প্রায় বছর খানেক আগের কথা। খুব অদ্ভুত ভাবেই আমার পরিচয় হয় একজন অসাধারণ ভালো মানুষের সাথে। মানুষটার নাম সেন্টিন। সেন্টিন ভাই রাখাইন সম্প্রদায়ের লোক তিনি তবে খুব ভাল বাংলা বলতে পারেন। তবে এগুলো আমি পরে জানতে পেরেছি।একদিন বিকেলে আমার পরিচিত ভাইয়ের মাধ্যমে একটি অনলাইন গেইমে তার সাথে আমার পরিচয় হয়। গেইমটা খুব অপরিচিত গেইম নয় এটা ছিল পাবজি। প্রায় সকলেই জানেন এই গেমের সম্পর্কে। সেদিন তার সাথে পরিচয় হবার পর থেকেই শুরু হয় আমাদের প্রতিদিন একসাথে গেইম খেলা। আমাদের মধ্যে অন্য রকমের একটি সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রায় সারাদিনের বেশিরভাগ সময়টাই আমাদের গেমের ভেতরেই কাটতো। সাথে ছিল আমার পাশের বাড়ির এক ছোট ভাই। তিন জন মিলে করোনার মধ্যে একটা ভালো সময় পার করতাম আমরা।
এভাবে দিন যেতে যেতে আমাদের সম্পর্কটা অনেক বেশি গভীর হলে যায়। আমাদের একে অপরের জন্য বিশ্বাস অনেক বেশি বেড়ে যেতে থাকে। আমারা গেমের বাইরেও নিজেদের সাথে একটা ভালো সম্পর্কে চলে যায়। ভাইের বাড়ি কক্সবাজারের মহেশখালী ও আমার বাড়ি ঢাকায় । মহেশখালী আসলে একটা দ্বীপ যা কক্সবাজারের পাশেই অবস্থিত। ফলে সেখানে মিয়ানমারের বিভিন্ন রকম চকলেট, সাবান ও সামুদ্রিক মাছ ও শুটকি মাছসহ অনেক রকমের ঐতিহ্য সম্বলিত জিনিস পাওয়া যায়। যেগুলো তিনি আমাকে ঢাকায় পাঠানো শুরু করেন আমার জন্য। এগুলো আমি হাতে পেয়ে খুব আশ্চর্য হয়। কারন তিনি আমাকে খুব অল্প দিনে অনেক বেশি আপন বানিয়ে নিয়েছিলেন।
অতপর বেশ কিছুদিন যাবার পর ভাই আমাকে ও আমার পাশের বাড়ির ছেলেটিকে নিয়ে তার বাড়িতে ও কক্সবাজারে গিয়ে ঘুরে আসার আমন্তণ জানালেন। তিনি বললেল তোমরা এসে আমাদের মহেশখালী এলাকা ও কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত ভ্রমণ করে আসার জন্য আমন্ত্রণ জানায়। তিনি এর সাথে আরও বলেন যদি বাসে করে আসতে অসুবিধা হয় তাহলে বিমানে করে চলে আসতে। আমি অনেক বেশি শুনে খুব খুশি ও আনন্দিত হয়ে গেলাম কারণ আমার অনেকদিনের সখ ছিল কক্সবাজারের যাওয়ার এর সাথে আবার প্রথমবারের মতো বিমানে ভ্রমণের সুযোগ পেলে আর কি লাগে। তবে আমার পাশের বাড়ির ছেলেটি না করে দেয় তার পরীক্ষা থাকার কারনে। আর এদিকে আমাকে আমার মা একা ছাড়ার জন্য রাজি ছিলেন না। মা বলতে লাগলো কখনো সামনে দেখোনি সাথে থাকোনি তার সাথে এতটা বিশ্বাস করে একা গিয়ে কিছু একটা হয়ে গেলে তখন আমি কি করব?
এরপর আমি ভাবলাম আমার মায়ের কথাও ঠিক। তবে আমার ভাইয়ের প্রতি বিশ্বাস ছিল। তাই আমি আমার দুই বন্ধুকে রাজি করাই আমার সাথে যাবার জন্য। এরপর বাবা মা ও আমার বড় ভাইের সাথে কথা বালাই সেই ভাইয়ের সাথে। এরপর বাড়িতে সবাই রাজি হয় এবং যাওয়ার জন্য অনুমতি দেয়। অতপর ভাই আমাদের না বলেই ৩টি প্লেটের টিকিট কিনে পাঠিয়ে দেয় আমাকে না জানিয়েই। তখন আমি আরও বেশি অবাক হয়ে যায়। তাকে জিজ্ঞেস করলে সে বলে টাকা কিছু না ভালোবাসাটাই আসল চলে আসো তোমাদেরকে আমি সবকিছু ঘুরে দেখাবো। তাকে ধন্যবাদ জানানোর মত ভাষা আমার ছিল না তখন।
এরপরের দিন আমরা তিন বন্ধু মা কাছ থেকে বিদায় নিয়ে কক্সবাজারের যাওয়ার উদ্দেশ্য রউনা দিলাম। বাসে করে আমরা বিমানবন্দরে পৌছায়। তারপর চেক ইন করে বিমানের জন্য অপেক্ষা করি। আমাদের ওখানে অনেক সময় অপেক্ষা করতে হয়। আমাদের বিমান সকাল ১১ টায় ছাড়ার কথা থাকলেও তা দেরি করে ২টায় ছাড়া হয়। অতপর অনেক অপেক্ষার পর আমি আমার জীবনের প্রথমবারের মতো বিমানে ভ্রমণ করি। প্রায় ১ ঘন্টা যাএা করার পর আমরা কক্সবাজার বিমানবন্দরে অবতরণ করি। সেখানে আমাদের জন্য আগে থেকেই অপেক্ষা করছিলেন ভাই। আমাদের দেখে সে অনেক খুশি হন আমিও অনেক বেশি খুশি হই তাকে দেখে। অবশেষে তার সাথে দেখা হতে অন্যরকম একটা অনুভুতি হচ্ছিল আমার।
এরপরের ঘটনা আরেকটি ব্লগে আপনাদের সাথে শেয়ার করব। আজ এখানেই শেষ করছি। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। দেখা হবে পরের ব্লগে।
ধন্যবাদ সবাইকে
@troublemakerrr
Congratulations @troublemakerrr! You have completed the following achievement on the Hive blockchain and have been rewarded with new badge(s) :
Your next payout target is 3000 HP.
The unit is Hive Power equivalent because your rewards can be split into HP and HBD
You can view your badges on your board and compare yourself to others in the Ranking
If you no longer want to receive notifications, reply to this comment with the word
STOP
To support your work, I also upvoted your post!
Thanks a lot for the support and upvote!
You're welcome @troublemakerrr
Support us back and vote for our witness.
You will get one more badge and bigger upvotes from us when we notify you.
Done!