"ঈদ মোবারক"
"তাকাব্বালাল্লহু মিন্না ওয়া মিনকুম
অর্থ: আল্লাহ আমাদের ও আপনাদের নেক আমলগুলো কবুল করে নিন।
ঈদ মানে আনন্দ। সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা। এই ঈদের শুভেচ্ছা জানানো সুন্নাত। রমজানে দীর্ঘ ৩০ দিন সিয়াম সাধনা শেষ করার পর আমরা পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর পাই। মুসলমানদের দুইটি ঈদ। ঈদের কিছু সুন্নত রয়েছে। পাশাপাশি ঈদের নামাজ আদায় করা ওয়াজিব। ঈদের দিন রোজা রাখা নিষেধ। আমাদের উচিত সুন্নত মোতাবেক নিজের জীবন পরিচালনা করা।
এদিন আমরা সকালে ঘুম থেকে উঠে গোসল করে, পাক-পবিত্র হয়ে, নতুন জামা পড়ে ,সুগন্ধি ব্যবহার করি, কারণ আমাদের ঈদের নামাজ আদায় করতে যেতে হবে। ঈদের দিনের 11 টি সুন্নত এর মধ্যে কয়েকটি বিশেষ সুন্নত রয়েছে। যেমন ঈদুল ফিতরের দিন সকালে কিছু খেয়ে নামাজ আদায় করতে যেতে হয়। বিজোড় সংখ্যক কিছু খাওয়া ভালো, যেমন খেজুর। এদিন ধনী গরীবের সকলের বাসায় সেমাই রান্না করা হয়। এটাই ঈদের মাহাত্ম্য অর্থাৎ এই দিন সকলে সমান, সকলে আনন্দিত, সকলে খুশি।
পাশাপাশি ঈদের সময় একে অন্যের সাথে আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে হয়। আমার আম্মু খুবই সুন্দর রান্না করে। যারা আমার আম্মু রান্না খেয়েছেন ,তারা জানেন আমার আম্মুর হাতের রান্না অসাধারণ।
আমার আম্মুর সেদিনের রান্নাগুলো আমি একত্রে ছবি করে এখানে দিয়েছি। এখানে রয়েছে দুই রকমের সেমাই, পায়েস, দুই রকমের গরুর মাংস, জর্দা,পোলাও,রুটি। সবকিছুই অত্যন্ত সুস্বাদু ছিল। এরপর আমরা এসব খেয়ে ঈদের নামাজ আদায় করতে যাই।
গত দুই বছর করোনার কারণে আমরা ঈদগাহে নামাজ আদায় করতে পারিনি। তবে আল্লাহর রহমতে এবছর আমরা ঈদের নামাজ ঈদগাহ ময়দানে আদায় করতে পেরেছি। যদিও বাংলাদেশের অনেক জায়গায় এসময় বৃষ্টি হয়েছিল কিন্তু আল্লাহর রহমতে আমাদের এখানে বৃষ্টি হয়নি আমরা খুবই সুন্দরভাবে আমাদের ঈদের নামাজ আদায় করতে পেরেছিলাম।
আমি আমার আব্বুর সাথে ঈদের নামাজ আদায় করতে গিয়েছিলাম। আমাদের এখানে সকাল 9 ঘটিকায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। সবাই খুব সকালেই ঈদগাহ ময়দানে উপস্থিত থাকে। তবে বাঙ্গালীদের কিছু বৈশিষ্ট্য আছে যত সময় দেয়া হোক কিছু মানুষ উপস্থিত হতে পারেনা। ঈদের দিনও সেই ঘটনাটি ঘটেছিল, আমি দেখলাম নামাজ শেষে কিছু মানুষ হুন্ডায় করে ,অন্য ঈদগাহ ময়দানে যাচ্ছিল ঈদের নামাজ আদায় করতে। তবে যাই হোক,খুবই সুন্দর ভাবে আমরা আমাদের সিয়াম সাধনা পালনের পর ঈদের নামাজ আদায় করছি। ঈদগাহ ময়দান মানুষ দিয়ে পরিপূর্ণ হয়ে গিয়েছিল। অন্য সময় বলা হতো সবাই মাস্ক পরিধান করে ময়দানে আসবেন। কিন্তু আমাদের এখানে বলা হয়েছিল সবাই জায়নামাজ সহ সকালে ইদগাহ ময়দানে আসবেন। এরপর আমরা নামাজ শেষে কুশল বিনিময় এর শেষ করে বাসায় ফেরত যাই। তারপর আমরা বাসায় ফেরত আসছি নামাজ শেষ করে।
এরপর একেকজনের একেকরকম পরিকল্পনা থাকে। অনেকে ঘুরতে যায়,অনেকে মানুষের বাসায় দাওয়াত খেতে যায়, অনেকে ঘুমিয়ে সময় পার করে দেয়। আমিও কোন ভাবে এই সময়গুলো অতিক্রম করতে চাচ্ছিলাম। এ সময় আমার খালাতো ভাই চলে আসে হোন্ডা করে। তো ভালোই হলো তার সাথে কোথাও ঘুরতে যাওয়া যাবে ,সময় অতিক্রম করা যাবে। তো সবার প্রথমে বাসায় কেউ আসলে তাকে এই দিন সেমাই খাওয়ানো হয়। আমার খালাতো ভাইকে সময় খাওয়ানো হলো এরপর আমরা বাইকে করে ঘুরতে বেরোলাম।
সবার প্রথমে আমি জজকোট পুকুরে গিয়েছিলাম। পুকুরের চারপাশে পার্কের মতো ব্যবস্থা করা। যেহেতু এগারোটার সময় গিয়েছিলাম তাই কিছুটা মানুষের সংখ্যা কম ছিল।
কুড়িগ্রামে ঘোরার জায়গা বলতে তেমন জায়গা নেই তবে যা আছে তাতে আমরা সন্তুষ্ট। এখানে একটি জায়গায় লেখা ছিল I LOVE KURIGRAM। আমি জানতাম এটা কুড়িগ্রামে, কিন্তু আমার এর আগে যাওয়া হয়নি। তো আজকে সবার প্রথমে আমের উদ্দেশ্য ছিল ওই জায়গাটা আমি যাব। এবং আমি গিয়েছিলাম এবং সে সময়ে জনমানব শূন্য থাকায় আমি পুরোটা দখল করে ছবি তুলতে পেরেছিলাম।
এর পাশে আরও একটি স্তম্ভের মত জায়গা ছিল সেখানেও খুবই সুন্দর ভাবে ছবি তোলা সম্ভব।
আমার খুবই ভালো লাগছিল ছবিগুলো তুলতে এবং জায়গাগুলো প্রথমবারের মতো দেখতে। পাশাপাশি আকাশ মেঘলা ছিল।
এরপর আমরা আমার খালাতো বোনের বাসায় যাই সালামি নেয়ার জন্য। এখানেও একই ভাবে আমরা সেমাই খাই ,তারপর আমরা চলে আসার সময় তারা আমাকে সালাম দেয়। মূলত বয়সটা এখনো ছোট তাই সকলেই ভালোবেসে সালামি দিয়ে থাকে। হয়তোবা 2-3 বছর পর আমাকেই,তাদেরকে দিতে হবে অর্থাৎ আমার ভাগনা ভাগ্নিদের। এটাই নিয়ম। এরপর আমরা সোজা বাড়ি চলে এসেছিলাম।
একটা বিষয় জানিয়ে রাখতে চাই ঈদের রাতের কথা, এই দিন চাঁদ রাত নামে পরিচিত। এইদিন বাচ্চারা মেয়েরা হাতে মেহেদী দিয়ে থাকে। আমার এক ভাগ্নি ও খুব সুন্দর ভাবে হাতে মেহেদি দিয়েছিল আমি সেই ছবিটা তুলে রেখেছিলাম।
এই ছিল আমার ঈদের দিন এভাবে আমার দিনটি অতিবাহিত হয়ে যায়। এদিন ওয়াজিব ও সুন্নত এর পিছনে দৌড়ালে চলবে না, পাশাপাশি আমাদের উচিত প্রতিদিন আমাদের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতের সহিত আদায় করা। আলহামদুলিল্লাহ আল্লার রহমতে এই মাসটি অতিক্রম করতে পেরেছি। আল্লাহ আমাদের সকলকে কবুল করুক। আমি চাচ্ছিলাম আমার ঈদের দিনের ঘটনা গুলো আপনাদের সাথে তুলে ধরি। তবে ব্যস্ততার কারণে লেখা সম্ভব হয়নি। এমনকি ঈদের সময়ের একটি বিশাল অংশ দাওয়াত। এ সময় অনেকের বাসায় দাওয়াত খেতে যেতে হয় ,আবার অনেকে দাওয়াত খেতে আসে। সবদিক মিলিয়ে অত্যন্ত আনন্দের সহিত আমরা ঈদের সময়ে তাকে অতিক্রম করে থাকে।