শিবিরের সমর্থক হওয়ার জন্য সমর্থক ফরম আছে। কেউ শিবিরের লক্ষ্য উদ্দেশ্য ও কার্যক্রমকে সমর্থন করলে তিনি সমর্থক ফরমপূরন করে সমর্থক হতেপারেন। এরপরে কর্মী হওয়ার জন্য কিছু শর্ত রয়েছে সেগুলো পূরন সাপেক্ষে কর্মী হতেপারেন। শর্তসমূহ- যেসমর্থক সক্রিয়ভাবে দাওয়াতীকাজ করেন, কর্মী সভায় নিয়মিতভাবে যোগদান করেন, বায়তুলমালে এয়ানত দেন এবং ব্যক্তিগত রিপোর্ট রাখেন তাঁকে আমরা কর্মী বলে থাকি। একজন কর্মী সাধারণতঃ নিম্নলিখিত কাজগুলি করবেনঃ – কুরআন ও হাদীস নিয়মিত বুঝেপড়ার চেষ্টাকরবেন। – নিয়মিত ইসলামী সাহিত্য পড়বেন। – ইসলামের প্রাথমিক দাবীসমূহ মেনেচলার চেষ্টাকরবেন। – বায়তুল মালে নিয়মিত এয়ানত দিবেন। – নিয়মিত ব্যক্তিগত রিপোর্ট রাখবেন ও দেখাবেন। – কর্মীসভা, সাধারন সভা প্রভৃতি অনুষ্ঠানসমুহে যোগদান করবেন। – সংগঠন কর্তৃক অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করবেন। এরপর তিনি আরো অগ্রসর হলে তাকে সাথী মানে উন্নিত করা হতে পারে। সাথীহওয়ার শর্তসমূহঃ – সংগঠনের লক্ষ্য-উদ্দেশ্যের সাথে ঐক্যমত পোষণ করা। – সংগঠনের কর্মসূচী ও কর্মপদ্ধতির সাথে সচেতনভাবে একমত হওয়া। – ইসলামের প্রাথমিক দায়িত্বভার পালন করা। – সংগঠনের সামগ্রিক তৎপরতায় পূর্ণভাবে সহায়তা করার প্রতিশ্রুতি দেয়া। ‘সাথী’রা হচ্ছেন সংগঠিনের একটি পরিপূরক শক্তি। উপরে বর্ণিত দায়িত্বসমূহ নিষ্ঠার সাথে সুচারুরূপে পালন করে সংগঠনের প্রথম সারিতে (সদস্য পর্যায়ে) পৌঁছা একজন সাথীর নৈতিক দায়িত্ব। সাথী হতে হলে ‘সাথী’ হওয়ার জন্য আবেদন করতে হয় এবং তা কেন্দ্রীয় সভাপতি অথবা তার নিযুক্ত প্রতিনিধির নিকট পাঠাতে হয়। কেন্দ্রীয় সভাপতি বা তার প্রতিনিধি উক্ত কর্মী ‘সাথী হওয়ার উপযুক্ত বিবেচনা’ করলে তখন তাঁকে সাথী করে নেবেন। এরপরের স্তর হচ্ছে সদস্য। সদস্য হওয়ার শর্তসমূহঃ যখন কোন শিক্ষার্থী আমাদের এ সংগঠনের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে সম্পূর্ণরূপে আত্মসমর্পন করেন, যখন তিনি তার গোটা সত্ত্বাকে সংগঠনের সাথে মিশিয়ে দেন অর্থাৎ সংবিধানের ৪নং ধারার বর্ণিত শর্তসমূহ যথাযথভাবে পূরণ করেন তখন তাঁকে ‘সদস্য’ বলা হয়। সংবিধানঅনুযায়ী শর্তসমূহ নিম্নরূপঃ – সংগঠনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকে জীবনের লক্ষ্য উদ্দেশ্য হিসেবেগ্রহণ করা। – সংগঠনের কর্মসূচী ও কর্মপদ্ধতির সাথে পূর্ণ ঐক্যমত পোষণ করা এবং তা বাস্তবায়নের প্রচেষ্টায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করা। – সংবিধান মেনেচলা। – ফরয ও ওয়াজিবসমূহ যথাযথভাবে পালন করা। – কবিরা গুনাহ থেকে বিরত থাকা। – শিবিরের লক্ষ্য ও কর্মসূচীর বিপরীত কোন সংস্থার সাথে সম্পর্ক না রাখা। এছাড়াও একজন ‘সদস্য’কে অলিখিত বা ঐতিহ্যগত নিয়ম-শৃঙ্খলাসমূহ মেনেচলতে হয়। সদস্যরাই সংগঠনের মূল শক্তি। একটা ইমারত যেরূপ তার ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে থাকে, ভিত্তির মজবুতির উপর নির্ভর করে তদ্রুপ গোটা সংগঠন সদস্যদের সম্মিলিত শক্তির উপর দাঁড়িয়ে থাকে। তাদের মধ্যে শিথিলতা আসলে গোটা সংগঠনের উপর স্বাভাবিকভাবেই তার প্রতিক্রিয়া তড়িৎবেগে ছড়িয়ে পড়ে। সদস্যগণই হচ্ছে সংগঠনের আসল প্রতিনিধি। তাদের পরিচয়ই সংগঠনের পরিচয়। ঈমানের অত্যুজ্জ্বল আলোকে তাদেরকে উদ্ভাসিত হতে হয়। খোদাভিতির শক্তিতে তাদেরকে বলীয়ান হতেহয়। আখেরাতের সীমাহীন ও অমূল্য পুরস্কারের আকর্ষণে তাঁদের জীবনটাই হয় গতিশীল ও দুর্নিবার। তাঁদের চারিত্রিক মাধুর্যের মহৎ প্রভাবে সমাজে সৃষ্টি হয় আলোড়ন। সংগঠনের নির্দেশ যে কোন সময় যে কোন পরিস্থিতিতে আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে পালন করতে হয়, ত্যাগ- তিতিক্ষায় অগ্রগামী থেকে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হয়, জীবনকে প্রতিষ্ঠিত করতে হয় আল কোরআনের বাস্তব প্রতিচ্ছবি হিসেবে। ‘সদস্য’ হওয়ার পদ্ধতি সংবিধানের ৫নং ধারায় উল্লেখ রয়েছে। ‘সদস্য’ হওয়ার জন্য আবেদনপত্র কেন্দ্রীয় সভাপতি থেকে সংগ্রহ করতে হয়। কোন কর্মী ‘সদস্য’ হওয়ার আবেদনপত্র পূরণ করলে স্থানীয় সভাপতি বা এলাকার দায়িত্বশীল তাঁর মন্তব্যসহ কেন্দ্রীয় সভাপতির নিকট পাঠিয়ে দেন। আবেদনপত্র পূরণ করে পাঠানোর কিছুদিন পর কেন্দ্রীয় সভাপতি নির্দিষ্ট একটি ‘প্রশ্নমালা’ আবেদনকারীর নিকট পাঠান। আবেদনকারী তা পূরণ করে স্থানীয় সভাপতি বা এলাকার দায়িত্বশীলের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সভাপতির নিকট পাঠিয়ে দেন। কেন্দ্রীয় সভাপতি আবেদনকারীর আবেদন মঞ্জুর করেতাঁকে সংগঠনের সদস্যভুক্ত করেন। এখানে উল্লেখযোগ্য যে, সাংগঠনিক সুবিধার জন্যই জনশক্তিকে এরূপ বিভিন্ন পর্যায়ে বিভক্ত করা হয়েছে। এটি কোন শ্রেণী বিভাগ নয় বরং আদর্শ কর্মী তৈরির বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি মাত্র।
💜💜💜