎ একদিন কলেজে গিয়ে এক মেয়ের সাথে পরিচয় হল আমার।
তারপর থেকে আমি একটু করে মেয়েদের সাথে কথা বলতাম।
একটি মেয়ে ছিলো নাম-শিমা।
শিমা ছিলো দেখতে অনেক সুন্দরী একটা মেয়ে।
পড়াশোনায় মোটামুটি ভালোই বলা ছিলো।
আমি একসময় শিমার সাথে ফ্রি হয়ে গেলাম।
আমরা দুইজন দুজনকে সব কথায় বলতাম।
একটা সময় এই রকম হলো যে শিমার সাথে কথা না বলে থাকতেই পারতাম না।
একদিন ভাবলাম আমার ভ্রান্ত ধারনা কোথায় গেল??আমি এই সব কি করছি??
কিন্তু কথা না বলে কিছুতে থাকতে পারি না।এমন কি শিমাও আমার সাথে কথা না বলে থাকতে পারে না।
শিমার প্রতি আমার ভালো লাগার সময় শুরু হলো।
দিন যায় রাত যায়।শিমার সাথে কথা বলা বাড়তেই থাকে।
আমি শিমার প্রতি দূর্বল হয়ে যেতে লাগলাম।
কিন্তু আমি জানি না যে শিমা আমাকে ভালবাসে কি না।কখনো জানার চেষ্টা করি নি।
শিমা কোথাও গেলে আমাকে সাথে নিয়ে যায়।তাই মোটামুটি শিওর ছিলাম যে শিমার কোন বয় ফ্রেন্ড নেই।
আর এইদিকে তো আমি শিমার প্রতি পাগল প্রায়।
কিন্তু আমি শিমা কে আমার ভালবাসার কথা গুলো বলার সাহস পাচ্ছি না।
নিজের ভিতরে শিমার জন্য অনেক ভালোবাসা জমে আছে আর কত কথাই না যেগুলো বলতে তো চাই কিন্তু বলা হয়ে উঠে না।
এখন আর আমি বিকালে বাহিরে যায় না।
কারন মাঝে মধ্যেই শিমার সাথে কলেজ ক্যাম্পাসে বসে গল্প করতাম।
আর এইসবের কারনে পড়াশোনার নাজেহাল অবস্থা।টেস্ট পরিক্ষায় রেজাল্ট ভালো হয়ে নি।বাবা মা আমার রেজাল্ট জানতে চাইলে আমি মিথ্যা বলি।
সেই দিন আমি সারারাত ঘুমাতে পারিনি।এই প্রথম মা বাবা কে মিথ্যা বললাম।সুয়ে সুয়ে ভাবতেছি কি হচ্ছে এই সব?? আর এই ভাবে থাকা যায় না।
যা হয় হয়ে যাক আমি আমার মনের কথা টা শিমা কে বলেই দিবো।
তাই আমি ঠিক করলাম যে শিমা কে ডেকে আমার সব কথা বলবো।আমার মন বলছিলো যে শিমা রাজি হবে।ওর তো কেউ নেই।কেনই বা রাজি হবে না?? আমিইতো ওর সব।
তাই দেরি না করে শিমা কে ফোন দিলাম।বললাম যে শিমা তোর সাথে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা আছে দেখা করতে পারবি কালকে??
শিমা--না রে! কালকে সময় হবে না।কয়েকদিন আমি একটু বিজি।
আমি--আচ্ছা ঠিকছে,কিন্তু ফ্রি হলেই বলিস।
শিমা-- আচ্ছা ঠিকাছে।
দুইদিন পার হয়ে গেল কোন কথা হয় নি।শিমাও ফোন দেয় নি।
তৃতীয় দিন শিমার ফোন--কিরে বেঁচে আছিস তো??
আমি--অনেক আশা ভরসা নিয়েই তো বেঁচে আছি।
শিমা --ওসব বাদ দে।তুই না বলছিলি তুই আমার সাথে দেখা করবি??কবে??
আমি--আনন্দের সহিত বললাম যে কালকেই দেখা করি তাহলে??
শিমা --না রে পরসু তাহলে।কালকে আমার সময় হবে না।তবে তোর জন্য স্পেশাল সারপ্রাইজ আছে।অপেক্ষা কর।
আমি--কি সারপ্রাইজ??
শিমা--বলা যাবে না তো দেখা হলেই বুঝতে পারবি
আমি-আচ্ছা বাবা আচ্ছা।
কথা বলা শেষ হলে আমি ভাবতে লাগলাম কি সারপ্রাইজ??আর কিসের জন্য?? তবে কি শিমাও আমাকে ভালবাসে?? সেটাই বলবে?
আমিতো সেই খুশি।কি করি আর না করি।
পরসু দেখা করতে যাব তাই এক বন্ধুর থেকে কিছু টাকা নিলাম।মাসের শেষে টাকা নেই পকেটে।
আমার জামা কাপর সব ধুয়ে স্ত্রী করে নিলাম।
রাতে মনে হল শিমা কে কিছু দিতে হবে।কি দেওয়া যায়?? তাই শিমার জন্য একটা হাত ঘড়ি কনলাম।সাথে গোলাপ ফুল।প্রতি গোলাপের মূল্য ৮ টাকা।পাঁচ টা গোলাপ নিলাম চঁল্লিশ টাকা দিয়ে।
যাক অনেক অপেক্ষার দিন শেষ হয়ে চলেছে আজকে।
রাতে ঠিক মতো ঘুম হয় নি।
সকালে গোছল করে রেডি হয়ে শিমা কে ফোন দিলাম।কোথায় তুই??
শিমা --বের হচ্ছি।তুই চলে আয়।
আমি-ওকে
যাওয়ার সময় কিছু চকলেট নিয়ে গেলাম।
গিয়ে দেখি শিমা আসে নি এখনো।
আমার চিন্তা শুধু কখন মনের জমে থাকা কথা গুলো বলতে পারবো।
অবশেষে শিমা আসলো।সাথে একটি ছেলে।
আমি ছেলে টাকে চিনি না।তাই ওতো ভাবলাম না।হতে পারে শিমার কোন রিলেটিভ।
শিমা কে দেওয়ার জন্য গোলাম গুলো হাতে নিয়েছিলাম তাই ছেলে কে দেখে হাতটা পিছনে নিলাম।
শিমার সাথে কিছু কথা বলে ভবলাম এখনি আমার মনের কথাটা বলবো।ঠিক সেই সময়..
শিমা--(আমার নাম রাসেল) এই রাসেল দেখ হি ইজ মাই বি এফ. তোর সারপ্রাইজ।
আমি-কথাটা শোনা মাত্রই বিশাল আকাশ টা যেন মাথায় ভেঙ্গে পরলো।
শিমা--তুই নাকি কি গুরুত্বপূর্ণ কি যেন বলবি??
আমি-- ভিতর আগুনে পুড়ে শেষ হয়ে যাচ্ছে সব কিছু।না কিছু না।
শিমা -- থাক তাহলে।অন্য দিন দেখা হবে।
আমি--কিছু না বলেই মেসে ফিরে আসলাম।
মেসে ফিরে দেখি গোলাপ ফুল টা চ্যাপ্টা হয়ে গেছে।
শিমার কথা গুলো শুনে মাথায় আকাশ ভেঙে পরাটাই স্বভাবিক।
যতটা সম্ভব শিমার সাথে কথা বলা কমিয়ে দিলাম।
শিমা--ফোন দেয়।ইচ্ছা হলে রিছিভ করি না হলে নেই।
শুনেছি কিছু দিন পর শিমার বিয়ে।আমার পড়াশোনা,খাওয়া দাওয়া সব কিছু যেন আসতে আসতে শেষ হয়ে যাচ্ছে।
আমিও আজও শিমা কে ভালোবাসি।
আমার সব টুকু ভালোবাসা শিমার জন্য।
কিছুতেই ভুলতে পারি না শিমা কে।
ধন্যবাদ।
নিজে ভালো থাকবেন।
অপরকে ভালো রাখবেন।
Hi! I am a robot. I just upvoted you! I found similar content that readers might be interested in:
https://chotybangla.blogspot.com/2014/03/blog-post_3.html
Congratulations @shofiqul346! You have completed the following achievement on the Hive blockchain and have been rewarded with new badge(s) :
You can view your badges on your board And compare to others on the Ranking
If you no longer want to receive notifications, reply to this comment with the word
STOP
Support the HiveBuzz project. Vote for our proposal!