বৈশাখী মেলা বা বৈশাখী মেলা হচ্ছে একটি বাঙালি উৎসব মেলা, যা বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশের বাইরে আয়োজিত হয়। এটি একটি সার্বজনীন উৎসব। বাংলা নববর্ষ বাঙালির জাতীয় জীবনের আবহমান সংস্কৃতির অংশ। আমাদের সংস্কৃতিতে প্রতিবছর পহেলা বৈশাখ নিয়ে আসে নতুনের বার্তা, যা নব নবরূপে একাত্ম হয়ে বিশেষ কৃষ্টির মহিমায় রূপায়িত হয়। জাতিধর্মনির্বিশেষে এ দিনটি বিশেষ আড়ম্বরের সঙ্গে উদযাপিত হয়ে থাকে। বাঙালি জাতি নিজ মেধা, মনন ও চিন্তা দিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে পালন করে নববর্ষের নানা অনুষ্ঠান।
এটাকে বৈশাখী মেলা ১৪২৯ বলা যায়। তবে আমরা বাংলা সনের পরিবর্তে ইংরেজি সাল ব্যবহারকেই প্রধান্য দিয়ে থাকে। এসময় বাংলাদেশের অনেক অঞ্চলে মেলা অনুষ্ঠিত হয়। আমার কুড়িগ্রাম জেলা তেও এরকম মেলা অনুষ্ঠিত হয়। মেলার উদ্দেশ্য থাকে, জিনিসপত্র যাতে একটু বেশি পরিমাণ বিক্রি হয়। তবে এ বছর বৈশাখ এসেছিল রমজান মাসে। রমজান মাসে মানুষ অন্যান্য সময়ের তুলনায় একটু বেশি পরিমাণ ব্যস্ত থাকে। যার ফলে রমজানের শেষ হওয়ার পর আমাদের এখানে বৈশাখী মেলা টি শুরু হয়।
গ্রামাঞ্চলে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রকমের মেলা হয়ে থাকে। যেমন ইজতেমার সময় মেলা হয়, আর কোন ওয়াজ মাহফিলের সময় মেলা হয়, বাণিজ্য মেলা হয়, ঈদের সময় বিভিন্ন জায়গায় মেলা হয়, হিন্দুদের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মেলা হয় প্রভৃতি মেলা। কারণ মেলার মধ্যেই একসাথে সকল জিনিস পাওয়া যায়। মেলাগুলো সময় দেখে করা হয়। শহরাঞ্চলে মেলা অতটা প্রসিদ্ধ না। কারণ মেলার জিনিসপত্র তারা বিভিন্ন দোকানেই পেয়ে থাকে, এমনকি বিভিন্ন পার্কের ব্যবস্থাও রয়েছে। গ্রামাঞ্চলে এসব না থাকায় মেলার মধ্যে সব রকমের মিশ্রণ ঘটে। তারা কৃষকের ধানের অবস্থা,উপার্জনের অবস্থা দেখে মেলা বসে থাকে। যেমন এখন আমাদের কুড়িগ্রামে মারাকাটি চলছে। অর্থাৎ ধান থেকে চাল বানানোর প্রক্রিয়া চলমান। এজন্য এই সঠিক সময়ে আমাদের কুড়িগ্রামে মেলাটি বসানো হয়েছে। তবে যদিও এবারের মেলায় সব রকমের জিনিসপত্র পাওয়া যায় না। এখানে বিভিন্ন ক্ষুদ্র কুটির শিল্প,গাছগাছালি
এবং বাচ্চাদের জন্য ছোটোখাটো দোকান বসেছে । বিশেষ করে আমাদের অঞ্চলে প্রতিটা মেলায় জিলাপি এবং আচারের দোকান লক্ষ্য করা যায়। তবে প্রধান আকর্ষণ ছিল শিশুদের জন্য পার্কের ব্যবস্থা। এর আগে আমাদের কুড়িগ্রামে এরকম পার্কের ব্যবস্থা কখনো করা হয়নি। কুড়িগ্রামের শিশুরাও এরকম পার্কে কখনো ওঠে নি বা দেখেনি।
কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের মাঠে এবছর বৈশাখী মেলা আয়োজন করা হয়েছে। এটি হলো তার প্রধান ফটক। অন্যান্য জায়গার মতো আমাদের কুড়িগ্রামে কিন্তু মেলায় ঢুকতে টাকা দিতে হয় না।
মেলায় গাছের দোকান, আচারের দোকান, বিভিন্ন খাবারের দোকান, বাচ্চাদের খেলনার দোকান, মধুর দোকান,জিলাপির দোকান,ক্ষুদ্র কুটির শিল্পের দোকান প্রভৃতি দোকান বসে ছিল। তবে প্রধান আকর্ষণ ছিল শিশুদের জন্য তৈরি করা পার্ক।
সবচেয়ে পছন্দ হয়েছিল এই রাইডটি। এগুলো আমার জন্য নয় ,৩ বছর বয়স থেকে ৯ বছর বয়সী বাচ্চাদের জন্য রাইডগুলো করা। আফসোস হয় কারণ আমার ছোটবেলায় আমি এসব রাইডে উঠতে পারিনি। প্রথমত, এগুলো সহজলভ্য ছিল না। দ্বিতীয়ত, আর্থিক সমস্যা ছিল।
যার ফলে এগুলো দেখে অনেকটা ভালো লাগছিল তবে আমাকে উঠতে দেয়া হয়নি এগুলোতে।
বড়দের জন্য নাগরদোলা এবং বোর্ট দোলনার ব্যবস্থা ছিল। আমি ইতোমধ্যে এই দুইটা রাইডে উঠেছিলাম, তাই আমি আর এইগুলো এ উঠিনি। তবে অন্যান্য জায়গা তুলনায় এগুলোর মূল্য একটু বেশি ছিল ,কারণ এগুলো কুড়িগ্রামের মানুষ আগে কখনো দেখেনি। প্রতিটা রাইডের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছিল প্রায় 100 টাকা করে। সবগুলো সাতটি রাইডে উঠতে একজন শিশুর 700 টাকা দরকার।
এখানে একটি কৃত্রিম বোর্ট রাইডের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এটা দেখে আমার সবচেয়ে আশ্চর্যজনক মনে হয়েছিল। কারণ এটা এই পানিটা পুরোটাই বানানো হয়েছিল একটি সমতল জায়গায়। প্রতিটা রাইট তিন থেকে পাঁচ মিনিট ব্যবহার করতে সময় দেয়া হচ্ছিল। যদিও অন্যান্য জায়গায় দুই মিনিটের বেশি কোথাও আমরা এটা চলতে পারি না। এটি একটি ইতিবাচক দিক ছিলো।
বৈশাখী মেলা সাধারণত 30 দিন ব্যাপী হয়ে থাকে।এর মাধ্যমে একটি অঞ্চলের সংস্কৃতি সম্বন্ধে জানা যায়। পাশাপাশি সেই জেলার বিভিন্ন খাদ্যসমূহ এই মেলায় উঠানো হয়। নারী-পুরুষ,বৃদ্ধ ,শিশু সকলেই বৈশাখী মেলার অপেক্ষায় থাকে। এ মেলা বাঙালি জীবনের এক অনন্য লোকায়ত সংস্কৃতির ধারক।
Hi @minhaz007, your post has been upvoted by @bdcommunity courtesy of @rehan12!
Support us by voting as a Hive Witness and/or by delegating HIVE POWER.
JOIN US ON
Congratulations @minhaz007! You have completed the following achievement on the Hive blockchain and have been rewarded with new badge(s):
Your next target is to reach 43000 upvotes.
You can view your badges on your board and compare yourself to others in the Ranking
If you no longer want to receive notifications, reply to this comment with the word
STOP
Check out the last post from @hivebuzz:
Support the HiveBuzz project. Vote for our proposal!