নীলিমা

in #story6 years ago

নীলিমা

নীলিমা হঠাত করে ছাদে চলে গেলো। কে ফোন দিলো

বুঝলাম না। কখনো তো ও এরকম করেনি। হঠাত করে কারো

ফোন পেয়ে ছাদে চলে যাওয়ার ব্যাপারটা আমার ভাল

ঠেকলো না।

.

আমি শুয়ে আছি বিছানাতে। নীলিমা রুমে এসে দরজা

বন্ধ করে এসে খাটে বসলো। ওর চোখে কেমন যেন একটা

ভীতি। মনে হচ্ছে কিছু একটা লুকাচ্ছে আমার কাছে। তাই

আমি কিছু না বলে ঘুমিয়ে পরলাম।

.

দুই বছর আট মাস যাবত আমাদের বিয়ে হয়েছে। এরেঞ্জ

ম্যারেজ হয়েছে আমাদের। নীলিমা দেখতে অনেক বেশি

সুন্দরী। তাই একটু ভয় হয় আমার। ওকে হারানোর ভয়।

আজকাল নীলিমা অন্যরকম থাকে সারাদিন। মন মরা করে

রাখে মুখটা।

.

নীলিমা খুব ভদ্র,শান্ত মেয়ে। ওকে আমি প্রচণ্ড

ভালবাসি। নীলিমা আমার পরিবারকে সব সময় খুব

হাসিখুশি রাখে। আমার আম্মু ওর সবচেয়ে কাছের বন্ধু।

মাঝে মাঝে আমি যখন মন খারাপ করে থাকতাম তখন

নীলিমা আমার সামনে বসে থাকবে।

তারপর আমি ওর সামনে থেকে সরে গিয়ে অন্যকোথাও

গিয়ে বসতাম। নীলিমাও পিছু পিছু গিয়ে আমার কলার

টেনে আবার আমাকে ওর সামনে বসিয়ে রাখবে। আমি

বিরক্ত হয়ে ওকে ধমক দিয়ে বলতাম...

-প্লিজ আমার এখন ভাল লাগছেনা। একা থাকতে দাও।

ধমক শুনে অভিমান করে চলে যেত আমার সামনে থেকে।

গিয়েই গুটিসুটি হয়ে শুয়ে পরতো বিছানাতে। কিছুক্ষন পর

যেতাম ওর রাগ ভাংগাতে।

ওকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরতাম। আর ও বলে উঠতো...

-ছাড়ো আমাকে।

-না। ছাড়বো না।

-আমার এখন ভাল লাগছেনা ছাড়ো।

-ছেড়ে দিবো??

-হুম।

-আর কখনো ধরবো না কিন্তু!

-ধরতে হবে না।

-আচ্ছা ছেড়ে দিলাম।

আমিও ওর সাথে রাগ করে বিছানার অন্য পাশে শুয়ে

থাকতাম। পাঁচ মিনিট পর ভাবতাম ওকে যদি আর কখনো

জড়িয়ে না ধরি তাহলে তো আমারই লস।

তারপর আবার ওকে জড়িয়ে ধরতাম। তখন ওর মুখটার দিকে

তাকালে দেখতাম মুচকি হাসছে। তখন আমি বলতাম...

.

-তুমি হাসছো কেন?

-তোমার রাগ দেখে।

-আমি কিন্তু আবার রাগ করবো।

-তাই নাকি?

-হুম।

-রাগ করলেই ভাল। তাহলেই তো আমার সাথে দুষ্টুমি

করবে না। হিহিহি।

-নাহ থাক। রাগ করলাম না।

ওকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরতাম।

.

রাত দশটা বাজে। হঠাত করে নীলিমার ফোনে একটা কল

আসে আর নীলিমা রুম থেকে বের হয় যায়।একটু পর আমিও

বের হই রুম থেকে। তারপর সব রুম গুলো দেখলাম একটা

একটা করে। কোথাও নেই নীলিমা। শুধু একটা রুম দেখা

বাকি। ঐ রুমে আব্বু আম্মু। খেয়াল করলাম ছাদের দরজাটা

খোলা। আমি আস্তে আস্তে ছাদের দিকে পা বাড়ালাম।

দেখলাম ও কার সাথে যেন ফোনে কথা বলছে। আমি

পিছন থেকে গিয়ে ওর কাঁধে হাতটা রাখলাম আর সাথে

সাথে ও ঘুরে দাঁড়ালো।

.

মনে হয় মেয়েটা ভয় পেয়েছে। কিন্তু ভয় পেলো কেন?

ছাদ থেকে এসে শুয়ে আছে কিন্তু এখনো রাতের খাবার

খেলো না। আমি ওকে ছাড়া খাই না। তাই ভাবলাম ওকে

ডেকে খেতে নিয়ে যাই। ওকে ডাকতে গিয়ে দেখি ও

ঘুমিয়ে পরছে। তাই আর ডাকলাম না।

.

আমারো আর খাওয়া হলো না। কিন্তু যখনি আমি

নীলিমার ফোনটা চোখে পরলো আমার মনে কেমন যেন

একটা সন্দেহ কাজ করলো। আমি ওর ফোনটা নিয়ে কল

লিস্টে যাই। গিয়ে দেখলাম একটা অচেনা নাম্বার। এই

নাম্বারে প্রায় দশ মিনিট কথা বলেছে ও। তাই আমি

নাম্বারটা নিয়ে আমার ফোন থেকে কল দিলাম...

-হ্যালো।(আমি)

-কে বলছেন?(লোকটা)

-ভাইয়া এটা কোন জায়গা?

-এটা তো রাজশাহী। কেন?

-না এমনি। একটা নাম্বার লাস্টের তিনটা ডিজিট ৯০৩।

এই নাম্বারটা চিনেন??

-এটাতো নীলিমার নাম্বার। আপনি কে?

-আপনি কে ভাই? আমি ওর হাজবেন্ড।

কথাটা শুনে লোকটা ফোন কেটে দিলো।

এখন আমি বুঝতে পারছি ও কেন এত রাতে ছাদে যায়।

কার সাথে কথা বলে।

.

রাত তিনটা বাজে। নীলিমা কাঁদছে ঘরের কোণায় বসে

বসে। ওর সাথে আমি কখনো খারাপ ব্যবহার করিনি।

কিন্তু আজ করলাম। ওকে দুইটা চড় মেরেছি কারন ও

আমার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। ওকে আমি খুব

ভাল ভাবে জিজ্ঞাসা করছিলাম...

-কার সাথে কথা বলো ছাদে গিয়ে?

-কারো সাথে না।

-রাজশাহীর কোন ছেলে তোমাকে কল দেয়?

-কোন ছেলে কল দিবে আমায়?

-প্রশ্নের সত্যি উত্তর দাও নীলিমা।

-তুমি কি বলতে চাইতেছো?

সাথে সাথে দুই গালে চড় বসিয়ে দিলাম। আর অনেক গুলো

কথা বলছি। এমনকি ওকে আমি ডিভোর্স দিয়ে দেওয়ার

কথাও বলছি। আসলে খুব কষ্ট পেয়েছিলাম। আমার

ভালবাসাতে কি কমতি ছিলো যার কারনে ও এমন করলো

আমার সাথে।

.

পরেরদিন সকালে নীলিমা ব্যাগে কিছু জামা কাপড়

ভরে চলে যায়। মনে হয় ওর বাবার বাড়িতে গেছে। আমি

আটকাতে চাইনি। আব্বু আম্মু আমাদের ঝগড়া রাতে

শুনেছিলো। আম্মু আমাকে অনেক ভাবে বুঝাতে চেয়েছে

নীলিমা এরকম করেনি। নিশ্চই কোন ভুল হচ্ছে। কিন্তু

আমি কোন কথা শুনিনি। নীলিমাকেও আটকাইনি।

.

বারান্দায় বসে সিগারেটের ধোয়া ছাড়ছি আর কাশছি।।

আসলে কোনদিন এসব পছন্দ করিনি।। আজ আমার

এগুলোকে আপন মনে হচ্ছে। প্রায় আটটি সিগারেট নষ্ট

করলাম।একটাও ভাল মতো আগুনই ধরাতে পারলাম না। যা

আমি পারবো না তা কেন করতে চাচ্ছি বুঝি না। এবার

মদের বোতল গুলো থেকে একটা গ্লাসে ঢেলে ঢেলে

গলায় ঢালছি। খুব বাজে গন্ধ। বমি করেছি কয়েকবার।

.

হঠাত খেয়াল করলাম ফোন বাজছে রুমে। আওয়াজ শুনে

বুঝলাম যে এটা নীলিমার ফোন। আমি ফোনটা হাতে

নিয়ে দেখলাম সেই ছেলেটার নাম্বার থেকে কল

আসছে। আমি রিসিভ করলাম...

-হ্যালো। নীলিমা?(লোকটা)

-ও নেই। আমি ওর হাজবেন্ড। আমার সাথেই প্রেমালাপ

করেন।(আমি)

-ওহ। ভাই আপনি? আসলে কাল আমার ফোনের চার্জ শেষ

হয়ে গিয়েছিলো তাই অফ হয়ে গেছে।

-তাই নাকি? এখন চার্জ আছে তো ফোনে?

-জ্বী ভাই। আসলে আমি কাল আমার এক বন্ধুকে কল

দিতে গিয়ে রং নাম্বারে ভাবিকে দিয়ে ফেলেছি।

-তাহলে ওর নাম কে বলছে তোরে? রবি অফিস??? রাখ তুই

ফোন।(নীলিমার নাম্বারটা রবি ছিলো।)

আমি কেটে দিলাম কল টা। তারপর শুয়ে পরলাম।

.

বিকালে বসে আছি বারান্দায়। এখানে দুইটা চেয়ার

আছে। আমি আর নীলিমা এখানে বসেই আড্ডা দিতাম।

ওর কথা মনে পরছে খুব। রিংটোন বেজে উঠলো নীলিমার

ফোনের। ঐ লোকটা আবার কল দিয়েছে। রিসিভ করলাম

না। তারপর একটা মেসেজ দিয়েছে। লিখা ছিলো....

"ভাইয়া প্লিজ ফোনটা একটাবার ধরেন আপনার সাথে

একটু কথা বলবো।" তারপর রিসিভ করলাম।

.

-ভাইয়া প্লিজ আপনি আমার সাথে একটু কথা বলেন। ফোন

কাটবেন না প্লিজ।

কথাটা শুনে আমি বললাম...

-আচ্ছা।

-ভাইয়া ঐদিন আমি এই নাম্বারে ভুলে কল দিয়েছিলাম।

তারপর আপনার স্ত্রী ধরে। আমি ভাবছিলাম ফোনটা

আমার বন্ধুর বোন ধরছে। তারপর অনেক জোরাজুরি করে

ওনার নামটা জানতে চাইলাম। তারপর ওনি বলল।

আনুমানিক দশ মিনিট কথা হইছিলো। তারপর আমি সরি

বলে রেখে দিছি।

-আপনার কথা বিশ্বাস হয় না আমার। আপনার সাথে

নিশ্চই কোন সম্পর্ক আছে নীলিমার আমি জানি।

-ভাই বিশ্বাস করেন। আপনি অফিসে কল দেন তারপর

জিজ্ঞাসা করেন এই নাম্বার থেকে কয়বার কল গেছে

আপনার ফোনে।

আমি কথাটা ভাবছি। তারপর বললাম...

-আচ্ছা আপনি আমাকে এত কিছু কেন বলছেন? আমি যে

আপনার সাথে কাল এত খারাপ ব্যবহার করলাম তবুও

আপনি কেন আমার সাথে কথা বলছেন? নীলিমা শিখিয়ে

দিয়েছে তাই না?

-ভাইয়া আমি কাল আপনার কথা শুনে বুঝতে পেরেছি

আপনাদের একটা সমস্যা হয়েছে আর সেটার কারন আমি।

তাই আমিই ব্যাপারটা বুঝালাম আপনাকে। আমার যতটুকু

দায়িত্ব করেছি।

আমি নিস্তব্ধ হয়ে গেলাম। কিছু বলার সাহস পেলাম না।

লোকটার "হ্যালো" শুনে নীরবতা ভেংগে বললাম...

-আপনার একটা রং নাম্বারের জন্য আমার সংসার

ভাংগার পথে।

-ভাই আমি সরি।কিন্তু ভাবীকে এতটা সন্দেহ করা ঠিক

না।

-আচ্ছা ভাই পরে কথা বলবো। রাখি।

এখন নীলিমার বাসায় কল দিতে হবে।মেয়েটাকে এতটা

কষ্ট দেওয়া ঠিক হয়নি।

.

-আসসালামু আলাইকুম। (আমি)

-ও আলাইকুম আসসালাম। কেমন আছো বাবা সাজিদ?

(আমার শাশুড়ি)

-ভাল মা। আপনারা?

-ভাল। বাবা তুমি আসলে না যে?

-আসলে মা একটু কাজের চাপ। নীলিমাকে একটু দেওয়া

যাবে?

-তুমি জানো না ও তো ওর মামার বাসায় গেছে।

তোমাকে জানায়নি?

-আসলে মা আমি তো ব্যস্ত ছিলাম তাই ওকে কল দিতে

পারিনি।

-তুমি না হয় ব্যস্ত ছিলে, নীলিমা তোমাকে জানায়নি

কেন? বাবা তোমাদের মধ্যে কি ঝগড়াঝাঁটি হয়েছে?

-না মা। তেমন কিছু না।

-নিশ্চই তোমাদের ঝগড়া হয়েছে।

-আসলে মা...(আমি লজ্জায় পরে গেলাম।)

-বাবা সংসারে এরকম হালকা ঝগড়াবিবাদ হয়। লজ্জা

পাওয়ার কিছু নেই। দোষটা আমাদেরই।আসলে বাবা হইছে

কি টাকাটা শফিকের খুব দরকার ছিলো।(শফিক ভাই

হলেন নীলিমার বড় ভাই।)

-কিসের টাকা?

-তুমি যেই টাকা গুলো নীলিমার কাছে দিছো সেটা

নীলিমা দিয়েছে ওর ভাইকে। আসলে ও তোমাকে

জানায়নি ভয়ে।

  • তাতে কি হইছে?

-তোমাদের ঝগড়া কি টাকা নিয়ে হয়নি?

-না তো। আর এটা নিয়ে ঝগড়া হওয়ার কি আছে? আমি ওর

কাছে চাইছিলাম টাকা গুলো। টাকা গুলো একটা ফ্লাট

কেনার জন্য রাখছিলাম। সেটা তো পরেও কিনা যাবে। ও

তো আমাকে বললেই পারতো।

-আসলে বাবা ও অনেক ভয় পেয়ে গিয়েছিলো । প্রতিদিন

ফোন দিয়ে কান্নাকাটি করতো টাকার জন্য। আমরাও

একটা সমস্যায় আছি। তাই টাকা দিতে পারছি না।

-আচ্ছা মা আমি এখন রাখছি।

বলেই ফোন কেটে দিয়ে আমি নীলিমার ফোন টা হাতে

নিলাম। কল লিস্টে গিয়ে দেখলাম ওর বাড়ির নাম্বারেই

অনেক বার কল আসতো প্রতিদিন রাতে। আর বুঝলাম যে

টাকার টেনশনেই ওর এরকম পরিবর্তন। ইচ্ছা করতেছে

নিজের গালে নিজেই চড় মারি। এতটা খারাপ আমি

কিভাবে হলাম? এত সহজে অবিশ্বাস করে ফেললাম

মেয়েটাকে।

.

বাইক নিয়ে বের হয়ে পরলাম ওর মামার বাড়ির

উদ্দেশ্যে। মামার বাড়িতে গিয়ে দেখি নীলিমা লুডু

খেলছে ওর মামাতো ভাই বোনদের সাথে। আমাকে দেখে

মামা মামী এসে জামাইআদর শুরু করে দিলো। কিন্তু

আমার বউটা আমাকে দেখে মুখটা মলিন করে সামনে

থেকে চলে গেলো। সবাই কিছুটা আন্দাজ করতে পারছে।

.

আমার মামা শ্বশুরের বাড়িটা দুইতলা। নিচতলা পুরো

খুঁজেও নীলিমাকে পেলাম না। কাউকে লজ্জায়

জিজ্ঞাসাও করতে পারছি না। অতঃপর আমার শালা

মানে নীলিমার মামাতো ভাইয়ের মাধ্যমে খোঁজ

পেলাম। ম্যাডাম দোতলাতে আমার শালার রুমে নাকি

বসে আছে। শালাকে হালকা পাতলা ঘুষ দিয়ে গেলাম

আমার মহারানীর কাছে। রুমে গিয়ে দরজাটা লাগালাম।

আমাকে দেখে অন্যদিকে ঘুরে বসে আছে।

.

-আমি সরি।(বিষণ্ণতা নিয়ে বললাম।)

-কেন আসছো এখানে?

-আমার বউকে নিতে।

-তোমার বউ তো অন্যলোকদের সাথে প্রেম করে। আমি

আর তোমার বউ নই।

-বাবু সরি।(বলে ওর হাতটা ধরলাম)

ও হাতটা ছাড়িয়ে নিয়ে বলল...

-সাজিদ সাহেব আমি চাইনা আপনি এখানে অপমানিত

হন। প্লিজ চলে যান।

ওর কথা শুনে অবাক হয়ে গেলাম। যে মেয়েটা কোনদিন

আমার নাম মুখে আনেনি সে আজ আমাকে নাম ধরে

অপমান করার হুমকি দিচ্ছে।

.

একটু পর ড্রয়ার থেকে একটা খাম বের করে আমার হাতে

দিলো। আমি খামের উপরে লেখাটা দেখে নিজের

চোখকে বিশ্বাস করতে পারছি না। খামে বড় করে লেখা

"ডিভোর্স পেপারস "।

আমি খুব বেশি বড় অপরাধ করে ফেলেছি ওর সাথে তাই

বলে এত বড় শাস্তি দিতে পারছে ও?

আমি ওর সামনে খামটা খুলতে সাহস পাচ্ছিলাম না। শুধু

অনুরোধ করেছিলাম একটা সুযোগ দিতে। দেয়নি।

.

আমি বের হয়ে গেলাম সাথে সাথে। সবাই বলছিলো কি

হয়েছে? আমি কোন উত্তর না দিয়ে বাইক নিয়ে রওনা

দেই। কিন্তু আমার হাত পা কাঁপছে। বাইক চালাতে

পারছি না। একটু দূরে এসেই বাইক থামিয়ে একটা চায়ের

দোকানে গিয়ে বসলাম। একটা সিগারেট কিনলাম। আমার

সিগারেটে আগুন ধরানোর পদ্ধতি দেখে দোকানদার

বলল...

-ভাইজান আফনে কি এই পরথম সিগারেট খাইতাছেন?

-কেন বলুন তো?

-জোর করে খাইয়েন না। ফালায় দেন।

সিগারেটটা ফেলে আমি হাতের খামটার দিকে

তাকিয়ে আছি। ইচ্ছা করছে খুলে দেখি।

.

খুলে দেখলাম একটা মেডিকেল রিপোর্ট। পুরো রিপোর্ট

পড়ে বুঝলাম যে প্রেগন্যান্সি রিপোর্ট এটা। কিন্তু

নীলিমার নাম কেন? পুরো মাথা কাজ করছে না। সাথে

সাথে দোকানদারকে একশ টাকার নোট দিয়ে বাইক নিয়ে

মামাশ্বশুরের বাড়ির দিকে রওনা দিলাম আবার।

দোকানদার বাকি টাকাটার জন্য ডেকেছিলো। আমি

রেখে দিতে বললাম।

.

.

আমি আর নীলিমা এখন সামনাসামনি দাঁড়িয়ে আছি।

-সরি।(কেঁদে বলছে নীলিমা)

-আমিও।

-সারপ্রাইজ কেমন দিলাম?

আমি ওকে জড়িয়ে ধরলাম। মেয়েটা আমাকে জড়িয়ে

ধরে তো অনেক জোরে জোরে কান্নাকাটি শুরু করে

দিলো। আমারো চোখ দিয়ে পানি পরছে। বুঝলাম ওকে

ছাড়া থাকা সম্ভব না আমার। সত্যিই সম্ভব না