ঢাকা থেকে সবচে স্বল্প সময়ে পৌছুনো যায় যে দ্বীপে তার নাম সন্দ্বীপ কিন্তু এই দ্বীপে ভ্রমণের উদ্দেশ্যে যায় সবচে কম সংখ্যক মানুষ। অথচ এই দ্বীপের মানুষের মত অতিথিপরায়ণ ভালো মানুষ আমি খুব কম এলাকাতেই পেয়েছি।
তাবু নিয়ে ক্যাম্পিং এর উদ্দেশ্যে গিয়েছিলাম। সন্দ্বীপের শিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবী সেদিনই পরিচয় হওয়া এক তরুণ ঘাট থেকেই রিসিভ করলেন। বিকাল নাগাদ অঞ্চলজুড়ে সাড়া পড়ে গেলো। দ্বীপের সব অনলাইন নিউজ পেপার আর ফেসবুক পেজে সংবাদ চলে এলো এলাকায় ট্যুরিষ্ট এসেছে; এমন কিছু করা যাবেনা যাতে এলাকার বদনাম হয়। সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা ছাড়াও সন্ধ্যার পর এলাকার কাউন্সিলর ভাই সাগর পাড়ের ক্যাম্পসাইটে চলে এলেন। সাথে আসা এলাকার মুরুব্বীদের এক কথা এই শীতের রাতে সাগরের পাড়ে তাবুতে থাকার দরকার নাই। তাতে কেউ অসুস্থ্য হলে এলাকার নাকি বদনাম হবে। কার বাড়িতে কয়জন করে অতিথি বাড়িতে রাখবেন রীতিমত সে হিসাব করেও এসেছেন তাঁরা।
অনেক কষ্টে তাদের বুঝ দিলাম যে আমরা এভাবেই থাকবো। নিমরাজি হয়ে তারা জানালেন কষ্ট করে রান্নার প্রয়োজন নাই, অনতিদূরের মাদ্রাসায় আমাদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করেছেন তারা। ইচ্ছা না থাকলেও পরের বেলাগুলোতে এ ব্যবস্থা মানতে হয়েছিলো। (পরে সেজন্য কোন বিনিময়ও নেননি তারা, তাই বাধ্য হয়ে মাদ্রাসার দানবাক্সে কিছু অর্থ দান হিসেবে দিয়ে আসতে হয়েছিলো।) কনকনে শীতের রাতে অনেকবার খেজুর গাছে ঝুলতে থাকা রসের ঘটিগুলোর দিকে লোভাতুর দৃষ্টি দিয়েছিলাম। কি আশ্চর্য! পরদিন ভোরে কাছের এক বাড়ি থেকে খেজুর রসের পায়েস আসলো। এক বাড়ি থেকে আসলো অনেকগুলো ডাব। এলাকা ঘুরিয়ে দেখিয়ে ফেরার সময় ঘাট পর্যন্ত এগিয়ে দিলেন এলাকার যুবক ভাইয়েরা। কেউ একজন খাওয়ালো বিখ্যাত শিবের হাটের রসগোল্লা। উনারা বার বার বলছিলেন সময় নিয়ে আবার যেতে। এরপর আরেকবার গেলেও জীবনের নানা ব্যস্ততায় 'সময় নিয়ে' যাওয়া হয়নি আর। তবু এখনো ঠিকই মনে আছে তাদের সেই অকৃত্রিম ভালোবাসার কথা। অনেকদিন পর গত বছর একটা পার্সেল আসলো সন্দ্বীপ থেকে, রিসিভ করে মনটা ভরে গেলো। পার্সেলে ছিলো আমার তোলা সন্দ্বীপের একটা ছবির থিম নিয়ে তাদের বানানো বিউটিফুল সন্দ্বীপ টিশার্ট।
ঢাকা থেকে রাতের শেষ বাসে চড়ে ভোর নাগাদ নামবেন সীতাকুন্ডের কুমিরা। ট্রেনেও যেতে পারেন। কুমিরা থেকে দশ টাকা ভাড়া বা পায়ে হেটে যাবেন ঘাটঘর। সেখান থেকে স্পীডবোটে বিশ মিনিটে সন্দ্বীপ। ভাড়া ২৫০ টাকা। ট্রলারে গেলে ১৩০ টাকা। সন্দ্বীপে খরচ একটু বেশিই। এর কারণ বিচ্ছিন্নতা ও দ্বীপের প্রতি ঘরেই প্রবাসীর উপস্থিতি। মূলত রেমিটেন্সের টাকাতেই জোরদার সন্দ্বীপের অর্থনীতি।
এত কাছের একটা জনপদ। একটা পূর্ণাঙ্গ থানা ও উপজেলা অথচ এখনো স্পীডবোট ছাড়া ভালোমানের কোন সরকারী নিয়মিত সার্ভিস নাই। সরকারের উচিত সন্দ্বীপবাসীদের ভালো মানের জাহাজ/সী-ট্রাক বরাদ্দ দিয়ে নিরাপদ সমুদ্রযাত্রা নিশ্চিত করা। এটুকু পেলেই বর্তে যাবে দ্বীপের মানুষগুলো।
Hi! I am a robot. I just upvoted you! I found similar content that readers might be interested in:
https://www.ustream.tv/HowTo
Congratulations! This post has been upvoted from the communal account, @minnowsupport, by onolhassan from the Minnow Support Project. It's a witness project run by aggroed, ausbitbank, teamsteem, theprophet0, someguy123, neoxian, followbtcnews, and netuoso. The goal is to help Steemit grow by supporting Minnows. Please find us at the Peace, Abundance, and Liberty Network (PALnet) Discord Channel. It's a completely public and open space to all members of the Steemit community who voluntarily choose to be there.
If you would like to delegate to the Minnow Support Project you can do so by clicking on the following links: 50SP, 100SP, 250SP, 500SP, 1000SP, 5000SP.
Be sure to leave at least 50SP undelegated on your account.