প্রয়াত উপন্যাসিক হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত চলচ্চিত্র ‘দেবী’ নিয়ে আপত্তি তুলেছেন হুমায়ূনকন্যা অভিনেত্রী শীলা আহমেদ।
তার অভিযোগ, ছবিটি নির্মাণে লেখকের উত্তরাধিকারদের অনুমতি নেওয়া হয়নি। অভিনেত্রী জয়া আহসানের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ‘সি-তে সিনেমা’র ব্যানারে ছবিটি নির্মাণ করেছেন অনম বিশ্বাস।
২০১৫-১৬ অর্থবছরের সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত ছবিটির নির্মাণ প্রায় শেষের পথে। মাস দুয়েক পরই বাংলাদেশ ও দেশের বাইরেও ছবিটি মুক্তি দেওয়া হবে বলে জানা গেছে পরিচালক ও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের তরফ থেকে।
গত সোমবার ফেইসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে শীলা আহমেদ প্রশ্ন তোলেন, “কে ‘দেবী’ বানানোর অনুমতি দিয়েছে? আমরা চার ভাইবোন দিইনি। আমাদের চার ভাইবোনের অনুমতি ছাড়া কীভাবে এই সিনেমা সরকারি অনুদান পেল? কীভাবে এটি বানানো হয়ে গেল? কীভাবে এটা মুক্তি পাচ্ছে?”
তিনি আরও লিখেন, “আমাদের একশো শতাংশ আইনগত অধিকার আছে বাবার কোনও লেখা সিনেমা/ নাটক/ অনুবাদ হবে কিনা এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দেওয়ার।...আপনারা যদি হুমায়ূন আহমেদর লেখা নিয়ে নাটক-সিনেমা বানান, আপনাদেরও ১০০% দায়িত্ব আছে হুমায়ূন আহমেদের প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক উত্তরাধিকারের অনুমতি নেওয়া।”
বিষয়টি নিয়ে ছবিটির প্রযোজক জয়া আহসানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি। জানা গেছে, তিনি এখন চলচ্চিত্রের শুটিংয়ে ভারতে অবস্থান করছেন।
ছবিটির পরিচালক অনম বিশ্বাস স্বীকার করেছেন,ছবিটি নির্মাণের আগে হুমায়ূন আহমেদের পুত্র-কন্যাদের কারো কাছ থেকে অনুমতি নেওয়া হয়নি।
তবে লেখকের দ্বিতীয় স্ত্রী ও অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওনের কাছ থেকে অনুমতি নেওয়া হয়েছে বলে গ্লিটজকে জানান তিনি।
অনুমতি দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন শাওনও। খানিকটা ধোঁয়াশা রেখে এ অভিনেত্রী বলেন, “অনুমতি নেওয়াটা প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের কাজ।...আমি কী কোথাও লিখেছি, আমার পারমিশন নেয়নি।
আমি যতদূর জানি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের সবার কাছ থেকে অনুমতি নেওয়ার কথা। আমি এটুকু জানি। আপনাকে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জানিয়েছেন বললেন মাত্র, আমার কাছ থেকে পারমিশন নিয়েছে, তাহলে নিয়েছে।”
একজন আইনজীবী গ্লিটজকে জানান, হুমায়ূন আহমেদের অবর্তমানে তার বই থেকে চলচ্চিত্র করতে চাইলে তার সব উত্তরাধিকারের কাছ থেকেই অনুমতি নেওয়া উচিত।
তবে বইটি যদি নির্দিষ্ট কোনো উত্তরাধিকারের নামে কপিরাইট করা থাকে সেক্ষেত্রে সবার আগে তার অনুমতি নেওয়া জরুরি। তারপর বাকি উত্তরাধিকারদের সঙ্গে কথা বলে নেওয়া ভালো।
১৯৮৫ সালে অবসর প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত ‘দেবী’ বইটির কোথাও কোনো স্বত্বের নাম উল্লেখ নাই বলে নিশ্চিত করে প্রকাশনা সংস্থাটির ব্যবস্থাপক শাহারুল ইসলাম সুমন গ্লিটজকে বলেন, “বইয়ের মধ্যে স্বত্ত্ব উল্লেখ না থাকলে লেখকের নামেই স্বত্ত্ব হয়। সেক্ষেত্রে লেখক মারা গেলে লেখকের উত্তরাধিকার যারা আছেন তারাই স্বত্ত্ব পাবেন।”
প্রশ্ন উঠেছে লেখকের সব উত্তরাধিকারদের অনুমতি ছাড়া ছবিটি সরকারি অনুদান পেল কীভাবে?
চলচ্চিত্র অনুদান কমিটির অন্যতম সদস্য মামুনুর রশিদ গ্লিটজকে বলেন, “আপত্তিপত্রগুলো আসলে মন্ত্রণালয় দেখে। আমরা অনুদান কমিটির সদস্যরা চিত্রনাট্যটা দেখি। বিষয়টি নিয়ে আসলে তেমন কিছু বলতে পারছি না।”
This is the way now film industry going on