আমরা যখন সুস্থ থাকি তখন সব কিছু ঠিক থাকে।সেই সময় আমরা বুঝতে পারি না সুস্থতার গুরুত্ব। আমরা সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা বোধ করি না।আনন্দ উল্লাসে আপন খেয়ালে সময় কাটায়।কিন্তু আমাদের সুস্থতায় সামান্য বেঘাত ঘটলে বুঝতে পারি সুস্থতা জীবনের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
এই বছরটা আমাদের একদমই ভালো যাচ্ছে না। মানহার বাবা দিয়ে অসুস্থতা শুরু হয় আমাকে দিয়ে শেষ হয়।আগে থেকেই ঠিক করে রেখেছি কোরবানি ঈদে ভ্রমণ করবো।সেই পরিকল্পনা অনুসারে ঈদের পর দিন গেন্তিং গেলাম। কিন্তু গেন্তিং এর মেঘাচ্ছন্ন পরিবেশ আমাদের স্বাস্থ্যের সাথে মানায়নি হয়তো।ফিরে আসার পর মানহার বাবার ঠান্ডা লেগে জ্বর। দুই তিন দিন পর হঠাৎ আমার সুস্থ মেয়ের জ্বর চলে আসলো।আমি দেড়টার দিকে ওকে গোসল করিয়ে খাইয়ে ঘুম পারিয়ে নিজে গোসল করতে গেলাম।
অর্ধেক গোসল করার পরই দেখি দরজা নক করছে। দরজা খুলে দেখি ঘুম থেকে ওঠে দরজার সামনে বসে আছে। তাড়াতাড়ি কোলে নিয়ে দেখি ওর মাথা গরম। থার্মোমিটারে মেপে দেখি একশো। পাঁচ মিনিটে জ্বর বেড়ে একশো তিন। এমন সময় ওর বাবা বাসায় এসেছে দুপুরের খাবার খেতে। মেয়ের জ্বর দেখে সে আর দেরি না করে হাসপাতালে নিয়ে গেলো।
সেখানে যাওয়ার সাথে সাথে ডাক্তার সাপোজিটর দিয়ে দিলো জ্বর বেশি তাই ।এরপর জ্বর কমেছে। পরে ডাক্তার দেখে ঔষধ দিলো দুইদিনের একটা সিরাপ। বলেছে এটা খাওয়ানোর পর সেরে গেলো ঠিক আছে, নইলে আবার আসতে।
আলহামদুলিল্লাহ, আর যেতে হয়নি।কিন্তু পরদিন আমার ঠান্ডা লেগে গেল। কোন কারণ নেই। মানে এমন না যে অসময়ে গোসল করেছি কিংবা বৃষ্টিতে ভিজেছি কিংবা ঠান্ডা খেয়েছি। এমনিতেই হঠাৎ দেখি আমার ঠান্ডা। আচ্ছা ঠান্ডা লেগেছে এটা খুবই নরমাল একটা ব্যাপার। তা নিয়ে হইচই করার কিছু নেই।ওমা একদিন পর জ্বর। তাও ঠিক আছে ঔষধ খাইলাম। জ্বর চলে গেলো।
তবে সাময়িক সময়ের জন্য।
পুরোপুরিভাবে জ্বর যাচ্ছে না। মনে হচ্ছে বসতি পেতে বসেছে।যাওয়ার কোন নাম নেই। কি আর করা সে বসতি পেতে বসলেওতো আর আমার তাকে স্থায়ী হতে দেওয়া চলে না।তাই তাড়ানোর চেষ্টা তো করতেই হবে।তাই একটা ঠান্ডার ঔষধ খেয়ে নিলাম।এটা খাওয়ার পর আমার দুর্দশা দেখে কে।সর্দি চলে গেছে কিন্তু দুইটা নাকই ব্লক।আমি বুঝতে পারছি না যে আমার নাক আছে। আর এই নাক যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ এটা আমি তখন বুঝতে পেরেছি।হ্যাঁ সবার মতো আমি জানি নাক দিয়ে নিঃশ্বাস নিই।
কিন্তু এটা না থাকলে কি হবে কিংবা এর পাঁচমিনিটের অকার্যকারীতা কিভাবে আমার জীবনটা দুর্বিষহ হয়ে যাবে তা আমি কল্পনাও করতে পারিনি। বিকেল থেকে সমস্যা হচ্ছিল। যত সময় যাচ্ছে তত নাকের কার্যকারিতা কমে আসছে। আমি ভাবছি ঠিক হয়ে যাবে।
নাকে দেওয়ার ইনহেলার দিচ্ছি হচ্ছে না। সরিষার তেল দিচ্ছি হচ্ছে না। এক পর্যায়ে শুধু মুখ দিয়ে নিশ্বাস নিচ্ছি। এতো রাতে কি করবো না বুঝে মানহার বাবা ইউটিউবে ডাক্তারের পরামর্শ দেখে গরম মসলা আর আদা দিয়ে পানি গরম করে দিলো ভাপ নেওয়ার জন্য।আধা ঘন্টার মতো ভাপ নেওয়ার পর আমার নাক অল্প খুলেছে।এরপর রাত চারটায় আমি ঘুমাতে গেলাম।
যাইহোক দুইতিন দিনে আমি আলহামদুলিল্লাহ সুস্থ হয়ে গেছি।কিন্তু আমার ছোটো একটা কথা বলেছে যেটা ভেবে ভেবে আমার খুব মন খারাপ হচ্ছে।
আমি ছোটোকে বলছিলাম আমার দুই নাক ব্লক হয়ে গেছিলো তাই শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল। সে তখন বলছিলো যারা এ্যাজমা রোগী তাদের তো এভাবে দুই নাক বন্ধ হয়ে যায়। তাইতো ওরা হা করে নিশ্বাস নেয়।আহারে যাদের এ্যাজমা তাদের প্রায় প্রতিদিন নিঃশ্বাসে এমন সমস্যা। আমার এক ফুফুকে দেখেছি সপ্তাহের প্রায় প্রতিদিন এমনভাবে নিঃশ্বাস নেয়।কতো কষ্ট হয়।
আমি এতো দিন বুঝিনি তিনি কেনো বসে হা করে নিশ্বাস নিতেন। আজ বুঝে খুব কষ্ট পাচ্ছি। গরম মসলা আদা দিয়ে গরম পানির ভাপ নিলে সাময়িক শান্তি মিলে।তবে যাইহোক ডিজিটাল পৃথিবীর এটা একটা সুবিধা। রাতের বেলা টিপস নিয়ে আমি একটু শান্ত হতে পেরেছি।
Congratulations @shaonashraf! You have completed the following achievement on the Hive blockchain And have been rewarded with New badge(s)
Your next target is to reach 8000 upvotes.
You can view your badges on your board and compare yourself to others in the Ranking
If you no longer want to receive notifications, reply to this comment with the word
STOP
Check out our last posts: