প্রিয়,
পাঠকগণ,
প্রখর রৌদ্রের পড়ে এমন মুশলধারার বৃষ্টি শুধু প্রকৃতি নয়,মনকেও একবারে শীতল করে তোলে। দুপুর থেকেই আবহাওয়ার এমন পরিবর্তন ভীষণ ভালো লাগছিল, তবুও মনের কোণে একটা ভয় কিন্তু বাসা বাঁধতে শুর করেছে।
ঠিক ধরেছেন ভয়টা "ইয়াসের"।ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডব প্রকৃতির কি অবস্থা করতে পারে অতীতে তার নিদর্শন অনেকেই দেখেছেন। আর আমফানের অভিজ্ঞতা তো এখনও স্পষ্ট। আমফান যেহেতু রাতের দিকে হয়েছিল তাই ঘরে বসে সেই মুহূর্তে বাইরের পরিস্থিতি বুঝতে পারিনি। আর বেশ কিছুদিন কারেন্ট না থাকায় টিভি বা মোবাইল ফোনে কোনো খবর পাইনি।
কিন্তু পরে সবটা ঠিক হলে জানতে পারলাম কি পরিমাণ ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছে মানুষকে। আর এইবার" ইয়াস" নাকি আমফানের থেকেও বেশি শক্তিশালী হচ্ছে, আর ঘণ্টায় গতিবেগ ও বেশি। শুনছি এবার নাকি দুপুরের দিকে এই ঘূর্ণিঝড় শুর হবে।
খবরে দেখলাম সরকারের পক্ষ থেকে যতটা সম্ভব মোকাবিলা করার ব্যবস্থা করা হয়েছে,বারংবার মৎস্যজীবিদের সতর্কবার্তা দিচ্ছে সমুদ্রে না নামার জন্য।বিদ্যুৎ বিভাগ ও নিজেদের কাজ করে চলেছে।
সত্যি বলতে করোনার কারণে মানুষ এমনিতেই যথেষ্ট ভীত সন্ত্রস্ত তার উপর আবার এই ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস।
যদিও আবহাওয়া দফতর বলেছে বুধবার দুপুর নাগাদ এই ঝড় শুরু হবে,বর্তমানে দীঘা থেকেও ৬২০ কিমি দূরে রয়েছে। অথচ আজ দুপুরে নিম্নচাপের জেরে যেটুকু ঝড় বা বৃষ্টি হলো, তাতে এটা স্পষ্ট যে "ইয়াস" কিন্তু কোনো সাধারণ ঘূর্ণিঝড় নয়।
দুপুরে খেয়ে উঠতে না উঠতেই বৃষ্টি পড়তে শুরু করলো, দৌঁড়ে গিয়ে ছাদ থেকে জামাকাপড় সরাতে সরাতেই হাওয়া ছাড়লো, সাথে শুরু হল মুশলধারায় বৃষ্টি।
আমাদের ছাদের নয়নতারা ফুল গাছটা একেবারে হেলে পড়লো, আর একটা পাথরকুচি গাছের টব পড়ে গেল। বাকি গাছ গুলো পড়েনি ঠিকই,তবে অমন হাওয়া আর ও কিছুক্ষন চললে কি হতো জানিনা।
সাদা রঙের একটা নাম না জানা ফুল গাছটাও বেঁকে গেছে।
ঘরে বসে জানালা দিয়ে বৃষ্টি দেখেছি, আর কিছু ছবিও তুলেছি, সেগুলো শেয়ার করলাম আপনাদের সাথে।
বেশ কিছুক্ষণ পরে বৃষ্টি থামলো,আকাশ কিছুটা পরিষ্কার হলো। আমি জানালার সামনে বসে বৃষ্টির পরের আকাশের ছবিও তুললাম।
(বৃষ্টির আগে ও পরে)-
যতক্ষণ বৃষ্টি হলো এক জায়গায় বসে বৃষ্টি দেখলাম। জানিনা কেন এর মধ্যে আমি একটা অদ্ভুত তৃপ্তি পাই, ভীষণ ভালোলাগে আমার।
বাইরে মুশলধারায় বৃষ্টি,জানালায় বসে থাকা, বৃষ্টির ছাঁট হালকা হালকা করে গায়ে এসে পড়া,আর সাথে নিজের পছন্দের গান। এর মত ভালোলাগা বোধহয় অন্য কিছুর মধ্যে নেই।আপনাদের বৃষ্টি কেমন লাগে নিশ্চয় জানাবেন।
(বৃষ্টির আগে ও পরে)-
যাইহোক,আকাশের অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে রাতে আবার বৃষ্টি হতে পারে। আর "ইয়াস"এর গতিবেগ যাতে ধীরে ধীরে কমে যায় সেই কামনা করছি, তাতে কিছু মানুষ ক্ষতির হাত থেকে বাঁচবে। সত্যিই বলছি আজকাল মনে হয় প্রকৃতি যেন আমাদের উপর প্রতিশোধ নিচ্ছে,নিজের ওপর হওয়া প্রত্যেকটি অপরাধের প্রতিশোধ।বোধহয় ভূল শোধরানোর সময়ও দেবে না।
তবুও আমাদের চেষ্টা করতেই হবে। সমস্ত রকম প্রতিকূলতা কাটিয়ে ওঠার। তাই বলছি সকলে সাবধানে থাকবেন। করোনা থেকে তো বটেই,পাশাপাশি ঘূর্ণিঝড়ের থেকেও। নিরাপদ জায়গায় থাকবেন।প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সাবধানে রাখবেন।🙏