সমাজ ও সংস্কৃতি নিয়ে ভাবনা

in BDCommunity5 years ago

হিন্দি সিরিয়ালের অন্ধ ভক্ত। হিন্দি সিরিয়ালে আর আগের মতো মজা নাই। একটি সময় ছিল টিভির রিমোটটা তারেই দখলে ছিল। স্টার প্লাস আর স্টার জলসা ছাড়া অন্য কোন চ্যানেল দেখা নিষিদ্ধ ছিল বলা যায়। এখন আর আগের মত তৃপ্তি পায় না। পর্বের পর পর্ব আসে, কিন্তু গল্পে মোড় আসেনা। রীতমত বিরোক্তকর হয়ে যাচ্ছে দিনকে দিন। দুই মিনিটের নাটককে টেনে দুই পর্বে নিয়ে যায় তারা। অসহ্য, জাস্ট শীট ! তবে এটা বুঝতে বুঝতে আবেক অনেক ক্ষয় করে ফেলেছে। মাঝে মাঝে এইসব দেখে অশ্রুও অনেক ক্ষয় করেছে।

এখন আর ভালো লাগছে না। একরাশ বিরক্তি নিয়ে বিছানায় গা শোয়াতে বেশ রাত হয়ে গেলো ডায়নার। আগামী পর্বে কি হতে পারে এই টেনশন নিয়েই একবার এপিঠ তো আরেকবার ওপিঠ। সেই ভাবনা ভাবতে ভাবতে একসময় গভীর ঘুমে চলে গেলেন। মাঝে মাঝেই ঘুমের মধ্যে কার্তিক কার্তিক করে চিল্লায় উঠে।

নাটকের কথা মাথায় ঘুরপাচ খেতে খেতে ঘুভটা একটু দেরিতেই ধরেছিল। ঘুম থেকে উঠে দেখেন সকাল সাড়ে দশটার ঘরে ঘন্টার কাটা। ধরপরিয়ে উঠলেন ডায়না। ঘুম থেকে উঠেই সোজা দৌড় দিলেন ওয়াস রুমে।

কোৎ দিচ্ছেন কিন্তু বেরুচ্ছে না। হালকা কোৎ দিয়ে ঝাড়ি মেরে, বেয়াদব ! বের হ ! কিন্তু, বের হলো না।

আজকাল এই হাগা নিয়ে তিঁনি বিরাট বেকায়দায় আছেন। কেন জানি তার একটু সমস্যা হচ্ছে। কুততে-কুততে ছাগলের নাদীর মতো দুই-তিন দানা বের হয়। তারপরেও চেষ্টা চালিয়ে যেতে যেতে ধ্যানে চলে গেলেন নাটকের। আজকে কি কার্তিককে পুলিশ ধরিয়ে নিয়ে যাবে? এমনটাই ভাবছিল। আবার নিছে নিজেই বলছিল কার্তিককে ফাসিয়ে দিল। কত্তবড় খারাপ। হঠাৎ করে নাটকের ধ্যান ভেঙ্গে নিজেকে আবিস্কার করলেন ওয়াসরুমে। নিজের রসিকতায় নিজেই হিহিহি করে হাসতে লাগলেন।

ওয়াসরুম হতে বার হতেই ঘড়ির কাটাটা এগারোটায় গিয়ে ঠেকেছে। অনেকদিন পর ডায়না বুঝতে পারলেন, যে এইসব নাটকের চক্করে ত্যাগে যে প্রকৃত সুখ সেটাও ভূলে গেছে। ওয়াসরুমে গিয়ে যে একটু স্বস্তির কোৎ দিবে তাতেও ঐ কার্তিকেরা চলে আসে।

ডায়না আজ থেকে পন করেছে না আর ভারতীয় সিরিয়াল দেখবে না। সেটা আসলে পারবে কিনা জানি না।

আমি অনেকদিন ধরে টিভি দেখা ছেড়েই দিয়েছি। তবে আগে দেখতাম। বাংলাদেশের নাটক টেলিফিল্ম অসাধারণ আমার কাছে মনে হয়। অতি রঞ্জিত কিছুই নেই। নাটক গুলোতে বাংলাদেশের সমাজ ব্যবস্থার বাস্তব চিত্রই ফুটে উঠে।

তারপরেও আমাদের দেশের নারীরা ভারতীয় সিরিয়ালে এতো আসক্ত কেন? তাদের এইসব উদ্ভোট ও কুটনিপনা সিরিয়াল দেখে ইয়ো ইয়ো প্রজন্ম গড়ে উঠেছে। ঘরে ঘরে এক একটা ভারতীয় চ্যানেল তৈরী হচ্ছে। চ্যানেলের নাটকগুলোর মধ্যে অধিক চাকচিক্য, খোলা মেলা পোশাক আভিজাত্যের দর্শনে বাঙ্গালির মধ্যে একধরনের বিলাসিতার বাসনা সৃষ্টি হচ্ছে। সমাজে তৈরী হচ্ছে অসহিষ্ণুতা আর ঘটছে নিত্যনতুন অপরাধ। একন শুধু সংসার ও অপরাধের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই এইসব সিরিয়াল। বাচ্চাদের পড়ার বই, খাতা, স্কুল ব্যাগ পর্যন্ত বাদ যায় নিই। লেখার খাতার কভারেও রয়েছে বিভিন্ন সিরিয়ালের নায়ক নায়িকাদের ছবি।

বিভিন্ন উৎসবে পোশাকেও ব্যপক প্রভাব বিস্তার করেছে। অনেক শিশু কিশোর সিরিয়ালের বিভিন্ন নায়িকাদের পোশাকের আবদার ধরে। না পেয়ে আত্মহত্যার মতো ঘটনা কম শুনা যায় না।
ধীরে ধীরে এরা গড়ে উঠছে ঐসিদের মত সন্তান হয়ে। সমাজে দেখা যায় বিশৃঙ্খলা।

20200714_114055.jpg

Sort:  

সমাজের অধঃপতন তাদের হাতেই।

আমাদের কি কিছুই করার নেই?

Congratulations @steemitwork! You have completed the following achievement on the Hive blockchain and have been rewarded with new badge(s) :

You distributed more than 300 upvotes. Your next target is to reach 400 upvotes.

You can view your badges on your board And compare to others on the Ranking
If you no longer want to receive notifications, reply to this comment with the word STOP

Do not miss the last post from @hivebuzz:

HiveBuzz supports the Austrian Community Meetup
Project Activity Update

অবশ্যই বেড়িয়ে আসতে হবে।