Source
স্যরোগেছি গর্ভধারণের একটি জনপ্রিয় পদ্ধতি হয়ে গেছে।শোবিজের নায়িকাদের মধ্যে এর প্রবণতা বেশ লক্ষ্যণীয় হারে বেড়েছে।এটা নিয়ে কম নিউজও হয়নি।আগে নিঃসন্তান দম্পতিরা এই পদ্ধতিতে বাব-মা হতে পারতেন।তবে শখ করে,বিয়ে না করে কেউ বাবা-মা হতে চায় সেটা হয়তো হাতে গোনা কয়েকজন। করন জোহর এভাবে বাবা হয়েছেন।এরকম একটা ব্যতিক্রম কনসেপ্ট মুভি দেখলাম।বেশ ভালোই ছিলো।এখানে গুরুত্বপূর্ণ কিছুর বার্তা দেয়,যা খুব ভালো লেগেছে আমার।
মুভির নাম: 'বাবা বেবি ও '
দেশ : কলকাতা
অভিনয় :যীশু সেনগুপ্ত,শোলাঙ্কি রায়,রজত গঙ্গোপাধ্যায়,রেশমি সেন,মৈনাক বন্দ্যোপাধ্যায়,গৌরব।
ভাষাঃ বাংলা
ধরনঃ কমেডি,প্রেম,বন্ধুত্ব।
পার্সোনাল রেটিং :৭/১০*
'বাবা বেবি ও' কিছুটা নাটকধর্মী মুভি।হঠাৎ এই কথা কেন বললাম? কারণ কলকাতায় নাটকগুলোর জনপ্রিয় অভিনেতা -অভিনেত্রীরা এখানে অভিনয় করেছে।তাই সবার মধ্যে একটা সরলতা বা সিন্ধতা ছিলো।কমার্শিয়াল মুভিগুলোর মতো কোন ঝকঝকে তকতকে ভাব ছিলো না।পরিচালক অরিত্র মুখোপাধ্যায় এখানে চমৎকার পরিচালনা করেছেন।প্রধান ভূমিকায় অভিনয় করেছে মেঘ (যীশু সেনগুপ্ত) এবং বৃষ্টি (শোলাঙ্কি রায়)।এখন আসি মুল কাহিনীতে।আমার কাছে মুভির নামের থেকে এর ভিতরে গল্পটা বেশী ভালো লেগেছে।কাউকে এমন উদ্ভট ধরনের মুভির নাম বললে হয়তো দেখতেও চাবে না।কিন্তু সত্যি বলতে সমাজে অনেক কিছু এখানে অনেক স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে।আমরা হয়তো স্বাভাবিকভাবেই মেনে নেই একটা ছেলের শুধুমাত্র একটা মেয়েকেই ভালো লাগতে পারে।সমকামীতা এখন পর্যন্ত পাশ্চাত্য দেশের কালচার হিসেবে দেখি! কিন্তু এটা একটা হরমোনাল সমস্যা,যেটা যেকোন দেশের মানুষেরই হতে পারে।এই ট্যাবুগুলো বুঝানো চেষ্টাও করেছে এই মুভিতে।শুরুতে দেখা মেঘ বাবা হতে চায় কিন্তু বাবা হওয়া যে এতো সোজা নয় তাই মেঘ বাধ্য হয়েই স্যারোগেছির মাধ্যমে দুই সন্তানের পিতা হয়।আসলে প্রেমের ব্যর্থতা, ক্যারিয়ার নিয়ে ভাবনা সবকিছু মিলিয়ে বেশ বয়স হয়ে যায় মেঘের। এর মধ্যে বাবা হবার একটা তীব্র ইচ্ছের কারণে এটা করা।মেঘের বাবা-মাও তাদের ছেলের ইচ্ছের গুরুত্ব দিয়ে সানন্দেই দাদু ঠাম্মি হয়ে যায়।মা ছাড়া বাবা হয়ে তার দুই সন্তানকে সে আগলে রাখে।এই যুগের বাবা-মা কিন্তু এত কেয়ারিং হয় না!মেয়েরাও তাদের ক্যারিয়ারের কারনে বেবি নিতে হয়তো সেভাবে চায় না।এই সমগ্র ব্যাপারটা খুব সুন্দর পরিপাটিভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
এভাবে হঠাৎ মেঘ-বৃষ্টির দেখা হয়।বৃষ্টি কমবয়েসী অবিবাহিত। মায়ের টয় শপ পরিচালনা করে সে।বৃষ্টি মা দ্বিতীয় বিয়ের জন্য বৃষ্টি তার মাকে সবসময় অপছন্দ করতো।ভাবে তার বাবা বুঝি এই কারণেই তার কাছ থেকে দূরে চলে গেছে।কিভাবে যেন চল্লিশ বছরের মেঘের সাথে বৃষ্টি খুব ভালো বন্ধুত্ব হয়ে যায়।বন্ধুত্বের ছেদ পরে যখন বৃষ্টির বাগদত্তা শৌভিক (গৌরব) আসে তাদের জীবনে।হঠাৎ ছন্দপতনে গল্পের গতিটা কিছুটা ধীর হয়ে যায়।শৌভিকের অনেকটা পরিবর্তন, তার অবহেলা বেশ ভাবিয়ে তুলে বৃষ্টিকে।এইদিকে আস্তে আস্তে অনুভব করা শুরু করে মেঘকে।কীভাবে যেন এক সুতোয় বৃষ্টি আর মেঘ জড়িয়ে যাচ্ছে তা তারা নিজেরাও বুঝতে পারেনি।এখানে মেঘের বন্ধু রাজা তাকে সবসময় সাপোর্ট করে যায়।এমনি রাজা সমকামী জেনে অনেকে নাকছিটকাতো বা বন্ধুত্ব করতে চাইতো না,সেক্ষেত্রে মেঘ ছিলো ব্যতিক্রম!বাচ্ছা অপছন্দ করা বৃষ্টি কীভাবে যেন সব পিছুটান উপেক্ষা করে মেঘকেই তার জীবন সাথী হিসেবে বেছে নেয়।টানাপোড়েনের গল্পে শেষ পরিনতি অদ্ভুত সুন্দর।