ভবিষ্যত পৃথিবী খুব ক্রিটিক্যাল একটা অবস্থার মধ্যে আছে। খাদ্য সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে। এই অবস্থায় স্পেস রিসার্চ করার মত কোনো পরিস্থিতি নেই। প্রাক্তন ইঞ্জিনিয়ারদেরকেও কৃষিকাজ করতে হচ্ছে। এমন সময় একটা সিগন্যাল আসে, from the unknown. একটা ওয়ার্মহোল পাওয়া যায় শনি গ্রহের কাছাকাছি কোথাও।
#ওয়ার্ম হোল, টাইম-স্পেস কন্টিনিউয়ামের মধ্যে একটা বাইপাস, একটা শর্টকাট, নিয়ে যাবে অজানা কোথাও, অজানা কোনো গ্যালাক্সীতে। একটা সম্ভাবনা, যা হয়তো মানবসভ্যতাকে রক্ষা করবে পুরোপুরি বিলুপ্ত হওয়া থেকে।
এটুকু আপনারা ট্রেলারেই দেখেছেন।
এই মুভিটা এমন কিছু টপিক নিয়ে ডীল করে, যেগুলো আমরা খুব সহজে বুঝে উঠতে পারিনা। এজন্য অনেকেই বলে, এই মুভি বোঝা যাবেনা সহজে। কিন্তু, মুভি বুঝতে হলে আপনাকে astrophysicist হতে হবে, এমন মুভি নিশ্চয়ই বানাবেনা কেউ। অবশ্যই কিছু কিছু ব্যাপার হয়তো আছে, যেগুলো বুঝতে হলে আপনাকে কিছুটা পড়াশোনা থাকতে হবে। তো, একটা মুভির খাতিরে হলেও যদি কিছুটা জানার আগ্রহ জাগে, খারাপ কী?
বিজ্ঞানের যে কয়েকটা জিনিস আমাদের অনেকের মাথার ওপর দিয়ে যায়, তার মধ্যে দুটো হচ্ছে টাইম আর স্পেস। এই দুটোই আসলে একসূত্রে গাঁথা। একটা পর্যায়ে গিয়ে সময়ও একটা বস্তুর মত আচরণ করে। জিনিসটা বুঝতে হলে আমাদেরকে ডাইমেনশন বা মাত্রা জিনিসটা বুঝতে হবে।
#বিজ্ঞানের অন্যতম ইন্টেরেস্টিং একটা টপিক হচ্ছে ডাইমেনশন বা মাত্রা। আমরা আছি থ্রি ডাইমেনশনে, এবং আমাদের দৃষ্টি চলে টু-ডাইমেনশনে। আমরা যততম ডাইমেনশনে থাকবো, আমাদের দৃষ্টি চলবে তার চেয়ে এক ডাইমেনশন কমে। আমরা যখন ফোর্থ ডাইমেনশনে চলে যাবো, যেখানে সময় একটা মাত্রা। আরো হায়ার ডাইমেনশনে গেলে আমরা বস্তুর মধ্যে দিয়ে দেখতে পাবো। ফিফথ ডাইমেনশনে গেলে আমরা চতুর্থ মাত্রা অর্থাৎ সময়ের মধ্যেও দৃষ্টিপাত করতে পারবো। এটা নিয়ে বিজ্ঞানের মায়েরে বাপ পেইজে একটা নোট আছে, পড়ে নিতে পারেন এখানে, সহজ ভাষায় বস্তুর মাত্রাসমূহ ব্যপারে।
রিলেটিভিটি আরেকটা চরম ব্যাপার। সময়ের একটা বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, অন্য সবকিছুর মত এটাও আপেক্ষিক। সবার জন্য, স্পেসের সব জায়গায় টাইম একভাবে চলে না। ঐ যে বললাম, সময়ও বস্তুর মত আচরণ করে! আপনাকে যদি হাওয়ার বিপরীতে দৌড়াতে বলা হয়, অথবা স্রোতের বিপরীতে দাঁড় বাইতে বলা হয়, তাহলে আপনি যেমন স্লো চলবেন। গ্র্যাভিটি বা মহাকর্ষের বিপরীতে চলতে হলে সময়কেও স্লো চলতে হয়।
তাই, যারা মহাকাশে দূর পাল্লার যাত্রাতে যাবেন, তারা ফিরে এসে দেখবেন, তাদের পরিচিত মানুষেরা অনেক বেশি বুড়িয়ে গেছে। কারণ, তারা মহাকর্ষকে ছিন্ন করে দ্রুতগতির যাত্রার মধ্যে ছিলেন। সময়কে চলতে হয়েছে মহাকর্ষের বিপরীতে। কিন্তু পৃথিবীর মানুষদের জন্য সময় চলেছে স্বাভাবিকভাবেই (মানে, আমাদের জন্য সবসময় যেভাবে চলে এসেছে, সেভাবে)……
ইন্টারস্টেলারে নায়ক কুপার (ম্যাথিউ ম্যাককোনাহেই) তার ছেলেমেয়েকে রেখে যাত্রা করেছে সেই ওয়ার্মহোলের দিকে। কোথায় যাবে সে, কোন গ্যালাক্সিতে গিয়ে পৌঁছাবে, বস্তুর কোন মাত্রার মুখোমুখি হবে সে – এই জিনিসগুলো নিয়ে ইন্টারস্টেলারের কাহিনী এগিয়ে যাবে। মুভির প্লটের জন্য জোনাথন নোলান ক্যালটেকে রিলেটিভিটি নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। স্ক্রিপ্ট রাইটিং এর সময় সাথে রাখা হয়েছিলো তাত্ত্বিক পদার্থবিদ কিপ থর্নকে (হ্যাঁ, শেলডন কুপারের ফীল্ড)… থর্ন হচ্ছে একদম প্রথম দিকের বিজ্ঞানীদের একজন যিনি থিওরেটিক্যাল সায়েন্টিফিক রিসার্চ করেছিলেন, যে বিজ্ঞান কি আসলেই আমাদেরকে টাইম ট্র্যাভেল এর সূত্র দিতে পারবে কিনা; ব্ল্যাক হোল কসমোলজি নিয়ে তার নিজস্ব রিসার্চ আছে।
ম্যাথিউ ম্যাককোনাহেইকে এতো স্বাভাবিক লেগেছে স্ক্রীনে, যেন সে স্ক্রীনেরই একটা অংশ। অ্যান হ্যাথাওয়ে, স্যার মাইকেল কেইন, এরা তো আমার খুবই প্রিয় অভিনেতা। মার্ফ এর চরিত্রে পিচ্চি ম্যাকেঞ্জি ফয়কেও এতো ফাটাফাটি লেগেছে, যে বলার মত না। প্রথম ট্রেলার বাদে, আমি আর অন্য কোনো ট্রেলার দেখিনি বলে জানিও না, আর কে কে ছিলো। আমার মত যদি কেউ থেকে থাকেন, তাহলে ওদের কথা চিন্তা করে জেসিকা চ্যাস্টেইন আর ম্যাট ডেমন কী কী চরিত্র করেছে, সেগুলো আর বললাম না।
স্ক্রীন রাইটিং এর জন্য জোনাথন নোলান তার ভাইয়ের চেয়ে ভালো বলেই আমার মতামত। সে থাকলে বেশি ভালো হয়, আমার মতে। এটাতেও ব্যতিক্রম হয়নি। হ্যান্স জিমার এর মিউজিক নিয়ে আর কী বলার আছে। উত্তেজনায় গায়ের লোম খাড়া হবে, ব্রেইনের ওপর চাপ পড়বে, ইমোশনাল হয়ে যাবেন, I mean, the usual. ফটোগ্রাফি was excellent, basic Christopher Nolan stuff. ব্যাটা ৩-ডি তে বিশ্বাস করে না, for good reasons. So, IMAX is the way to go, for best experience. কিছু কিছু সীন এতো বেশি ইলাবোরেট, এগুলো বিগ স্ক্রীনে দেখলে হারায়ে যেতে ইচ্ছে করে।
আর কিছু বলতে চাই না, তাহলে দেখে ফেলুন মুভিটা আর হারিয়ে যান অন্য কোন জগতর.....
Dear friend, you do not appear to be following @artzone. Follow @artzone to get a valuable upvote on your quality post!