সুন্নীয়তের আপন তথা মহান রাহবারগণ একটা সময় পর্যন্ত প্রাণাধিক প্রিয়নবীর শানে "মিলাদ" শব্দটি ব্যবহার করেছেন এবং এখনও করছেন ।
"মিলাদ" শব্দটি সুন্নী ভাইবোনদের হৃদয়ে প্রাণাধিক প্রিয়নবীর প্রেমেরই বহিঃপ্রকাশ । কিন্তু এই সময়ে ওহাবী-শিয়া-মওদুদী তথা বাতেল ফেরকার অনুসারীরা "মিলাদ" শব্দের বিকৃত অর্থ প্রাণাধিক প্রিয়নবীর শানে সর্বত্র ব্যবহার করছে । যা প্রতিটি সুন্নী ভাইবোনদের হৃদয়ে আঘাত । বিভিন্ন অভিধানে "মিলাদ" শব্দের একাধিক অর্থ উল্লেখ আছে । যা সর্ব সাধারণের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয় ।
মিলাদ, মাওলেদ ও মাওলুদ -এ তিনটি শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো জন্মদিন-জন্মকাল-জন্মস্থান । বিখ্যাত "আল-মনজিদ" নামক আরবী অভিধানের ৯১৮ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করা হয়েছে "মিলাদ" অর্থ জন্মসময় । "মাওলেদ" অর্থ জন্মস্থান অথবা জন্মসময় । "মাওলুদ" অর্থ ছোট শিশু । একইভাবে "মিসবাহুল লুগাত" এর ৯৬৬ পৃষ্ঠায় মিলাদের অর্থ জন্মসময় বলা হয়েছে । ফরহাঙ্গে রাব্বানীর ৬১১ ও ৬১৬ পৃষ্ঠায় মিলাদের অর্থ জন্ম, জন্মদিন, মাওলিদ অর্থ ছোট শিশু বা নবজাতক বলা হয়েছে । আল-মিসবাহুল মুনীর, গিয়াসুল লুগাত, ফিরুজুল লুগাত, লুগাতে সরাহা ইত্যাদি আরবী অভিধানে "মিলাদ" এর অর্থ বলতে জন্মদিন বা জন্মসময় কে বুঝানো হয়েছে ।
সূরা নূর, ৬৩ নং আয়াতে বলা হয়েছে: "তোমরা পরষ্পর নিজেদের যেভাবে অভিহিত কর (অর্থাৎ সর্ব সাধারণের জন্য যে ভাষা-শব্দ যেমন: জন্ম-মৃত্যু ইত্যাদি ব্যবহার করা হয় ) আল্লাহর মহান রাসুলের শানে সেভাবে করবে না" ।
প্রাণাধিক প্রিয়নবীর শানে মানবিক শব্দ ব্যবহারের নির্দেশনা পবিত্র কোরআন শরীফে নেই বরং নিষেধ আছে ।
প্রাণাধিক প্রিয়নবীর শানে "ঈদে মিলাদুন্নবী" থেকে "ঈদে আজম" সর্বত্তোম এবং "ঈদে আজম" থেকেও মোবারক শব্দ পেলে তা গ্রহণ করাই প্রাণাধিক প্রিয়নবীর আপনত্ত্বের পরিচয় ।
আমাদের পূর্বেকার সম্মানিত বুজর্গানেদ্বীন এবং এই সময়ের সম্মানিত বুজর্গানেদ্বীন ও রাহবারগণ "মিলাদ" শব্দ প্রাণাধিক প্রিয়নবীর শানে যথার্থ অর্থে ব্যবহার করেছেন এবং করছেন । কিন্তু ওহাবী-শিয়া-মওদুদী তথা বাতেল ফেরকার অনুসারীরা বিভিন্ন অভিধান হইতে "মিলাদ" শব্দের বিকৃত অর্থ প্রাণাধিক প্রিয়নবীর শানে সর্বত্র ব্যবহার করছে । এইধারা চলমান থাকলে বিভিন্ন অভিধানের "মিলাদ" শব্দের বিকৃত অর্থ প্রাণাধিক প্রিয়নবীর শানে সমার্থক হয়ে যেতে পারে ।
মুসলিম মিল্লাতের মহামান্য ইমাম "আল্লামা ইমাম হায়াত" পবিত্র "ঈদে মিলাদুন্নবী" কে পবিত্র "ঈদে আজম" হিসেবে ঘোষণা করেন এবং সম্মানিত বুজর্গানে আলেমেদ্বীন, পীর মাশায়েখ, ওলামায়েকেরাম এবং নির্বিশেষে সব সুন্নী ভাইবোনদের আহ্বান করেন, পবিত্র "ঈদে মিলাদুন্নবী" কে পবিত্র "ঈদে আজম" হিসেবে উদযাপন করার ।
বিশ্ব সুন্নী আন্দোলন ইউরোপ-আমেরিকা এবং পৃথিবীর বিভিন্ন শহরে পবিত্র ঈদে আজম শরীফ উদযাপন করছেন ।
মহান ঈদে আজম শরীফের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য সম্পর্কে মহামান্য "ইমাম হায়াত" বলেন: ঈদে আজম শরীফ উদযাপনের সর্বোচ্চ কর্মসূচী হতে হবে দ্বীনী মূল্যবোধ ভিত্তিক সার্বজনীন মানবিক রাষ্ট্রব্যবস্থা ও বিশ্বব্যবস্থা খেলাফতে ইনসানিয়াত তথা ধর্ম-জাতি-বিশ্বাস-আদর্শ নির্বিশেষে সব মানুষের অধিকার-স্বাধীনতা-নিরাপত্তা-রুটি রুজি-মর্যাদা-মালিকানার রাষ্ট্র ও বিশ্ব । মহান ঈদে আজমের দান পবিত্র কলেমার মর্মধারা রেসালাত কেন্দ্রিক তাওহীদ ভিত্তিক জীবন-চেতনা ব্যতীত যেমন আত্মার মুক্তি নেই তেমনি খেলাফতে ইনসানিয়াত ব্যতীত অপশক্তির গ্রাস থেকে অবরুদ্ধ সত্য, বিপন্ন জীবন ও বিধ্বংস মানবতার মুক্তির কোন পথ নেই।
লেখেছেন - Zahedul Alam
nice post