কাজির দেউরির মুক্ত মঞ্চে বসে চা খাচ্ছিলাম। আমি আর উনি। হঠাৎ একটা বাচ্চা এসে বলে, আপু, পাঁচটা টিয়া দেন।কিছু খামু"। আমার উনি, পকেট থেকে দশটাকার একটা নোট বের করে বাড়িয়ে দিল বাচ্চাটির দিকে। হয়তো আমাকে খুশি করতে বা হয়তো দয়া হয়েছিল বাচ্চাটির উপর।
Illustration by: https://www.facebook.com/%E0%A6%9F%E0%A7%81%E0%A6%95%E0%A6%9F%E0%A6%BE%E0%A6%95-105021541612899/
টাকাটা নিয়ে বাচ্চাটি চলে গেল।আমি তাকিয়ে রইলাম তার গন্তব্যের দিকে। ফুটপাতের চায়ের টং এ গিয়ে একটা বন নিল, কামড় বসাতেই মুখে একটা আনন্দ ছড়িয়ে পড়লো বাচ্চাটির। মুক্তমঞ্চের বসার সিঁড়ি গুলোর একপাশে কয়েকটি কুকুর ছানা খেলা করছিল।শরীর দেখে মনে হচ্ছিল খাবার খুব একটা পায় না। অযত্নে বড় হওয়া শিশুর শরীরই বা আর কেমন হবে; মাকেও দেখা গেল না আশেপাশে। হয়তো খাবারের সন্ধানে বেরিয়েছে কিংবা ক্ষুদার্থ সন্তানের ক্ষুদা মেটাতে না পেরে মুখ লুকিয়ে পড়ে আছে অন্য কোনো দিকে।
Original
বন খেতে খেতে বাচ্চাটি যখন এলো। একটি কুকুর ছানাকে স্নিগ্ধ হাসিতে কোলে তুলে নিল ।আর কি যেন কথা বলা শুরু করলো দুটিতে। দূর থেকে আমি সেটা বুঝতে পারলাম না। হয়তো সুখের হয়তো বা একটা সুন্দর সময়ের অপেক্ষার। তাই তাকিয়ে ছিলাম। তাদের দেখে মুগ্ধ হচ্ছিলাম বারবার।যখন বাচ্চটি তার কেনা বন থেকে একটা অংশ ছিড়ে বাচ্চা গুলোকে খাইয়ে দিতে শুরু করলো।মনে হচ্ছিল , হয়তো এর চেয়ে সুন্দর পৃথিবীতে আর কিছু হতে পারে না। ভাবতে ভাবতে আমিও এক অতল ভাবনায় ডুব দিচ্ছিলাম,জীবনের স্বার্থপর মানুষ গুলোর কথা ;যারা নিজের স্বার্থের জন্য অন্যকে শুধু ব্যবহার করে যায়। আর প্রতিদানে শুধু কষ্টই দিয়ে যায়। আর একটা রাস্তার ছোট বাচ্চা কতটা নিস্পাপ কত স্বার্থহীন হলে নিজের খাবারের কিছু অংশ কুকুর গুলোর মধ্যে বিলিয়ে দিতে পারে। সেটা আমাকে খুব ভাবিয়ে তুলে বারবার।হয়তো ভাবছি এখনো ভাবছি....