ভালবাসি_তাই
নিল : কি রে পেত্নী, কি করিস?
নিলীমা : (টেবিল থেকে মাথা তুলে) কিছু না।তুই এখানে কি করিস? কি চাস?
নিল : বেশি কিছু না, আমার সম্পদ চাই।
নিলীমা : তোর সম্পদ মানে।আমার কাছে তোর সম্পদ থাকতে যাবে কোন দুঃখে?
নিল : আছে আছে।
নিলীমা : কি?
নিল : এ্যাসাইনমেন্ট!
নিলীমা : ওহ্, সে তো এখনও হয় নি।হলে দিয়ে দিব।
নিল : বলিস কি মামা! 😨এখনও হয় নি?! কাল আমি কি জমা দিব?!!
নিলীমা : কাল কেন? তুই না বললি মঙ্গলবার তোদের গ্রুপ এর লাস্ট ডেট?
নিল : হ্যা, কিন্তু, আসলে,.....
নিলীমা : বুঝেছি.... নিজের এ্যাসাইনমেন্ট তো করতে পারিস ই না, ডেট টাও ঠিক মত বলতে পারিস না।
নিল : আসলে হইছে কি.... মানে ডেট টা চেন্জ হয়েছে, কিন্তু আমি তোকে বলতে ভুলে গেছি।😨
নিলীমা : হ্যা, ভুলবাই তো! সারাদিন মেয়েদের পিছন পিছন ঘুরেই কূল পাওনা! এ্যাসাইনমেন্ট এর ডেট কিভাবে মনে রাখবা?! 😒
নিল : আরে, কিসের মধ্যে কি! তুই তাড়াতাড়ি করে দে তো।বাসায় যাব।
নিলীমা : পারব না।আমার নিজের টা বাকি এখনও।
নিল : 😖নীলু প্লিজজজজজ কইরা দে....
নিলীমা : আজিব! আমারটা বাকি এখনও!
নিল : আমি জানি তুই পারবি দুইটাই করতে।তুই তো লক্ষী মেয়ে😝
নিলীমা : হয়েছে থাক! আর পাম মারা লাগবে না।এখন যা।কাল সকালে দেয়ার ট্রাই করব।বাট নো গ্যারান্টি!
নিল : ওকে 😛
এমন সময় নিলীমার মা ঘরে ঢুকলেন।
মা : কি রে নিল? আপা কেমন আছে?
নিল : ভাল খালা।তুমি কেমন আছ?
মা : এইতো ভাল।
নিল : আচ্ছা খালা, আমি এখন যাই।
মা : খেয়ে যা।
নিল : না খালা।আজ আর বসব না।গেলাম।
মা : সাবধানে যাস।
নিল : আচ্ছা।
এই বলে নিল বেরিয়ে গেল।নিলীমা বসল এসাইনমেন্ট রেডি করতে।দুই দুইটা এসাইনমেন্ট রেডি করা লাগবে।কিভাবে করবে কে জানে!
সারা রাত পার হয়ে গেল এসাইনমেন্ট শেষ করতে।সকাল ছয় টায় কমপ্লিট হল।এখন আর ঘুমানোর সুযোগ নেই।কি আর করার।রেডি হয়ে নাস্তা করে বের হয়ে গেল ভার্সিটির জন্য।ক্লাসে গিয়ে দেখে নিলয় আগেই চলে এসেছে।ও ঢুকতেই নিল হাসিমুখে এগিয়ে এলো।(ইশ্ ছেলেটা এতো সুন্দর করে কিভাবে হাসে?!)
নিলীমা ব্যাগ থেকে এ্যাসাইনমেন্ট টা বের করে নিলয় এর হাতে দিল।নিল হাসিমুখে বলল,
নিল : থ্যাংক ইউ পেত্নী!
নিলীমা কটমট করে তাকালো।নিল আবার ফিরে গেল আড্ডায়।
নিলীমা গিয়ে বসল সুহিনার পাশে।সুহিনা ওর বেস্ট ফ্রেন্ড।
সুহিনা : কি রে? তোকে এমন কেন দেখাচ্ছে?
নিলীমা : কেমন?
সুহিনা : কেমন যেন ফ্যাকাশে, ক্লান্ত!
নিলীমা : ওহ,রাতে ঘুমাই নি তো, তাই হয়তো।
সুহিনা : কেন?
নিলীমা : ওই যে এ্যাসাইনমেন্ট এর কাজ করতে করতে লেট হয়ে গেছে।
সুহিনা : নিশ্চয় নিলয় এর?
নিলীমা চুপ করে আছে।
সুহিনা : কি হল? চুপ করে আছিস কেন?
নিলীমা : হুম নিলয় এর।
সুহিনা : তুই কি রে? সে সারাক্ষণ তোর কাছে শুধু ধান্দায় ঘুরে, তোরে দিয়ে কি কি কাজ করানো যায় সেই ধান্দায়।আবার কাজ শেষ হলে সেই ফাইজার পেছন পেছন ঘুরে।তোর তো একটা খবর ও রাখে না।তাও তুই সেই ইডিয়ট টার জন্য রাত জেগে এ্যাসাইনমেন্ট করে দিস! এতো ভালবাসা আসে কোথা থেকে আমি সেটাই বুঝি না!!!
নিলীমা : উফ্, আস্তে! তুই চুপ করবি?!
সুহিনা : হ্যা, চুপ ই তো আছি।তুই আর কিছু বলতে দিলি কই।না নিজে কিছু বলিস, না আমাকে কিছু বলতে দিস।একদিন দেখবি ওই ফাইজা ওকে চুরি করে নিয়ে যাবে।
নিলীমা : (হেসে) চুরি করে কি নিবে।ও তো ফাইজার ই।আই মিন নিলয় তো ফাইজাকেই পছন্দ করে।
সুহিনা একটা ভেংচি দেয়।এরই মধ্যে ক্লাস এ সার ঢুকেন।সবাই যে যার জায়গায় বসে পড়ে।ক্লাস শুরু হয়।
নিলীমা রিকশা করে বাসায় যাচ্ছে।উফ্ খুব ক্লান্ত লাগছে।মনে হচ্ছে রিকশায় ই ঘুমিয়ে পড়বে।না না, রিকশায় ঘুমানো যাবেনা।বাসায় গিয়ে ফ্রেশ হয়ে একটা লম্বা ঘুম দিবে।
পরের টুকু ইতিহাস