নিঃষ্প্রান ভালবাসা (গল্প) পর্ব- 4

in #story6 years ago

তৃতীয় পর্বের পর ফিরে এলাম চতুর্থ পর্ব নিয়ে। ছোট বেলা থেকেই আমার একটু আধটু লেখার নেশা ছিলো। বেশ কিছু কবিতা লিখেছিলাম। হঠাৎ করেই মনে ইচ্ছা জেগেছিলো একটি গল্প লেখার। সেই কারনে আনারি হাতে কলম উঠেছিলো একটি গল্প লেখার নিমিত্বে।

গল্পের থিমটা মাথায় গেথে ছিলো অনেক দিন থেকে। পর্ব আকারে লিখেও ছিলাম। মোট 07 পর্ব লেখার পর আর লেখা হয়ে উঠে নাই। আজ ভাবলাম আবার শুরু করা যাক। যেটার শুরু করেছিলাম 2 বছর আগে, সেটা শেষ করাটা খুব দরকার। সেই কারনেই নতুন প্রত্যয়ে আপনাদের সাথে নিয়েই যাত্রা শুরু করলাম।

পর্ব - 4

এমন একটা সময় ছিল, তোমাকে নিয়ে স্বপ্নে গাঁ ভাসিয়ে নানা বন্দরে ভিরতো আমার জীবন নামের রঙ্গীন জাহাজটি।
যে বন্দরেই ভিরতাম সেখান থেকে একটু একটু স্বপ্ন আর রঙ্গীন ইচ্ছা সওদা করতাম। অনেক বোঝায় হয়ে যেত জাহাজটি। তবু তোমার ভালবাসার পালের জোড়ে হেলেদুলে তোমার রাজ্য পৌছালাম একদিন। দুরু দুরু বুকে পৌছে অবাক হয়ে দেখলাম! হাজার হাজার ফুলের মালা হাতে নিয়ে তুমি আমার জন্যই বুঝি দাড়িয়ে আছ।

সেদিন কিন্তু তোমার চোখের ভাষাটা দেখেই আমি বুঝেছিলাম, তোমার অপেক্ষাটাও ছিল আমার জন্যে।
তোমার কি মনে আছে? সেই ছোট আম গাছটির ছায়ায় আমাদের প্রথম আলাপ?
তুমি কথা বলছিলে আর আমি লজ্জা ভুলে তোমার চোখের দিকেই তাকিয়ে ছিলাম। তখন মনে হচ্ছিলো ওটাই প্রথম নয়, আরো অনেক বেশী দেখেছি তোমায়। একনিমেষেই বুঝতে পারলাম তুমিই আমার সেই দির্ঘ্য সময় ধরে একটু একটু করে বোনা স্বপ্ন।

তোমার কথাগুলো মধুরতায় ভরিয়ে তুললো আমাকে। আজ ধন্য আমার শ্রবনশক্তি সে তোমার কথা শুনেছে। চোখ দুটো প্রজ্জলিত তোমাকে দেখেছে বলে। তোমার চোখ দুটো আজিবনের জন্য বন্দি করে ফেললো আমাকে ঠিক তখন থেকেই। তোমার শরির থেকে বাতাসে ভেসে স্মেলটা পরিচিত হলো আমার সাথে।
couple-1822585_960_720.jpg
source
স্বর্গরাজ্য কাকে বলে আমি উপলব্ধি করতে পারছি। স্বর্গের সুখ যেন আমাদের দুজোনের চারপাশে এক সুখের রংধনু এঁকে দিলো। তুমি আমার দিকে বার বার তাকাচ্ছিলে আর লজ্জাতে বার বার নামিয়ে ফেলছিলে তোমার চোখ। লুকিয়ে লুকিয়ে অনন্তো কালের দেখা চলছিলো তোমার আমার। তোমাকে এতো বেশী সুন্দর লাগছি যে তোমাকে না বলে পারলাম না, একটা মানুষ এতো সুন্দর হতে পারে? তুমি লজ্জাতে লাল হয়ে গিয়েছিলে।
couple-690047_960_720.jpg
source
আচ্ছা তুমি আমার নামটি আগে থেকেই কিভাবে জানতে পেরেছিলে? অবাক সবার কথা ছিল আমার কিন্তু সেই সময়টা অবাক হওয়ার মুহুর্তো ছিলো না। আমি তোমাতে হারিয়ে গেছি ততোক্ষনে। দুজন মানুষের মাঝে যে দেয়াল থাকে সেটা নিমেষেয় অদৃশ্য হযে গেল। দুটি হৃদয় মিলে গেল একটি মাত্র বিন্দুতে।
..........................................

উফফফ। চোখের মধ্যে কি একটা গেল। চোখটা মুছে দেখলাম গাছগুলো সাইসাই করে ছুটে যাচ্ছে। ট্রেনটা খুব জোরে ছুটছে। দরজায় এভাবে দাড়িয়ে থাকাটা ঠিক হবে না। কামরার ভিতরে যেতে হবে। কিন্তু সেখানেতো অহনা আছে। ওকে খুব দেখতে ইচ্ছা করলো। আমি এগিয়ে গেলাম আমার সেই স্বপ্নটিকে দেখতে।

ট্রেনের সিটে বসে আছে অরন্য। মুখোমুখি বসে আছে অহনা। খুব সাহস করে একবার অহনার দিকে তাকালো অরন্য। অহনাও তাকিয়ে আছে তার দিকে। বুকের ভিতরটা কেমন যেন ধংসলীলা চালাতে লাগলো। চোখটা নামিয়ে নিল অরন্য। চোখ বেয়ে বাধ ভাঙ্গা জল গড়াতে লাগলো। চোখ মুছে আবার তাকিয়ে দেখতে পেল অহনার চোখেও জল। অরন্য ভয় পেল অহনার স্বামী কি সব দেখছে এই ভেবে অরন্য তার দিকে তাকালো এবং দেখলো সে অয়নের সাথে গল্প করছে। তার মনোযোগ সেই দিকেই আছে।

অরন্য তার ব্যাগটা কোলের উপর নিলো এবং সেখান থেকে তার প্রিয় ডায়রীটা বের করলো। সে ডায়রীটা খুলে দেখতে লাগলো। এর মধ্যে তার কিছু পুরনো সৃতি রয়েছে। এগুলো সবই অহনার দেয়া। আজ যে এভাবে অহনার সাথে দেখা হবে অরন্য সেটা কল্পনাও করতে পারেনি। সেই চোখ সেই দৃষ্টি যার দিকে তাকিয়ে অরন্য জীবনে কতবার নিজেকে হারিয়েছে তার ঠিক নেই। অহনা একেবারে আগের মতোই আছে। অবশ্য আগের থেকে আরো বেশী মিষ্টি হয়েছে দেখতে।
..................................................

ছোট্ট একটি ষ্টেশনে ট্রেনটি থামলো। অয়ন চকলেট খেতে বায়না জুরে দিল। ওর বাবা ওকে নিয়ে চকলেট কিনতে গেল।
কেমন আছ অরন্য? কান্না ঝরা কন্ঠে বললো অহনা। এতোদিন পর অহনার কন্ঠ শুনে নিজেকে সামলে রাখতে পারলো না অরন্য। আস্তে করে মাথা নাড়িয়ে বলল ভাল। তুমি কেমন আছ? এর কোন উত্তর দিতে পারলো না অহনা শুধু বলল কোথায় ছিল এতোদিন। তোমাকে কত খুজেছি। কোথাও তোমার খবর পর্যন্ত পাইনি। বল আমাকে কোথায় ছিলে? অরন্য কথা এড়িয়ে বললো তোমার স্বামী কি করে?

ও ব্যবসা করে। এলে তোমার সাথে পরিচয় করিয়ে দেব। অরন্য সাথে সাথে বলে উঠলো না এটা করবে না। বললে না তো কোথায় ছিলে এতোদিন। ছিলাম ছায়া হয়ে তোমার পাশে সব সময়। আর তোমাকেও রেখেছি আমার কাছে সবসময়। দেখতো এইটা চিনতে পার কিনা। ডায়রী থেকে একটি শুকনো গোলাপ বের করে বলল অরন্য। সেটা দেখে অহনা কেঁদে ফেলল। এগুলো এখনো সাথে থাকে তোমার? শুকনো একটা হাসি দিল অরন্য।

চলবে....

Sort:  

Congratulations!

This post has been upvoted from Steemit Bangladesh, @steemitbd. It's the first steemit community project run by Bangladeshi steemians to empower youths from Bangladesh through STEEM blockchain. If you are from Bangladesh and looking for community support, Join Steemit Bangladesh Discord Server.

If you would like to delegate to the Steemit Bangladesh, you can do so by clicking on the following links:

50 SP, 100 SP, 250 SP, 500 SP, 1000 SP.

YOU ARE INVITED TO JOIN THE SERVER!

Congratulations! This post has been upvoted from the communal account, @minnowsupport, by KAZI SHAON from the Minnow Support Project. It's a witness project run by aggroed, ausbitbank, teamsteem, someguy123, neoxian, followbtcnews, and netuoso. The goal is to help Steemit grow by supporting Minnows. Please find us at the Peace, Abundance, and Liberty Network (PALnet) Discord Channel. It's a completely public and open space to all members of the Steemit community who voluntarily choose to be there.

If you would like to delegate to the Minnow Support Project you can do so by clicking on the following links: 50SP, 100SP, 250SP, 500SP, 1000SP, 5000SP.
Be sure to leave at least 50SP undelegated on your account.

You got voted by @curationkiwi thanks to KAZI SHAON! This bot is managed by Kiwibot and run by Rishi556, you can check both of them out there. To receive maximum rewards, you must be a member of KiwiBot. To receive free upvotes for yourself (even if you are not a member) you can join the KiwiBot Discord linked here and use the command !upvote (post name) in #curationkiwi.