ভাঙা স্বপ্ন

in BDCommunity3 years ago

স্বপ্ন মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে কিংবা স্বপ্নের মাঝে মানুষ বাঁচে,যায় বলি না কেনো এই কথাটা সূর্যের আলোর মতো সত্য।ছোট্ট এ জীবনে কতো চড়াই উৎড়াই দেখেছি তার হিসাব নেই। তবে প্রতিবারই এই স্বপ্নই হাত ধরে তুলেছে।চোখের সামনে কতো ডুবে যাওয়া মানুষ কে স্বপ্নের হাত ধরে উঠে আসতে দেখেছি। আমাদের পাশের বাড়ির আমার এক চাচাতো বোন। বয়সে আমাদের থেকে সিনিয়র। আমার ছোট আপার বান্ধবী। স্বপ্নবাজ ছিলেন তিনি ছোট থেকে। পড়া শুনায় বেশ ভালো মেধাবী একজন ছাত্রী ছিলেন। ঐ আপু যখন দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়তেন তখন তার বাবা ঠিক করেন হজ্ব করতে যাবেন।ফরজ কাজ রেখে নাকি হজ্ব করা যায়না। তাই ঐ আপুটাকে বিয়ে দিয়ে হজ্বে যাবেন।কিন্তু তিনি বিয়ে করবেন না। পড়াশোনা শেষ করে চাকরি করবেন।শেষ পর্যন্ত তিনি বাবার সাথে পারেন নি।বিয়ে করতে বাধ্য হন।

ওনার বাবা এক প্রবাসীর সাথে বিয়ে ঠিক করে।শত চেষ্টা করেও সে বন্ধ করতে পারেনি।বিয়ের পঁচিশ দিন পর ওনার স্বামী প্রবাসে ফিরে যান।এই পঁচিশ দিনের মধ্যে দশ দিন তিনি বাবার বাড়িতে ছিলেন।স্বামীর সাথে সংসার করেছেন পনের দিন। স্বামী বিদেশে যাওয়ার তিন মাস পর তিনি জানতে পারেন তিনি গর্ভ ধারণ করেছেন।এরি মধ্যে একদিন খবর আসে ওনার স্বামী অসুস্থ। বিদেশে একটানা পাঁচমাস হাসপাতালের থাকার পর এক রকম মুমূর্ষু অবস্থায় দেশে আসেন।ওনি তখন হাসপাতালে সিজারের মাধ্যমে মেয়ে জন্ম দিলেন। দেশে আসার দুয়েক দিন পর ওনার স্বামী না ফেরার দেশে পারি জমান।তখন ওনার মেয়ের বয়স তিন থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে।

মেয়ের এ করুণ পরিনতি সহ্য করতে না পেরে ঐ আপুর বাবা হার্ট অ্যাটাক করে মারা যান ওনার স্বামীর মৃত্যুর সাত দিনের দিন।দুমড়ে মুছড়ে যাওয়া মানুষটা তিন মাস পর আবার কলেজে ভর্তি হন। এইচএসসি পাশ করে অনার্স শেষ করেন। সাথে মেয়েকে লালন পালন করেন।এখন মেয়ের বয়স বারো বছর। তিনি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক। মেয়ে এখন মাকে আর একবার বিয়ে করে সুখী হতে পরামর্শ দেয়।ছোট থেকে তার শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন ছিলো। তাই এতো খারাপ কিছু মোকাবিলা করে ও সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন।

দুঃখ,কষ্ট,বিপদ জীবনে আসেই,কিন্তু এগুলোর সাথে যুদ্ধ করে যে টিকে থাকতে পারে সেই সফল হয়।আর যে এগুলোর কাছে হেরে যায় সে হারিয়ে যায় বিফলতার চরম গহ্বরে।

Dream20190528120522.jpg

Sort:  

সন্তানদেরকে অভিভাবকদের বুঝতে পাড়া ও অভিভাবকদের চিন্তাভাবনাকে সন্তানদের বুঝতে পাড়া, এই দুটো বিষয়ের সামাঞ্জস্যতা করা যাচ্ছে না। তাই বেশিরভাগ সময় সন্তানদের কষ্টকর মানসিকতার মধ্য দিয়ে বেড়ে উঠতে হয়। অভিভাবকের প্রয়োজন ও অভিজ্ঞতার উপর নির্ভর করে ন্তানদের উপর যেকোনো সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়ার ফলাফল বেশিরভাগ সময় দুঃখজনক হয়। যার ফলে সন্তানরা না পাড়ে জীবনের সঠিক লক্ষ্য স্থির করতে এবং না পাড়ে জীবনে স্বপ্ন বাঁধতে শিখতে। কারণৈএকজন মানুষের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য যদি অভিভাবকরাই ঠিক করে দেয়, তাহলে সেই মানুষরা কার জীবনের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য ঠিক করবে তা কি কেউ বলতে পাড়ে!

বর্তমান অভিভাবকদের সঠিক শিক্ষাগ্রহণের মাধ্যমে সন্তানদের পাশে থাকা এবং সন্তানের স্বপ্ন পূরনের সাহায্য করার ভুমিকা সম্পর্কে জানা উচিত। তা না হলে নিজেদের হাতেই নিজেদের ভবিষ্যত প্রজন্মকে কষ্ঠকর জীবনে দিকে ঠিলে দিতে হবে। যা কোনো সন্তানের জন্য কাম্য নয়।

ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস। মানুষের জীবনে দুঃখ কষ্ট যখন আসে চারদিক থেকে আসে।
আমরা অনেক সময় একটুতেই হতাশ হয়ে যাই। কিন্তু এই বিপদের সময় ধৈর্য ধরে কিছু করার চেষ্টা করলে আল্লাহ্ তাআলা আমাদের অবশ্যই অনেক ভালো কিছু দিবেন।

ধৈর্য ধৈর্য ধৈর্য,,,সবচেয়ে উত্তম পন্থা...বিপদ থেকে উত্তরণের...

Hi @shaonashraf, your post has been upvoted by @bdcommunity courtesy of @rem-steem!


Support us by voting as a Hive Witness and/or by delegating HIVE POWER.

JOIN US ON