ছোটদের একটি বিশেষ গুণ রয়েছে যা হল তাদের অনুকরণপ্রিয়তা। তারা সর্বদা বড়দের থেকে দেখে দেখে শিখতে চায়, তাদের মতো করতে চায়। বলা হয়ে থাকে, শিশুরা হচ্ছে কাদার মতো এই বয়স হতেই তাকে আপনি আপনার মনমতো আকারে গঠন করতে পারবেন, নির্দিষ্ট আকার দিতে পারবেন। আসলেই তাই, আকারটা শারিরীক ক্ষেত্রে নয় বরং ওটা মানসিক ও আচার-ব্যবহার এর ক্ষেত্রে।
আজকে জুম্মার দিন ছিল তাই আমি আর আমার ভাগ্নে মসজিদে যাবো নামাজ পড়তে। আমার ৩+ বছরের একটা ভাতিজা আছে যেটি ওই ভাগ্নের সাথে যাবে বলে বায়না ধরেছে।তো নিয়ে গেলাম ওকে আমরা। সে আমাদের মতো পাঞ্জাবি পড়ে টুপিও লাগিয়ে নিলো একটা। মানে আমরা যা যা করতেছি যাওয়ার জন্য সেও তা তা করবে। মসজিদে যাওয়ার পর বসে আছে চুপচাপ,এনার আবার নতুন জায়গায় আসলে প্রথম কিছুক্ষন চুপচাপই থাকেন।
একটু পর সুন্নত পড়ার জন্য দাড়ালাম ওনাকে বসে থাকতে বলা হলো কিন্তু পরমুহূর্তেই ওনি দাঁড়িয়ে আমাদের মতো নামাজ পড়া শুরু করলো।সে নামাজ পড়লো আমাদের সাথে। এরপরের নামাজে যখন আমি পেছনে ছিলাম তখন দেখি ভাতিজা আমার ভাগ্নের সাথে উচ্চতা মেলানোর জন্য তার পায়ের গোড়ালি উঁচু করে পায়ের আংগুলের উপর ভর দিয়ে একটু উচু হওয়ার প্রচেষ্টা। হাহাহা। আসলেই তারা খুবই অনুকরণপ্রিয়।
সে আসার সময় আমাদের মতো হাত দিয়ে তোবারক ও নিয়ে চেয়েছিল। আসলে বিষয়টা এরকমই তারা আমদের দেখে দেখেই শিখবে। সে আমাদের মুখের অনেক শব্দই শিখে ফেলে। ওর ছোট বেলার একটা কথা বলি- সে কোথা থেকে যেনো কু**র বাচ্চা গালি টা শুনে সেটা বলতে লাগলো আধো আধো ভাবে। এখন ওকে যতোই মানা করি ততোই যেন ও সেটা বলতে আনন্দ পায়।অবশেষে ওকে সেটা কলার বাকলা বলতে শিখানো হলো। ওর মাথায় সেই গালিটা একটা ভালো শব্দ দিয়ে পরিবর্তন করে দেওয়া হলো। এইরকম অনেক কিছুতেই তাদের এইরকম অনুকরণপ্রিয়তা লক্ষ্য করা যায়।
এইরকম বিষয় আমাদের সকলের আশেপাশেই রয়েছে অনেক। মাঝে মাঝে আমাদের অনেকটা আনন্দও লাগে তাদের এইরকম আমাদের অনুকরণের বিষয়গুলো। আসলে ওদের এই বয়সের সবকিছুই খুব কিউট। ছোট ছোট পায়ে তাদের দুরন্ত ছুটে চলা, আধো আধো ভাবে বলা তার মিষ্টি মিষ্টি মুখের ভাষা। এভাবেই বেড়ে উঠছে তারা আমাদের সবকিছু অনুকরণ করে। তাদের এই বিষয়টা আমাদের সর্বদা লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন কেননা তাদের মাঝে এখন কোনো ভালো-খারাপ বোধ নেই যার ফলে তারা খুব সহজেই অনুকরণের মাধ্যমে যে কোনো কিছুই শিখে ফেলতে পারে। এরজন্যেই তাদের চারপাশের পরিবেশটা সর্বদা ভালো রাখতে হবে। চারপাশের ভালো সামাজিকতা তাদের মাঝেও ওইরকম বৈশিষ্ট্যগুলো গড়ে তুলবে।
আমরা জানি তারা খুবই অনুকরণপ্রিয় এখন তাদের চারপাশের পরিবেশটা যাদি তাদের বিকাশের অনুকূলে না করে দিতে পারি তাহলে তাদের বিকাশ বাধাগ্রস্ত হবেই তা বলার অবকাশ রাখেনা। শিশুদের জন্য তাদের পরিবারের ভুমিকাটি মূখ্য কেননা প্রাথমিক পর্যায়ে তাদের থেকেই জীবনের শুরুর গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো তারা আয়ত্ত্ব করে। সুতরাং এ বিষয়গুলো আমাদের সকলের ই হয়তো জানা তাও আমি আমার মতামত তুলে ধরলাম আমার আজকের নামাজের সময়ে এমন কিছু অভিজ্ঞতার পরিপ্রেক্ষিতে। ধন্যবাদ সময় নিয়ে পড়ার জন্য।
খুব ভালো করেছেন ভাতিজাকে মসজিদে নিয়ে গিয়ে।
শিশুদের প্রতি যত্নবান হওয়া উচিৎ। যত্নবান বলতে শুধু তাদের শারিরীক দিকটাতে সীমাবদ্ধ করা ঠিক হবে না। মানসিক বিকাশ ও শিষ্টাচারের দিকে বেশি গুরুত্ব দেয়া উচিৎ। আমাদের সেই পরিবেশ তৈরি করে দিতে হবে। কারণ, আজকের শিশু আগামীর ভবিষ্যৎ।
হ্যা,সেটা মাথায় রেখেই তাকে নিয়ে যাওয়া।ধীরে ধীরে পরিবারের গন্ডীর বাইরের জিনিসগুলোও শিখতে হবে,বুঝতে হবে।ধন্যবাদ সময় নিয়ে পড়ার এবং মূল্যবান মতামত দেওয়ার জন্য।
Hi @minhajulmredol, your post has been upvoted by @bdcommunity courtesy of @rehan12!
Support us by voting as a Hive Witness and/or by delegating HIVE POWER.
JOIN US ON
Congratulations @minhajulmredol! You received a personal badge!
You can view your badges on your board and compare yourself to others in the Ranking
Do not miss the last post from @hivebuzz:
কলার বাকলা বলতে শেখানোটা বুদ্ধিদীপ্ত কাজ ছিল। বাচ্চারা ভুল করে বাজে কোন কিছু শিখে ফেললে খেলার ছলে কৌশলে তা ভুলিয়ে দেওয়াটাই উত্তম।
অনেক ভালো একটা বিষয় তুলে ধরেছেন। 🙂
হ্যা ভাই এই জিনিসটাই, খারাপ টা শিখে ফেললে ওইটাই বলতে থাকবে তারা তো বুঝে না কোনটা ভালো আর কোনটা খারাপ।তাই এইভাবে পরিবর্তন করে নেওয়া। ধন্যবাদ সময় নিয়ে পড়ে মতামত দেওয়ার জন্য।😊